আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | রাত ২:১০

জজ মিয়া ৪ সহযোগি দিয়ে করাচ্ছে চাঁদাবাজি

ডান্ডিবার্তা | ০৮ এপ্রিল, ২০২৩ | ১২:১৯ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল ট্রাকস্ট্যান্ড চাঁদাবাজির একটি আলোচিত স্থান। এ ট্রাকস্ট্যান্ডকে ঘিরে সাত খুনের দায়ে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত নুর হোসেন গড়ে তুলেছিলেন নানা অপরধারের সা¤্রাজ্য। ট্রাকস্ট্যান্ড থেকেই নানা কৌশলে আদায় হয়ে থাকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা। নুর হোসেন কারাগারে যাওয়ার পর একাধিক গ্রুপ ট্রাকস্ট্যান্ডটি দখলে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে আসছে। সবশেষে নুর হোসেনের ছোট ভাই নূরুজ্জামান জজ “ছোট মিয়া” নিয়ন্ত্রনে নেয় এ ট্রাক স্ট্যান্ডটি। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আন্তঃজিলা ট্রাক চালক ইউনিয়ন শিমরাইল শাখার সভাপতি। তার এই অবৈধ চাঁদাবাজি পরিচালনা করছে চার খলিফা। তারা হলেন লিটন, বিএম ফারুক ও টুটুল ও যাবতীয় লীগের সভাপতি হিসেবে খ্যাত ইলিয়াস মোল্লা। আর এসব চাঁদার টাকার ক্যাশিয়ার হচ্ছেন নুর হোসেনের সেই ক্যাশিয়ার কাশেম। তিনি বর্তমানে চার খলিফার সাথে মিশে আদায়কৃত চাঁদার টাকার হিসেব নিকেশ রাখছেন। নুর হোসেনের সময়েও তিনি একই দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এদিকে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে নূরুজ্জামান জজ “ছোট মিয়া” ও তার বাহিনী। নানা অজুহাতে তারা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক, শ্রমিক ও ট্রান্সপোর্ট মালিকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এ নিয়ে চরম অসন্তোষ চলছে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক, শ্রমিক ও ট্রান্সপোর্ট মালিকদের মধ্যে। এরআগে গত ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকীকে কেন্দ্র করে চাঁদা আদায় করে বেশ বিতর্কিত হন ছোট মিয়া জজ। বর্তমানে আন্তঃজিলা ট্রাক চালক ইউনিয়নের নামে গাড়ি প্রতি ১৫০ টাকা চাঁদা আদায় করছেন। গড়ে প্রতিদিন ৫শ’ থেকে ৬শ’ গাড়ি হতে এ চাঁদা আদায় হয়ে থাকে। এছাড়াও চাঁদা আদায়ের রয়েছে আরো বেশ কয়েকটি খাত। সম্প্রতি ওই চার খলিফার তেলেসমাতিতে চাঁদাবাজির নতুন কৌশলে নামে ছোট মিয়া জজ। বুক স্লিপের নামে ট্রান্সপোর্ট মালিকদের মাধ্যমে দৈনিক গড়ে ৫০০ গাড়ি থেকে ১০০ টাকা করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করছে। যা মাসে গিয়ে দাড়ায় ১৫ লাখ টাকা। অপর একটি সূত্র জানায়, নূরুজ্জামান জজ “ছোট মিয়া” ওই চার খলিফাকে নিয়ে কোটি টাকার মিশনে নেমেছেন। এটি বাস্তবায়ন করতে সব জায়গায় দেন দরবার, তদ্ববির ও চাঁদাবাজির ভাগ ভাটোয়ার হিসেব নিকেশ কষছেন। বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সেক্টর ভাগ করে এ চাঁদা আদায় করা হবে। এর উদাহরণ হলো ‘বাংলাদেশ হকার্স ফেডারশন’ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটি। যদিও গত ২২ মার্চ পুলিশি বাধার মূখে এর কার্যক্রম চালু করতে পারেনি। তবে চাউর রয়েছে সবাইকে ম্যানেজ করা হয়েছে ঈদের পরই এর কার্যক্রম চালু হতে পারে। নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন ট্রান্সপোর্ট মালিক ও ট্রাক চালকরা জানান, জ¦ালানির মৃল্য বৃদ্ধির পর ট্রিপ নিয়ে বেসামালর অবস্থায় রয়েছেন তারা। প্রায় সময় ট্রিপে লোকসান গুনতে হয়। তার উপর ট্রিপ প্রতি বুক স্লিপের নামে ১০০ টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে জজ বাহিনী হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। তাদের দাবি আইনশৃংখলা বাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ দ্রুত জজ মিয়া ও তার খলিফাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে ইতিহাসের পূনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। অন্যদিকে ট্রান্সপোর্ট মালিক ও ট্রাক শ্রমিকরা চাঁদাবাজদের জিম্মিদশায় থেকে নতুন নতুন খাতে চাঁদা দিতে গিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পথে বসে যেতে পারেন। জানা যায়, শিমরাইল ট্রাক স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজীর নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নূরুজ্জামান জজের বিরুদ্ধে চার খলিয়ার একজন নোমান হোসেন টুটুল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন দপ্তর থেকে শুরু করে জেলা পুলিশ সুপার পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে দায়িত্ব দেয়। পরবর্তীতে দৈনিক দুই হাজার পাঁচশত টাকা চাঁদা পাওয়ার আশ্বাসে জজের সাথে তার সমঝোতা হয় টুটুলের। এরপর টুটুল নিজের আখের গোছাতে শুরু করে নতুন পরিকল্পনা। জজের প্রধান দুই খলিফা সফিউজ্জামান লিটন, ফারুক হোসেন ও ইলিয়াস মোল্লাকে সাথে নিয়ে চালু করে বুক ¯িœপ। সফিউজ্জামান লিটন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সারের পিএস পরিচয় দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজীসহ সকল প্রকার অপকর্মের মূলহোতা ছিলেন। সাত খুনের পর তিনি এলাকা ছেড়ে গা-ঢাকা দিলেও পরবর্তীতে তিনি নূরুজ্জামান জজের প্রধান সহযোগী হিসেবে শিমরাইল মোড়ে সকল অপকর্মের নেতৃত্ব হাতে তুলে নেন। অপরদিকে ফারুক হোসেন সোনারগায়ের কাঁচপুর কুতুবপুর এলাকার বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে জুট সন্ত্রাসীসহ এলাকায় সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজির ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। এক সময় তার অপকর্মের কারণে এলাকাবাসী ফুসে উঠে তার বিরুদ্ধে তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে এলাকা থেকে তাকে বিতাড়িত করে। এরপর থেকে তিনি বেশকিছু দিন গা-ঢাকা দিয়ে থাকেন। পরবর্তীতে সিদ্ধিরগঞ্জের হীরাঝিল এলাকায় বসবাস শুরু করেন। সুযোগ বুঝে নূরুজ্জামানা জজের সাথে ধীরে ধীরে সখ্যতা গড়ে তোলে। বর্তমানে ইলিয়া মোল্লা, সফিউজ্জামান লিটন, ফারুক হোসেন, নোমান হোসেন টুটলের পরিকল্পনা ও পরিচালনায় রয়েছে নুর হোসেনের ছোট ভাই নূরুজ্জামান জজ “ছোট মিয়ার” সকল অবৈধ আয়ের উৎস।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা