আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | সকাল ৭:১৩

আজ বিএনপির শক্তি প্রদর্শন

ডান্ডিবার্তা | ০৮ এপ্রিল, ২০২৩ | ১২:০০ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট বিদ্যুৎ, গ্যাস দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি ও ১০ দফা দাবীতে শনিবার নারায়ণগঞ্জ জেলার দুই থানা ও তিন উপজেলায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি। এর মধ্যে নিজ থানা ও নির্বাচনী এলাকা সিদ্ধিরগঞ্জে কর্মসূচী পালন করাকে কেন্দ্র করে চ্যালেঞ্জ রয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির আহবায়ক মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের। জানা যায়, জেলা বিএনপির আহবায়ক পদে দায়িত্ব পাবার পর এটি তার নির্বাচনী আসনভিত্তিক একক কর্মসূচী। যদিও কর্মসূচীতে জেলা বিএনপির আরেক কর্মীবান্ধব নেতা ও রাজপথের নেতা হিসেবে পরিচিত যুগ্ম আহবায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীবও দায়িত্ব পেয়েছেন। তবে সকলের ধারণা গিয়াসউদ্দিন তো শুধু এসে বক্তব্য দিয়েই চলে যান মূল কাজটি করবেন মাসুকুল ইসলাম রাজীব। কারণ তিনি হ্যামিলিনের বাঁশীওয়ালার মত যেখানে যান আস্থার ভরসা নিয়ে নেতাকর্মীরা সেখানে যাবেন। আর তাই কৌশল করে নিজের কর্মসূচীর স্থানে রাজীবকে দায়িত্ব পাইয়ে এনেছেন গিয়াস। দলীয় সুত্র জানায়, সম্প্রতি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির ১০টি ওয়ার্ডেই ৭১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করেছেন গিয়াসউদ্দিন। এর মধ্যে সাবেক নেতা, ১৫ বছরের নিষ্ক্রিয় নেতা ও তৃণমূল পর্যায়ের ছাত্রদল কর্মীকেও বিএনপিতে পদায়ন করা হয়েছে। এসব নেতাদের সামনের দিনের আন্দোলন সংগ্রামকে কেন্দ্র করে রাজপথে নামানো ও দলীয় কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করতেও এখন চ্যালেঞ্জ গিয়াসউদ্দিনের। এর মধ্যে গিয়াসউদ্দিনের অনুগত কাউন্সিলর তার ছেলে গোলাম মোহাম্মদ সাদরিল ও কাউন্সিলর ইকবাল এবং তার আরেক ছেলে কৃষক দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিফাতও কর্মসূচীতে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে। তবে তারা যদি অংশ না নেন তাহলে যেন বিতর্ক সৃষ্টি নাহয় সেজন্য তাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট) জারি হয়েছে বলে গুজব ছড়াচ্ছেন তাদের নেতাকর্মীরা। সব মিলিয়ে কর্মসূচীতে নিজ আসনের থানাধীন এলাকায় নিজের অবস্থান জানান দেয়া ও নতুন এসব কমিটির নেতাদের আজ শনিবার মাঠে নামানোই গিয়াসউদ্দিনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। এছাড়াও আজ শনিবার নারায়ণগঞ্জ জেলার দুই থানা ও তিন উপজেলায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি। এর মধ্যে আড়াইহাজার উপজেলা ও সোনারগাঁ থানায় বড় ধরনের কর্মসূচী পালনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের পক্ষ থেকে। সুত্রমতে, সোনারগাঁ থানায় থানা বিএনপির বিএনপির সভাপতি দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান ও আড়াহাজারে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ কর্মসূচী পালনের দায়িত্ব পেয়েছেন। দুজনেই মাঠে নেমে কর্মসূচী পালনে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে সোনারগাঁয়ের কর্মসূচী পালিত হবে মেঘনা এলাকায় ও আড়াইহাজারের কর্মসূচী পালিত হবে পাঁচরুখী এলাকায়। দুটি স্পটে উপজেলা ও থানা এলাকার নেতাকর্মী ও দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে এ কর্মসূচীর সমন্বয় করবেন নেতারা। কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে শুধু আন্দোলন নয় আসন ভিত্তিক আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিজেদের শক্তির জাহির করতে চান দুজন। এদের দুজনই গত নির্বাচন দুটি আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী ছিলেন। কর্মসূচীকে ঘিরে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করতে ও নিজ নিজ এলাকায় জোরালো অবস্থান নিতে কেন্দ্রের নির্দেশ রয়েছে। সরাসরি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মনিটরিং টিম নেতাদের কর্মসূচী পালনের বিষয়টি মনিটরিং করবে এবং সে অনুযায়ী তথ্য দেবে। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির অধীনস্থ সবচেয়ে বড় ও ব্যবসায়ীক অঞ্চলের ইউনিট ফতুল্লা থানা বিএনপির নেতা হিসেবে শহিদুল ইসলাম টিটু ছাড়া আর কাউকে খুঁজে পায়না কেন্দ্র। নেতাকর্মীদের মতে, যাদের কথা কেন্দ্র শোনে তারা টিটু ছাড়া আর কারো নাম বলেনা আর তাই কেন্দ্রও টিটুকে ছাড়া আর কাউকে ফতুল্লা বিএনপির নেতা হিসেবে চেনেন না। জানা যায়,বিদ্যুৎ, গ্যাস দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি ও ১০ দফা দাবীতে শনিবার নারায়ণগঞ্জ জেলার দুই থানা ও তিন উপজেলায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি। এ কর্মসূচীকে ঘিরে প্রতিটি উপজেলা ও থানা পর্যায়ে দলের নেতাদের কর্মসূচী পালনের জন্য দায়িত্ব বন্টন করে দেয়া হয়েছে। সেই দায়িত্বের মধ্যে ফতুল্লায় একমাত্র টিটুকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যেখানে টিটুর চেয়ে বেশী নেতাকর্মী সমাগম করে কর্মসূচী পালনের সক্ষমতা রয়েছে আরো অনেক নেতার। নেতাকর্মীরা জানান, দলের একটি সিন্ডিকেট টিটুকে নেতা বানাতে চাইছে আর তাই তাকে সবখানে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। এর আগেও ফতুল্লা থানা বিএনপির সদস্য সচিব ছিলেন টিটু। একই কমিটির আহবায়ক ছিলেন জাহিদ হাসান রোজেল। সেই কমিটি ব্যর্থতার অজুহাতে গিয়াসউদ্দিনের নেতৃত্বে থাকা জেলা কমিটি বাতিল ঘোষণা করে টিটুকে আহবায়ক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করে। নেতাকর্মীরা এসময় প্রতিবাদ করলেও তা শোনা হয়নি। নেতাকর্মীদের মতে, যদি সদস্য সচিব সফল হয় তাহলে আহবায়ক ব্যর্থ হয় কিভাবে আর আহবায়ক ব্যর্থ হলে সদস্য সচিব সফল হয় কিভাবে যেখানে দুজন একই সাথে কর্মসূচী পালন করেছেন। যেহেতু দায়িত্বে দুজন ছিলেন তাই ব্যর্থতা ও সফলতার দায়ভার একসাথে দুজনের উপর বর্তাবে। নেতাকর্মীরা জানান, দলের একটা অংশ কেন্দ্রে ভুল বোঝাচ্ছে। তারা ফতুল্লায় হেভওয়েট নেতাদের বাদ দিয়ে টিটুকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। অথচ এই টিটু আওয়ামীলীগ ও সরকারদলীয় সংসদ সদস্যের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি তাদের। নেতাকর্মীদের দাবি, গত নির্বাচনে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু নৌকা প্রতীক হাতে নিয়ে নৌকায় যোগ দিয়ে চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের কথা ছাড়া সেন্টু কিছু করেন না। এখন দলের নেতাকর্মীদের সেন্টুর আনুগত করতে সরকারি দলের নির্দেশে টিটুকে নেতা বানানোর মিশনে নেমেছেন দলের একটি অংশ। সেই অংশের প্রস্তাবেই একমাত্র টিটুকে ফতুল্লা থানা বিএনপির কর্মসূচী পালনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অথচ এই টিটু সেন্টুর কথার বাইরে এক পা ফেলতেও রাজি নন। দলের এমন সিদ্ধান্তে সিদ্ধান্তদাতাদের উপর ক্ষুব্দ হয়েছেন দলের ফতুল্লার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তারা এহেন সিদ্ধান্তে এ আসনে দল ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বলেই মনে করছেন। এদিকে সামনে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নতুন উদ্যমে সরব হতে শুরু করেছেন বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সোনারগাঁয়ের সাবেক এমপি অধ্যাপক রেজাউল করিম, বিএনপি মনোনয়নে নির্বাচনে অংশ নেয়া কাজী মনিরুজ্জামান ও শাহ আলম। এদের মধ্যে দুজন নির্বাচিত হতে না পারলেও রেজাউল করিম দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছেন বেশ প্রভাবের সঙ্গে। দলীয় একাধিক সুত্র জানায়, সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এতদিন সরব ও নীরব মিলিয়ে থাকলে এবং নেতাকর্মীদের সেভাবে কাছে না টানলেও এখন নতুন করে নেতাকর্মীদের কাছে যাচ্ছেন ও তাদের সাথে যোগাযোগ করছেন বিএনপির এ হেভিওয়েট তিন নেতা। ইতোমধ্যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতির রোডম্যাপ নিয়েও কাজ করছেন তারা। নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এতদিন রাজপথে সেভাবে সক্রিয় না থাকলেও এখন ধীরে ধীরে পুরো সক্রিয় হয়ে উঠবেন তারা। এজন্য অনুগত নেতাকর্মীদের বার্তা দিয়েছেন তিনজন। এ ছাড়া কেউ কেউ এলাকায় সাধারণ মানুষের খোঁজ খবর নিতেও শুরু করেছেন। এর মধ্যে চলছে কেন্দ্রে লবিংও। তবে নেতাকর্মীরা জানান, দলের দুঃসময়ে যারা ঘরে বসে থাকে এবং সুসময়ে নেতাকর্মীদের কাছে ফিরে আসে তাদের নিয়ে নতুন করে ভাববে এবার নেতাকর্মীরা। আগের মত ডাকলেও আর ঝাঁপিয়ে না পড়ে বরং অনেক চিন্তা ভাবনা করেই সামনে এগুলো তারা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা