আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | ভোর ৫:০৪

শপিংমল-ফুটপাতে বাড়ছে ক্রেতাদের ভীর

ডান্ডিবার্তা | ১২ এপ্রিল, ২০২৩ | ১২:২৯ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট এবারের ঈদুল ফিতরের সাথে নতুন মাত্রা হিসেবে যোগ হয়েছে পহেলা বৈশাখ। আর এই দুইটি উৎসবকে ঘিরে জমে উঠেছে নারায়ণগঞ্জের পোশাকের বেচাকেনা। শপিংমলগুলোর পাশাপাশি নগরীর ফুটপাতেও ক্রেতাদের ভীড় বেড়েছে। ক্রেতাদের উপস্থিতিতে জমজমাট হয়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জের ঈদবাজার। ঈদ এবং পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে মাকের্টগুলোতে দেশবিদেশি নানা রঙের, ডিজাইনের বাহারি পোশাক উঠেছে। উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরই যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী নতুন পোশাক কেনে। প্রতিবারের ন্যায় এবারও নারায়ণগঞ্জে উৎসবের অনেকটা আগে থেকেই চলছে কেনাকাটার ধুম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শপিংমল, বিপনি-বিতানে বাড়ছে ভিড়। ক্রেতাদের এমন ভিড়ে খুশি ব্যবসায়ীরাও। তবে এবারের ঈদকে কেন্দ্র করে রোজার শুরু থেকে ক্রেতাদের মার্কেটগুলোতে ভিড় করতে দেখা গিয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, অন্যান্যবারের মতো এবারের ঈদেও তরুণীসহ নারীদের প্রধান আকর্ষণ নতুন কালেকশন। প্রতিদিন সকাল থেকে শহরের চাষাড়া, কালীর বাজার, ডিআইটি এলাকার বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার কারণে গত দুই বছর তাঁদের লোকসান হয়েছে। তবে এবার রোজা শুরুর আগ থেকেই দোকানে ক্রেতার উপস্থিতি ভালো। প্রতিদিন বাড়ছে বেচাকেনা। নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষারা এলাকার সমবায় মার্কেট, মার্ক টাওয়ার, বেইলী টাওয়ায়, শান্তনা, সায়াম প্লাজা, হক প্লাজাসহ আরো কয়েকটি মার্কেটের পোশাকের দোকানগুলোই এতোদিন সকলের পছন্দের পোশাকের সরবরাহ করে থাকতো। তবে সম্প্রতি শহরে বেশ কিছু ব্রান্ডের শোরুম চালু হয়েছে। এই সব ব্রান্ডের দোকানগুলো নারায়ণগঞ্জে হওয়াতে ক্রেতাদের আর এখন নিজেদের পছন্দের পোশাক কিনতে ঢাকায় ছুটতে হয় না। আড়ং, লারিভ, সেইলর, গ্রামিণ ইউনিক্লো, কান্ট্রিবয়, জেন্টেল পার্ক, র-নেশন, ইজি ফ্যাশন, সোলাস্তা, টপ টেন, বেল মন্টসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের শোরুম গুলো এখন নারায়ণগঞ্জে আছে। এছাড়াও জুতার ব্রান্ডের মধ্যে রয়েছে বাটা, এপেক্স, বে-ইম্পোরিয়াম, স্পেনসহ আরো বেশ কয়েকটি ব্রান্ড। নারায়ণগঞ্জের ৫৯ বিবি রোড ২নং রেলগেট সংলগ্ন আলমাস পয়েন্টে আরো বড় পরিসরে গত ১১মার্চ উদ্বোধন করা হয় আড়ংয়ের। একই ভবনে রয়েছে লারিভের ২য় শাখা, সেইলর, এপেক্স এবং বাটার ৪র্থ আউটলেট। এই শোরুম গুলোতেও ক্রেড়াতা প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন। একই ভবনে কয়েকটি আউট লেট হওয়াতে ক্রেতারাও স্বাচ্ছ্যন্দে কেনাকাটা করতে পারছেন বলে কয়েজন ক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়। গৃহীনি এশা আক্তার নিজের এবং নিকট আত্মীয়দের জন্য কেনাকাটা করতে আসেন আড়ংয়ে। তিনি জানান, একই ভবনে কয়েকটি শোরুম হওয়াতে খুব বেশি দৌড়ঝাপ করতে হচ্ছে না। বিশেষ করে আড়ংয়ে সব বয়সিদের জন্যই পোশাক পাওয়া যায়। আর আগের চাইতে এই শোরুমটিও অনেক বড়। তাই এক যায়গা থেকেই কেনাকাটা করা যাচ্ছে। শহরের বিভিন্ন মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা যায় এক ভিন্ন চিত্র। অনেকেই কেনাকাটার কাজটা সেরে ফেলতে চাইছেন। নগরীর দেওভোগের বাসিন্দা আবদুস সালাম তার পরিবার নিয়ে কেনাকাটা করতে বের হয়েছেন। পরিবারের সদস্যদের পছন্দের পোশাক কেনাই তার উদ্দেশ্য। তিনি জানান, আজকে পরিবার নিয়ে কেনাকাটার কাজটা সেরে ফেলছি। সারাদিনই শহরে ঘুরবো। বিভিন্ন দোকানে যাবো পরিবারের জন্য কেনাকাটা করবো। নানারকম ব্রান্ডের শোরুম ছাড়াও নগরীর কালির বাজারে রয়েছে নারীদের রেডিমেট পোশাক ও থান কাপড়ের কয়েকটি বড় মার্কেট। এই মার্কেটগুলোতে একদিকে নারীদের রং বেরংয়ের পোশাক বিক্রি হচ্ছে, অপরদিকে ঘর সাজানোর জন্য বিছানার নানা ডিজাইনের চাদর, জানালার পর্দাও বিক্রি হচ্ছে। গৃহিণী শিল্পী মাহবুবা এসেছেন বিছানার চাদর বানানোর জন্য। তিনি জানান, দিন যতো যাবে ততো ঝামেলা বাড়বে। তখন চাদরের জন্য কাপড় কেনা গেলেও দেখা গেছে এগুলো বানাতে ঝামেলায় পড়তে হয়। তাই আগে কাজ সেরে নিচ্ছি। তিনি জানান, টেইলাররা অনেক জনের কাজ একসাথে করতে গিয়ে কখনো উলোটপালটও করে ফেলে। তাই আগে ভাগেই এই কাজগুলো সেরে নিচ্ছি। এদিকে ক্রেতাদের সামলাতে ব্যাস্ত সময় পাড় করছে দোকান মালিক ও কর্মচারিরা। নগরীর সমবায় মার্কেট, বেইলী টাওয়ার, শান্তনা মার্কেটের বেশ কয়েকজন দোকানদারদের সাথে কথা বলে জানা যায় গত দুই বছরের চেয়ে এবারের বেচাকেনা অনেকটাই ভালো। বেইলী টাওয়ারে নারীদের নানা ধরনের পোশাকের তিনটি দোকানের মালিক গার্নেট শেয়ারবিজকে জানায়, আলহামদুলিল্লাহ গত দুই বছরের চেয়ে এবারের বিক্রি অনেকটাই ভালো। রমজান শুরুর আগে থেকেই এবার ক্রেতারা কেনাকাটা শুরু করেছে। আমরাও ক্রেতাদের চাহিদা মতো পোশাক সরবরাহ করতে চেষ্টা করছি। সমবায় নিউ মার্কেটের বাচ্চাদের পোশাকের দোকানী আলমাছ মিয়া জানান, আমাদের ইদের বিক্রি রোজার কয়েকদিন আগে থেকেই শুরু হয়েছে। গত দুই বছর করোনার কারণে আশানুরুপ বেচা কেনা হয় নাই। আশা করছি এ বছর সেই ক্ষতিগুলো পুষিয়ে উঠতে পারবো। শহরের বড় বড় শপিংমলের সাথে পাল্লা দিয়ে জমে উঠেছে ফুটপাতের বেচা কেনাও। ফুটপাতের ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, ফুটপাতের দোকানগুলোর জন্য হাজার হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয় না। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নেই কোনো আলোর ঝলকানি। ফলে স্বল্প লাভে ফুটপাতের বিক্রেতারা ক্রেতাদের দরদামে পোশাক দিয়ে থাকেন। ক্রেতারাও স্বাচ্ছন্দ্যে নিয়ে থাকেন। ক্রেতা রাজীব হোসেন জানান, বড় দোকানগুলো থেকে আমার পক্ষে প্যান্ট কেনা সম্ভব নয়। এ জন্য ছেলেকে এখানে নিয়ে এসেছি প্যান্ট কিনতে। ছেলের পছন্দমতো ৪৫০ টাকা দিয়ে জিন্স প্যান্ট কিনে দিলাম। ফুটপাতের দোকানদার অহিদুল জানান, নিজেরাই ব্যবসা করি। এতে কর্মচারী বেতন, আলোর ব্যবস্থাসহ নানান ধরনের খরচ হয় না। স্বল্প লাভে বড় দোকানের তুলনায় কম দামে পোশাক বিক্রি করতে পারি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলার সহকারী পরিচালক মোঃ সেলিমুজ্জামান শেয়ারবিজকে জানান, সুযোগ বুঝে অতিরিক্ত দাম নেওয়া যাবে না। যাঁরা এমন করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় নিয়মিত অভিযান চলমান রয়েছে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা