
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট বড় ধরণের কোন ইস্যু না থাকলে এবছরের শেষে কিংবা আগামী বছরের প্রথম মাসেই অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ এর রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থী হতে ইচ্ছুক নেতারা তাদের নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণে সব ধরণের প্রমাণ দেওয়ার চেষ্টায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। এরই মধ্যে সদর-বন্দর আসনের লড়াইয়ের একটি আলাদা মাত্রা বা ধরণ হবে বলে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক বোদ্ধাদের ধারণা। সূত্র মতে নারায়ণগঞ্জের অন্যান্য আসনে দ্বিমূখী ও ত্রিমূখী লড়াইয়ের আভাস থাকলেও একমাত্র এই অসনটিতেই চারমূখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা আছে বলে মনে করা হয়। তাই এই আসনের নির্বাচনে হাইপ্রোফাইল চার নেতার লড়াই হতে পারে বলে বিভিন্ন রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে। তবে দীর্ঘ দিন যাবত বিএনপি ক্ষমতার বাইরে থাকায় এবং এই আসনে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সাথে সমঝোতা করে নির্বাচন করায় আসনটিতে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এবং বিএনপি মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে বলে মনে করেন স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোর তৃণমূলের দাবি। এক দিকে জাতীয় পার্টির জন্ম লগ্ন থেকেই নারায়ণগঞ্জের অন্যান্য আসনের তুলনায় এই আসনে জাতীয় পার্টির রাজনীতি অনেকটাই শক্তিশালী। তার উপর ২০০৮ সাল থেকে এখানে একাধারে তিন মেয়াদে নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী। তাই সব কিছু মিলিয়ে এই আসনে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থান অনেকটাই অনেকটাই শক্তিশালী। তবে নারায়ণগঞ্জের এই আসনটির সিংহভাগ অঞ্চল বা ভোটারের অবস্থানই শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বপাড়ের বন্দর উপজেলায়। তাই আওয়ামী লীগ অনেক প্রবীণ এবং ক্ষমতাসীন দল হওয়ায় তাদের সাথে একদিকে যেমন জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পর্ক আছে। তেমনি বিএনপির নেতৃত্বের বড় একটি অংশই আওয়ামী লীগের সাথে সমঝোতা করে চলে বলে দলটির মধ্য থেকেই একাধিক অভিযোগ আসে। একদিকে বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলেন, মুখে বিএনপি কিন্তু অন্তরে নৌকা লাঙ্গল সেটা হতে দেয়া হবে না। আবার আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন লাঙ্গল মার্কা আওয়ামী লীগের নেতাদের বর্জন করতে হবে। তাই এই আসনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি কিংবা বিএনপি মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক সচেতন মহল। যা বিগত দিনের জাতীয় পার্টির সেলিম ওসমান (এর আগে নাসিম), আওয়ামী লীগের এমএ রশিদ এবং বিএনপির আতাউর রহমান মুকুলের মধুর সম্পর্কের বিষয়ে কারও কোন সন্দেহই নেই। তাই এবার সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা নিয়ে যেমন আলোচনা চলছে তেমনি চলছে এই আসনের হাই প্রোফাইল বা প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ নিজ দলীয় কিংবা কিংবা বিরোধী দলীয় পক্ষ হতে কি ধরণের বাধা আসতে পারে তা নিয়ে আলাপ আলোচনা ও বিশ্লেষণ। এই আসনটি টানা তিনবার জাতীয় পার্টির দখলে থাকায় এবং একাধারে দুইবার এমপি নির্বাচিত হওয়ায় এই আসনে বিশেষ করে বন্দর এলাকায় সাংসদ সেলিম ওসমানের একটি শক্ত ভিত্তি গড়ে ওঠেছে। আর এই ভিত গড়ে উঠার জন্য সহযোগিতা করেছেন বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ রশিদ এবং বিএনপি নেতা ও বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল। তাই বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য মতে এবারের নির্বাচনের আলোচনাতেও এখন পর্যন্ত প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন বর্তমান সাংসদ সেলিম ওমানের নাম। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ হতে এখান থেকে যিনিই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন না কেন আওয়ামী লীগ বর্তমানে ক্ষমতাসীন হওয়ায় এবং এই আসনের তৃণমূল আওয়ামী লীগের সাথে সাথে জেলা ও শহর আওয়ামী লীগের বড় একটি সহযোগিতার কারণে জাতীয় পার্টি থেকে আসনের নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়া আওয়ামী লীগর জন্যও অসম্ভব কিছু নয়। তবে আওয়ামী লীগেরও এখানে প্রার্থী মনোনয়নে দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। অর্থাৎ সার্বজনীন ইলেকশন হলে এই আসনে বন্দর এবং শহরে জনপ্রিয়তা আছে এমন কাউকেই প্রার্থী হিসেবে নির্ধারণ করতে হবে। অন্যদিকে এবারের নির্বাচনেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে নিজেকে যোগ্যতার প্রদানে কাজ করে যাচ্ছেন সাবেক এমপি একেএম নাসিম ওসমানের (প্রয়াত) স্ত্রী পারভীন ওসমান। আওয়ামী লীগের মনোনয়নের দৌঁড়ে যারা আছেন তাদের মধ্যেও শোনা যাচ্ছে একাধিক নাম। এদের মধ্যে আলোচনায় আছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য আনিসুর রহমান দিপু, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জল, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আরজু রহমান ভূইয়াসহ বেশ কয়েকজনের নাম। তবে আওয়ামী লীগ থেকে যিনি-ই মনোনয়ন পাবেন জাতীয় পার্টি ঘেষা আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকদের কাছ থেকে অনেকটা বাধার শিকার হবেন বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের তৃণমূল। যেমনটা গত ইউপি নির্বাচনের সময় বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজিম উদ্দিন প্রধানকে হতে হয়েছিল। বিএনপি বর্তমানে নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে গেলেও একই সাথে তাদের আগামী জাতীয় নির্বাচনেরও প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হচ্ছে। কারন হঠাৎ কোন পরিস্থিতিতে তাদের নির্বাচনে যেতে হলে যেন অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়তে না হয়। বিএনপির বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী এই আসন থেকে এবার মনোনয়নের দৌঁড়ে এগিয়ে আছেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। এর কারণ হিসেবে ২০১৬’র নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদের প্রার্থী হিসেবে তিনি বেশ ভালো ভোট পেয়েছেন বলে মনে করা হয়। তবে রাজনৈতিক বোদ্ধাদের মতে সিটি নির্বাচন আর জাতীয় নির্বাচন সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। সিটি নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ সদরের প্রভাব অনেক বেশি কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে এই আসনের জন্য বন্দরের প্রাধান্য অনেক বেশি। তাই বিএনপি থেকেও প্রার্থী নির্বাচনে শহরের চেয়ে বন্দরের দিকে নজর রাখতে হবে বেশি। আর তাই বিএনপির শেষ ভরসা হিসেবে অনেকেই আবার বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট আবুল কালামকেই বেছে নেওয়া হবে বলে মনে করেন। তাই বিএনপি থেকেও প্রার্থীর তালিকায় কেউ নিশ্চিত হতে পারছেন না বলে মনে করেন স্থানীয় বিএনপি একাধিক সূত্র। তবে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এবং বিএনপি ছাড়াও এবারের নির্বাচনে আরেকজনকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হয়। তিনি আর কেউ নন, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত হওয়া সাবেক সাংসদ এসএম আকরাম। যিনি একসময় আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করে এবং ক্লীন ইমেজের বিশেষণ নিয়ে বন্দর এবং শহরের রাজনীতিতে একটি শক্ত অবস্থান করে নিয়েছিলেন। এসএম আকরাম বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে না থাকলেও মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্যের রাজনীতির সাথে জড়িত। গত নির্বাচনে তিনি ঐক্যজোটের হয়ে ধানেরশীষ প্রতীক নিয়ে লড়েছিলেন। এবারও তিনি নাগরিক ঐক্যের ব্যানারে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলে কানাঘুষা চলছে। তাই নির্বাচনে এসএম আকরামও যদি অংশগ্রহণ করেন তাহলে নির্বাচনে চর্তুমূখী যুদ্ধের সম্ভাবনা দেখছেন রাজনৈতিক বোদ্ধারা। নিজ দলীয় ইচ্ছুক প্রার্থীদের ছাড়াও প্রত্যেক প্রার্থীকেই মুখোমুখী হতে হবে শক্ত প্রতিযোগিতার।
হাবিবুর রহমান বাদল ষোল বছরের স্বৈরশাসনে দেশকে পঙ্গু করে শত দমন পীড়ন আর নির্বিচারে গুলি বর্ষন করে দেড় হাজারের বেশী ছাত্র-জনতাকে হত্যার পরও শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা তার গতি রক্ষা করতে পারেনি। গত বছরের ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার রোষানল থেকে বাঁচার জন্য ছোট বোন রেহানাসহ স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আত্মসমর্পণ এতটাই […]
হাবিবুর রহমান বাদল নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে। এনিয়ে সাধারণ নাগরিকরা সরব হয়ে উঠেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিভিন্ন মহল থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯