সিদ্ধিরগঞ্জে রাজনীতির সফলতা-ব্যর্থতা

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ও দলীয় আন্দোলন সংগ্রামকে চাঙা করতে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল তৃণমূল পর্যায় থেকে সংগঠনের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও শক্তিশালী নবরূপে সাজানোর লক্ষ্যে কাজ করছে। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচিত নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির অর্ন্তগত সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি অত্যান্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে নিজের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড বিএনপি থেকে শুরু করে থানা বিএনপির কমিটি পূর্ণাঙ্গ করেছে। তবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের অর্ন্তভুক্ত সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগ দীর্ঘ এক যুগ বেশী সময় একই নেতৃত্বের দ্বারা পরিচালিত হলেও ওয়ার্ড থেকে শুরু করে থানা পর্যায়ে কোন রকম নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। যার কারণে বর্তমান সময়ে সিদ্ধিরগঞ্জে সাংগঠনিক ভাবে আওয়ামীলীগ থেকে বিএনপিই শক্তিশালী সংগঠনে রূপান্তিত হয়েছে। সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে নব নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন আহ্বায়ক হিসেবে নেতৃত্বে আসার পর পরই নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির অর্ন্তগত সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির গত ৫ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাজেদুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও নাসিক ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেনকে সদস্য সচিব করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেন। আহ্বায়ক কমিটি গঠনের বেশ কয়েকদিনের মধ্যেই দ্রুত গতিতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির আওতাভুক্ত ১০টি ওয়ার্ডে আহ্বায়ক কমিটি গঠন ও পরবর্তীতে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি পূর্ণতা দিয়েছে। ওয়ার্ড কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করার পর পরই থানা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর গত ৪ মে ৯৪ সদস্য বিশিষ্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়। এতে করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপিতে তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে থানা ব্যাপী একটি শক্তিশালী সংগঠনের রূপ নিয়েছে। তবে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপিকে একটি শক্তিশালী সংগঠনে রূপ দিতে সবচেয়ে বেশী অবদান ছিল জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গিয়াসউদ্দিনের। কারণ তার নেতৃত্বেই নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির রাজনীতি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এছাড়া দলীয় আন্দোলন সংগ্রামেও শক্তি দেখাতে প্রস্তুত করেছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপিকে। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের অর্ন্তভুক্ত সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগ দীর্ঘ এক যুগের বেশী সময় ধরে পুরাতন নেতৃত্বের দ্বারাই পরিচালিত হচ্ছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগ। কারণ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগে সভাপতি হিসেবে মো. মজিবুর ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ইয়াছিন মিয়া দীর্ঘদিন ধরেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে তারা নেতৃত্ব দিলেও নেতৃত্বের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করা এবং সংগঠনকে পূর্ণতা দেয়ার ক্ষেত্রে কোন রকম ভূমিকা রাখতে পারেনি। যার কারণে দুই নেতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগ। তবে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী সংসদ শামীম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের ১নং সদস্য থাকলেও নেতৃত্বের কোন পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি। যার কারণে এই দুই নেতাই সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের শীর্ষ পদ আঁকড়ে আছেন। গত ৮জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের এক সভায় মহানগরের ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭টি ওয়ার্ডের সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তখন সিদ্ধিরগঞ্জের ১০টি ওয়ার্ডের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করতে পারেনি মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা। কিন্তু সেসময় সিদ্ধিরগঞ্জের ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতারা মহানগরের সাধারণ সম্পাদককে সম্মেলনের ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলে দেন এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সিদ্ধান্ত জানাবেন। এছাড়া ১৭টি ওয়ার্ডের সম্মেলনের পরই সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের বাকি ১০টি ওয়ার্ডের সম্মেলনের গুঞ্জন শোনা যায়। এতে করে ১০টি ওয়ার্ডে সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড নেতৃত্ব ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের নব নেতৃত্বের আসার প্রহর গুনছিলেন থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে আসতে চাওয়া নেতারা। কিন্তু সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগ ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগে এখনো সম্মেলন ও নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার কোন বার্তা নেই। এছাড়া ফের ১৭টি ওয়ার্ডে মহানগর আওয়ামীলীগের উদ্যোগে কর্মী সভার আয়োজন করলেও সিদ্ধিগঞ্জের ১০টি ওয়ার্ডে নেই কোন কর্মী সভা। এতে করে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেও সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী হতে পারছে না সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগ। এতে প্রতিয়মান হয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় সফলতায় বিএনপি ব্যর্থতায় আওয়ামীলীগ।