আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | সকাল ৭:২৭

নির্বাচনকে কেন্দ্র উজ্জীবীত নেতারা

ডান্ডিবার্তা | ০২ এপ্রিল, ২০২৩ | ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ১০ মাস সময় আছে। কেননা নির্বাচন কমিশনের সূত্রমতে এই বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে কিংবা আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হতে পারে। তাই আগামী জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে বিএনপির ভিতরে-বাইরে চলছে আলোচনা। সেই সাথে চলছে চুলচেরা হিসাব-নিকাশ। যদিও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিভিন্ন সভা সমাবেশে বলে আসছে এই সরকারের অধীনে তারা কোন নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবেন না। অপর দিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছেন তারা নির্বাচনে আসবে। কিন্তু দুই দলের পাল্টা পাল্টি বক্তব্যের মাঝে ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ইদানিং একাধিক সভায় তার বক্তব্যে বলেন, বিএনপির এখন আম্মা গ্রুপ এবং ভাইয়া গ্রুপে বিভক্ত। তাদের মাঝে আম্মা গ্রুপের নেতারা চান নির্বাচনে আসতে, আর ভাইয়া গ্রুপের সদস্যরা চান নির্বাচন বন্ধ রাখতে। তবে নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সময় বলে দিবে তারা কোন পথে যাবে। এদিকে বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে কি না- এ নিয়ে কোনো ঘোষণা না দিলেও ভিতরে ভিতরে চলছে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ। দলীয় হাই কমান্ডের নেতাদের মাঝে এমন আলোচনার গুঞ্জন উঠেছে বলে দলীয় সুত্র জানান। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, দলের হাইকমান্ড তারেক রহমানের নির্দেশনায় রাজপথে আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছে বিএনপি। তারই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মাঝে প্রতিটি আসনে একাধিক নেতা এবার আগে থেকে মাঠে কাজ করছেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপির পার্লামেন্টারি বোর্ড। এ নিয়ে কারও মাঝে কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব বা ওজর-আপত্তি চলবে না। বিগত নির্বাচনের মতো তাড়াহুড়ো করে প্রার্থী বাছাই করতে গিয়ে যাতে এলোমেলো পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সেজন্য এবার আগে থেকেই আন্দোলনের পাশাপাশি পরিকল্পিতভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। তবে দলের শীর্ষ নেতাদের কেউ স্বনামে নির্বাচনী প্রস্তুতির ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি। দলীয় সূত্রমতে জানাযায়, জেলার ৫টি আসনের মাঝে রূপগঞ্জ আসনে জোরালো ভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে মাঠ কাপাচ্ছে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূইয়া। একই সাথে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরও নেতা কর্মীদের নিয়ে মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া ২০১৮ সনের একাদশ নির্বাচনে এই আসন থেকে তিনি বিএনপি থেকে মনোনীত হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন। তবে এবার আগে থেকে বিএনপির সহযোগি সংগঠনের কমিটিতে দিপু ভূইয়ার অনুসারীদের স্থান করে মাঠে গুছিয়ে নিচ্ছেন। সেই সাথে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যপক ভুমিকা রেখে যাচ্ছেন। আড়াইহাজার আসনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান আঙ্গুর এবারও মাঠে নেমে মাঠ গুছিয়ে নিচ্ছেন। তার বিপরীতে কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদও কোন অংশে পিছিয়ে নেই। তিনি গত নির্বাচনেও বিএনপি থেকে মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুর সাথে পরাজীত হন। আড়াইহাজার আসনে তারা ভিতরে ভিতরে নির্বাচনের প্রস্তৃুতি নিচ্ছে বলে জানান দলীয় একাধিক ব্যক্তি। তবে সাবেক সাংসদ আতাউর রহমান আঙ্গুর এবং বিএনপি নেতা মাহমুদুর রহমান সুমন নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তাদের সাথে তাল মিলিয়ে পিছিয়ে নেই সোনারগাঁ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। এখানে বিএনপির দুই নেতা এবার আগে থেকে মাঠে নেমে কাজ করে যাচ্ছেন। তার মাঝে সোনারগাঁ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রেজাউল করিম দলীয় কর্মসূচিতে তার লোকজন নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামে অবদান রাখছেন। কিন্তু গত নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনীত হয়ে আজহারুল ইসলাম মান্নান ক্ষমতাসীন দলের জোটগত জাতীয় পার্টির প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকার সাথে পরাজিত হয়েও এবার কোন অংশে পিছিয়ে নেই। এই আসনে তারা দুজনেই সমান তালে দলীয় কর্মসূচিতে ভুমিকা পালন করে যাচ্ছেন। তাই দলে মাঝে গুঞ্জন উঠেছে বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহন করলে তারা এবারও মনোনয়ন চাইবেন। সেই অনুযায়ী আন্দোলনের পাশা পাশি ভিতরে ভিতরে প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন। এদিকে ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন পুরোদমে দলীয় কর্মসূচিতে অবদান রেখে যাচ্ছেন। সেই সাথে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে সবচেয়ে বেশি ভুমিকা রাখায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে প্রশংসিত হন। এছাড়া এই আসন থেকে ২০০১ সনের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী শামীম ওসমানকে পরাজীত করে এমপি নির্বাচিত হন। তাকে নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান অনেকটা চাপে থাকেন বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবে গত নির্বাচনের তুলনায় এবারও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নেতা মনির হোসেন কাসেমী এবারও বিএনপি থেকে মনোনয়ন নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে অনেকে মনে করছেন। তবে তারা এবার বিএনপির সাথে শরীকে না থাকায় না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম ওসমানের সাথে লড়াইয়ের জন্য শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে গিয়াস উদ্দিনকে মনে করেন স্থানীয় বিএনপির নেতা কর্মীরা। তাই তিনি এবার আগে থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ ফতুল্লা থানায় বিএনপির নতুন কমিটির মাধ্যমে দলকে সাজিয়ে নিচ্ছেন। যা নির্বাচনের জন্য তার প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বোদ্ধমহল। সদর-বন্দর আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও তারা কেউ দলীয় কর্মসূচিতে সক্রিয় নেই। কিন্তু নির্বাচন আসলে দল থেকে মনোনয়ন চেয়ে পিছিয়ে থাকেন না। ২০১৮ সনের একাদশ নির্বাচনে বিএনপির জোটগত ঐক্য ফ্রন্টের উপদেষ্টা এস এম আকরাম আওয়ামী লীগের শরীক দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম ওসমানের সাথে পরাজিত হন। এবারও তিনি নির্বাচন করবেন বলে জানান। তবে কোন দল থেকে প্রার্থী হবেন তা পরিস্কার নয়। এছাড়া সদর-বন্দর আসনে সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা আবুল কালাম বরাবরের ন্যায় এবারও মনোনয়ন চাইতে পারেন। তাছাড়া এখানে দুই একজন শিল্পপতির নামও শুনা যাচ্ছে। তারাও বিএনপি থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করতে পারেন আলোচনা হচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির একাধিক নেতৃবৃন্দ জানান, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার পর বিএনপি যে কোনো মুহূর্তে নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত। দশ দফা দাবিতে আন্দোলন চলছে। এই দাবি পূরণ হওয়ার পর বিএনপি অবশ্যই নির্বাচনে যাবে। তবে এ বিষয়টা অত্যন্ত পরিষ্কার যে, বর্তমান সরকারের অধীনে যেমন বিএনপি নির্বাচনে যাবে না, তেমনি এ সরকারের অধীনে এদেশের জনগণও আর কোনো নির্বাচন হতে দেবে না। কিন্তু রাজনৈতিক মহল মনে করেন কর্মসূচির মাধ্যমে যে ভাবে বিএনপি জেগে উঠেছে এই ভাবে আন্দোলন অব্যাহত থাকলে তারা সফল হবে। এছাড়া আন্দোলনের পাশা পাশি নির্বাচনের জন্য ভিতরে ভিতরে বিএনপির প্রস্তুতি রয়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বোদ্ধমহল।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা