আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | ভোর ৫:১১

সোনারগাঁয়ে চলছে মনোনয়ন লড়াই

ডান্ডিবার্তা | ০৭ মে, ২০২৩ | ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সোনারগাঁ আসনে বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এখন দলীয় হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা এবং এলাকায় গণসংযোগসহ বিভিন্নভাবে স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মকা-ে সক্রিয় থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই নির্বাচনকে টার্গেট করে বর্তমানে নানামূখী সমীকরণের মধ্যে আছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি। আওয়ামীলীগ চায় নির্বাচনের বর্তমান ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে। বিএনপির দাবি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আর জাতীয় পার্টি অনেকটাই সুবিধাবাদী পার্টির চরিত্র অবলম্বন করছে বলে জানা গেছে। নির্বাচনের এখনও এক বছরের মতো বাকি আছে। তাই প্রত্যেক দলই তাদের নিজ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের যাচাই বাছাইসহ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে বলে দলীয় ঘনিষ্ট সূত্র মারফত জানা গেছে। তাই রাজধানীর সবচেয়ে নিকটবর্তী জেলা হিসেবে সব রাজনৈতিক দলেরই এই জেলার ওপর আছে একটি আলাদা দৃষ্টি। নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্য, যোগাযোগ এবং ঐতিহ্যের দিক দিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সোনারগাঁ আসনটি। তাই আগামী নির্বাচনে এই আসন থেকে কারা কারা প্রার্থী হচ্ছেন তা নিয়েই ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা কল্পনা। শুরু হয়েছে নানান রকম হিসাব নিকাশ ও বিশ্লেষণ। এই আসন থেকে আগামী নির্বাচনে এই আসন থেকে বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা যে মনোনয়ন চাইবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে এবারও এই আসন থেকে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পালিত কন্যা হিসেবে পরিচিত অনন্যা হোসেইন মৌসুমী। আওয়ামী লীগের হয়ে এবার শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মনোনয়ন চাইবেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার। প্রার্থীর তালিকায় আরও থাকতে পারেন ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু। বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাওয়ার জন্য অনেকটাই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন আজহারুল ইসলাম মান্নান। তবে এই তালিকায় বিএনপি থেকে চার চারবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য রেজাউল করিমের নাম আসলেও তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই বলে মনে করেন বিএনপির একাধিক সূত্র। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই আসনে ভোটের লড়াইয়ে লাঙ্গলের চেয়ে অনেক এগিয়ে নৌকা এবং ধানের শীষ। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় খুব সহজেই এমপি নির্বাচিত হন লিয়াকত হোসেন খোকা। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে লিয়াকত হোসেন খোকা, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আব্দুল্লাহ আল কায়সার এবং ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আজহারুল ইসলাম মান্নান নির্বাচন করার সম্ভাবনা তৈরি হলে একটি ত্রিমূখী লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান কায়সার। একই সাথে লিয়াকত হোসেন খোকা জাতীয় পার্টির প্রার্থী হলেও আওয়ামী লীগের সাথে জোটগত নির্বাচন করার কারণে সেই নির্বাচনেও আজহারুল ইসলাম মান্নানকে খুব সহজেই পরাজিত করে নির্বাচিত হন। তবে এবার এই আসনে জাতীয় পার্টি অনেকটাই বেকায়দায় বলে মনে করেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ। এরই মধ্যে এবারের নির্বাচনে সদর-বন্দর আসনের মতো এই আসনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি ওঠেছে আওয়ামী লীগের তৃণমূল থেকে। তাদের দাবি এই আসনে পর পর দুইবার জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ায় প্রায় দশ বছর যাবত এখানে নেতৃত্ব দিচ্ছে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য। যার ফলে এখানকার আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টিসহ একাধিক বলয় সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাই জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সাথে জোটগত নির্বাচন করলেও এই আসন থেকে অবশ্যই নৌকার প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ার দাবি চলছে খুব জোরেসোরে। সেই দাবির সাথে জেলা এবং মহানগরসহ নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রায় সব পর্যায়ে থেকে সহমত পোষণ করা হয়েছে। তাই এবার এই আসন থেকেও নৌকার প্রতীককে মনোনয়ন দেওয়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে যদি এমনটা হয় তাহলে এবার জাতীয় পার্টির প্রার্থীর তুলনায় প্রতিযোগিতায় অনেকটাই এগিয়ে থাকবে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি। স্থানীয়দের মতে এই আসনটি মূলত আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই আসন থেকে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়েছেন দুইবার এবং বিএনপি নির্বাচিত হয়েছেন চারবার। আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার এর আগে এই আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বচিত হয়েছেন। এক সময় নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সাংসদ একেএম শামীম ওসমানের সাথে কায়সারের সম্পর্ক বেশি একটা ভালো না থাকলেও সেই সমস্যা এখন অনেকটাই মিটে গেছে বলে স্থানীয়দের অভিমত। মনোনয়নের যোগ্য দাবিদার হিসেবে এবার দলীয় সমর্থন পাওয়ার লড়াইয়ে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, মোবারক হোসেন স্মৃতি সংসদ এর চেয়ারম্যান এরফান হোসেন দীপ। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সিনিয়র সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, স্বাচিপের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য মাহফুজুর রহমান কালাম। তবে আওয়ামীলীগের সকল মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের মধ্যে মোবারক হোসেন স্মৃতি সংসদ এর চেয়ারম্যান এরফান হোসেন দীপ সবচাইতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। তাছাড়া বিএনপি যদিও এখন পর্যন্ত নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া নির্বাচেন অংশগ্রহণ করবে না, তারপরও যেকোন সময় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য সব রকমের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন তারা। বিএনপির তালিকায় যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান এবং বিএনপি থেকে একটানা চারবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম। এছাড়াও এই তালিকায় আরও বেশ কয়েকজনের নাম আসতে পারে বলে মনে করেন সোনারগাঁও বিএনপির একাধিক সূত্র।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা