আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | রাত ৪:১০

কমিটির অভাবে নিষ্ক্রিয় যুবলীগ

ডান্ডিবার্তা | ২০ এপ্রিল, ২০২৩ | ১২:১৭ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট সহসা আলোর মুখ দেখছে না নারায়ণগঞ্জ যুবলীগ। দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না হওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম। দেড় যুগের আগের কমিটি দিয়ে যুবলীগ পরিচালনা হওয়ায় নেতৃত্বে সংকটে পড়েছে দলটি। সর্বশেষ গত ১১ নভেম্বর ঢাকায় যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করার সময় গুঞ্জন উঠেছিল এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পর নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবলীগের সম্মেলন হওয়ার মধ্য দিয়ে নতুন কমিটি হবে। এর ফলে আশা দেখতে শুরু করেন যুবলীগে পদপ্রত্যাশীরা। কিন্তু সেই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো যুবলীগের কমিটি আশার আলো দেখেনি। এর ফলে অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েছেন যুবলীগ পদপ্রত্যাশীরা। এদিকে বর্তমানে নেতৃত্বে যারা রয়েছেন তারাও চান কমিটির মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হোক। এতে করে দল আরো সুসংগঠিত এবং শক্তিশালী হবে। দলীয় তথ্যমতে জানা যায়, ২০০৫ সালে রাজনৈতিকভাবে কোনঠাসা থাকা অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে জেলা যুবলীগের সভাপতি পদে আলহাজ আব্দুল কাদির ও সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত শহীদ মোহাম্মদ বাদল নির্বাচিত হন। কিন্তু দীর্ঘ ১০ বছর জেলা যুবলীগের দুই শীর্ষ নেতার সমন্বয়হীনতায় নারায়ণগঞ্জ যুবলীগের সাংগঠনিক ভীত মজবুত হয়নি। এরই মধ্যে ২০১৬ সালের ৯ই অক্টোবর কেন্দ্র থেকে ঘোষিত জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটিতে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মো. বাদলকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ১৩ মাস পর ২০১৭ সালের ২৫শে নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদিরকে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি করা হয়। আর ২০০৫ সালে শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া সাজনুকে সভাপতি ও আলী রেজা উজ্জ্বলকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয়েছিল শহর যুবলীগের কমিটি। শহর যুবলীগ আগের সেই কমিটি দিয়ে চললেও ২০১৭ সালের নভেম্বর থেকে জেলা যুবলীগের কোনো কার্যক্রম নেই। ২০০৬ সালের সেই কমিটির সভাপতি আবদুল কাদির হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আর ভিপি বাদল হয়েছেন সাধারণ সম্পাদক। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবলীগের কমিটি গঠন নিয়ে একাধিকবার গুঞ্জন ওঠে। তবে শেষ পর্যন্ত আর কমিটি গঠন হয়নি। সংগত কারণে হতাশা ছড়ায় তৃণমূল থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যায়ের অধিকাংশ নেতাকর্মীদের মাঝে। দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে ক্ষোভ। অনেকেই হয়ে পড়েছেন নিষ্ক্রিয়। দলীয় কার্যক্রমে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগ দেখা না গেলে মহানগর যুবলীগের সভাপতি পক্ষে নেতারা সক্রিয় রয়েছে। অপরদিকে মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পক্ষে নেতারাও এখন ঝিমিয়ে পড়েছেন। চলতি বছরে দলের কোন কর্মসূচি তাদের দেখা যায়নি। এমনকি দলীয় কার্যালয়ে তাদের পক্ষে কাউকে আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে ছিল অনুপস্থিত। কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি এবং নাসিক ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি জানান, দীর্ঘদিন ধরে যুবলীগের কমিটি না হওয়ায় যুবলীগে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হচ্ছে না। কেন্দ্রে থেকে এ বিষয়ে আমাদের কয়েকবার ডাকা হয়েছিল। সর্বশেষ ঢাকায় যুবলীগের যে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হয় তখনও শোনা গিয়েছিল নারায়ণগঞ্জে যুবলীগের নতুন কমিটি হবে। কিন্তু এতোদিন পেরিয়ে গেলেও কোনো কমিটি হচ্ছে না তা আমার জানা নেই। তবে আমরা যারা বর্তমানে নেতৃত্বে রয়েছি সবাই চাই নতুন কমিটি হোক। এতে করে দল আরো সুসংগঠিত এবং শক্তিশালী হবে। এইসব কমিটির মাধ্যমে নতুন নতুন আরো যুবলীগ নেতা তৈরি হবে। যেকোনো দলের আন্দোলন সংগ্রামে যুবলীগের ভূমিকা বেশি থাকে। তাই আমিও চাই আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে নতুন কমিটি হোক। তবে আমি দীর্ঘদিন যুবলীগে থাকায় এখন আর যুবলীগে থাকতে আগ্রহী না। আমি চাই আমার স্থলে নতুন কেউ এসে দায়িত্ব গ্রহণ করুক। তবে সিনিয়র নেতাদের প্রতি আমার একটাই অনুরোধ থাকবে যাকেই পদ দেওয়া হবে তার যেনো সিএস, আরএস, এসএ দেখা পদ দেওয়া হয়। কোনো হাইব্রীড যেনো দলে জায়গা না পায়। শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু জানান, আসলে কমিটি কবে দিবে নাকি দিবে না তা আমারো জানা নেই। আগামীতে যে পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে দল সুসংগঠিত করতে নতুন কমিটি গঠন করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। আর নতুন কমিটির মাধ্যমে দল আগের তুলনায় শক্তিশালী হয়। আমরা রাজপথে আরো জোরালো ভূমিকা পালন করতে পারি। সর্বশেষ যে যুবলীগ গঠন করা হয়েছে ওই কমিটির ১৮ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো নতুন কমিটি হয় নি। আমাদের এখন রাজপথে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। আগে ছিল শহর যুবলীগ সিটি করপোরেশন হওয়ার পর এখন মহানগর যুবলীগ হয়েছে। কিন্তু মহানগর যুবলীগ হলেও আমাদের ১৮টি ওয়ার্ডেই নতুন কমিটি নেই। মাত্র ৯ টি ওয়ার্ডের কমিটি নিয়ে আমাদের দল পরিচালনা করতে হচ্ছে। এর ফলে মিটিং মিছিল কিংবা রাজনৈতিক প্রোগ্রামগুলো করাটা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়। কমিটি নিয়ে কেন্দ্রের সাথেও আমাদের যোগাযোগ হয়েছিল। তারা বলেছিল নতুন কমিটি হবে। আশায় ছিলাম, নিজেও যোগাযোগ করেছি। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। অনেক জায়গায় কমিটি হচ্ছে। আশা করছি জাতীয় নির্বাচনের আগেই নারায়ণগঞ্জেও নতুন কমিটি হবে। কারণ জাতীয় নির্বাচনে আগে যুবলীগের কমিটি গঠন করা দরকার। ২৭টি ওয়ার্ডে যুবলীগের কমিটি থাকলে নৌকার পক্ষে আমার কাজ করা সহজ হবে। নেতাকর্মীরা যদি চায় এবং দল যদি আমাকে যোগ্য মনে করে তাহলে আমি আবারও যুবলীগের হাল ধরতে প্রস্তুত আছি। শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা উজ্জ্বল জানান, দীর্ঘদিন ধরেই মহানগর যুবলীগের কমিটি না থাকায় নতুন নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে না। আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতেও আর বেশিদিন বাকি নেই। নির্বাচনের কারণে নতুন কমিটি নাও হতে পারে। তবে আমরা চাই নির্বাচনের আগে নতুন কমিটি হোক। এতে করে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হবে। দল আগের তুলনায় আরো সুসংগঠিত হবে। দল যাকে যোগ্য মনে করবে তাকেই গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হবে। আমরা দুজনই যুবলীগের দায়িত্বে দীর্ঘদিন ধরে আছি। খারাপ সময়েও আমরা ছিলাম, ভালো সময়েও আছি। আমরা কখনো পিছপা হই নাই। দল যদি আমাকে যোগ্য মনে করে তাহলে আশা করি আমি আবারও এই পদে থাকবো।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা