আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | রাত ১২:২০

শ্রমিক লীগের পাল্টা পাল্টি কমিটি

ডান্ডিবার্তা | ১৪ মে, ২০২৩ | ১০:৫৩ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগ। বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগ ১৯৬৯ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আর এই শ্রমিক লীগ নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জে চলছে অপরাজনীতি, একই সাথে দুটি কমিটি চলমান থাকায় বিভিন্ন বিভ্রান্ত সৃষ্টি হচ্ছে দলের মধ্যে, ক্ষুন্ন হচ্ছে ভাবমূর্তি। অপরদিকে তৃনমূলের নেতাকর্মীরা শ্রমিকলীগের উপর আস্থ্া হারিয়ে ফেলছে। দলের বড় বড় কর্মসূচীতে পূর্বের মত সাফল্য নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জে কোন ভুমিকা রাখতে দেখা যাচ্ছে না শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীদের। আগামী নির্বাচনকে ঘিরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন রাজনীতির মাঠে ময়দানে গতিশীলভাবে কাজ করে গেলেও সিদ্ধিরগঞ্জে দুই কমিটিরই কর্ণধার একই ব্যক্তি বিতর্কিত আব্দুস সামাদ বেপারী, এক কমিটির সদস্য সচিব মো. সাদ্দাম হোসেন ও অপর আরেকটি কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. কবির হোসেনের কারনে দ্বি-খ-িত হয়ে পড়েছে শ্রমিক লীগ নেতৃবৃন্দ। এলাকা জুড়ে চলছে আলোচনা সমালচনা। সামাদ বেপারী বলছেন আমি এক কমিটির সভাপতি আরেক কমিটির আহ্বায়ক। তবে তিন মাস পূর্বে আহ্বায়ক কমিটি বাতিল করা হয়েছে। আমি কোনো আগাছা পরগাছা, বিশেষ করে যারা রাজনীতি করেনা, রাজনীতি বোঝেনা আমি তাদের সাথে নেই। একপর্যায়ে তিনি আহ্বায়ক কমিটির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ও ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক ইলিয়াস মোল্লাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ওরা বাচাল, ফাচাল, আগাছা, চুয়াডাইঙ্গা কমিটির সভাপতি, হালাইন্না কমিটির সভাপতি, মুক্তিযোদ্ধা কমিটির সভাপতি, শ্রমিক লীগের পদে আইছে, আবার স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই কমিটির কাগজ জমা দিছে, একটা সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, আরেকটা দিছে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে এ-ই ইলিয়াস মোল্লা। অভিযোগ রয়েছে আব্দুস সামাদ বেপারী নানা অভিযোগে অভিযুক্ত। তিনি শ্রমিক লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে পরিবহন চাঁদাবাজি, আদমজী ইপিজেডে টেন্ডারবাজি, ভুমি দস্যুতা নিয়ন্ত্রন করে আসছেন। তিনি নেপথ্যে থেকে গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন বাহিনী। তারই ইশারায় এগুলো নিয়ন্ত্রন করেন তার অনুসারিরা। এরআগে তিনি চাঁদাবাজির অভিযোগে র‌্যাব-১১ এর অভিযানে গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। নেতাকর্মীদের অভিযোগ আর্থিক ফায়দা লুটতেই নিজে দুই কমিটির কর্ণধার হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জে শ্রমিক লীগকে বিভক্ত করে রেখেছেন। একটি কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত থাকার পরও অন্য আরেকজনকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পদধারী করে আশির্বাদ পুষ্ঠ করে রেখেছেন। দলকে বিনষ্ট করে নিজে বাড়ি গাড়িসহ অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। জানাগেছে, সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের দীর্ঘদিন যাবত দুইটি কমিটি থাকায় নানান কোন্দল, দ্বন্ধ ও বিভ্রান্তি চলছে। কমিটি দুটোর একটির সভাপতি আব্দুস সামাদ বেপারী ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. কবির হোসেন। আহ্বায়ক কমিটির নামে অপর কমিটির আহ্বায়ক আব্দুস সামাদ বেপারী ও সদস্য সচিব মো. সাদ্দাম হোসেন। দুটো কমিটিই তাদেরকে বৈধ দাবি করে আসছে। সর্বদা একে অপরের উপর বিষেধাগার করছে, চালাচ্ছে নানা অপপ্রচার। এক কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মো. কবির হোসেন বলছেন আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিক লীগ আহ্বায়ক কমিটি নাকি টাকার বিনিময়ে কমিটি করা হয়েছে। তাদের এটা অবৈধ কমিটি। এ কমিটি বিতর্কিত লোকদের কে নিয়ে করা হয়েছে। যেখানে সদস্য সচিব সাদ্দাম হোসেন কখনো শ্রমিক লীগের সদস্যও ছিলোনা এবং কোন মিটিং মিছিলেও ছিলো না। জাতীয় শ্রমিকলীগের কেন্দ্রিয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুর কুতুব আলম মান্নান ও সাধারন সম্পাদক কে.এম আযম খসরু (জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একটি প্যাডে) স্বাক্ষরিত করে গত ২৬-০৫-২২ তারিখে সিদ্ধিরগঞ্জ আদমজী আঞ্চলীক শ্রমিক লীগের আব্দুস সামাদ বেপারীকে আহ্বায়ক ও মো. সাদ্দাম হোসেনকে সদস্য সচিব করে ৬ মাসে জন্য একটি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি দেওয়া হয়। গত ২৬-০৫-২২ তারিখ অনুযায়ী ২৬-১১-২২ সালেই ৬ মাসের দেওয়া সিদ্ধিরগঞ্জ আদমজী আঞ্চলীক শ্রমিক লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। তবে আহ্বায়ক কমিটির একাংশ নেতৃবৃন্দের দাবী এখনো কমিটি বহাল রয়েছে। অপরদিকে আব্দুস সামাদ বেপারী সিদ্ধিরগঞ্জ আদমজী আঞ্চলীক শ্রমিক লীগের পূর্বের কমিটি সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. কবির হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত থাকার পরও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন। এনিয়ে দলের মধ্যে চলছে চরম অসন্তোষ। সেই সাধারণ সম্পাদক ত্যাগী নেতা মো. সালাউদিন সব কিছু নিরবে সহ্য করে বাধ্য হয়ে দলের স্বার্থে নিশ্চুপ থেকে নেতৃত্বের ঝান্ডা শক্ত হাতে ধরে রেখেছেন। কবির হোসেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দাবি করে আব্দুস সামাদ বেপারীর ছায়াতলে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলো থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রে রাম রাজত্ব কায়েম করছেন। অপরদিকে আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব সাদ্দাম হোসেন একই নেতার ছত্রছায়ায় দলের প্রভাবশালীদের নাম ভাঙ্গিয়ে ইপিজেডসহ বিভিন্ন বানিজ্যিক দপ্তরে ক্ষমতার আধিপত্য বিরাজ করছেন। এনিয়ে বিভিন্ন সময়ে সংঘাত ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। তৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মন্তব্য করছেন এখানে দল নয় ব্যাক্তি স্বার্থ হাসিল করতেই দুই কমিটি। আর এই দুই কমিটির লোকজন ক্ষমতা ও আধিপত্যের লড়াইয়ে মাঠে প্রতিযোগীতায় নেমেছেন একই নেতার দ্বি-মূখী নেতেত্বে। এতে দিন দিন বাড়ছে সংঘাতের শংকা। এসুযোগে কেন্দ্রের ঘোষনা অনুযায়ী সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি গতিশীল ভাবে রাজনীতির মাঠ গরম করে নির্বাচনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন আন্দোলনে কর্মসূচী পালনসহ ডাক-ঢোল বাজিয়ে ঘোষণা করছে একের পর বিএনপির কমিটি। এরই ক্রমনাসুরে বিএনপি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে নামানোর জন্য দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদের পাশাপাশি সরকারের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছে। অপর দিকে ক্ষমতাসীন দলের শ্রমিক লীগ দুই কমিটি দলীয় কর্মকান্ডে সক্রিয় না হয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য চুপচাপ থেকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে শ্রমিক লীগ কমিটির নাম। তারাই দলের বড় নেতা। সম্প্রতি দুই কমিটি মধ্যে একে অপরকে ফেইসবুক স্যোশাল মিডিয়ায় ও গণমাধ্যমে চলছে বিভিন্ন লেখা-লেখি। তারা সিদ্ধিরগঞ্জ আদমজী আঞ্চলীক লীগ কমিটি নিয়ে কোন পথে আগাচ্ছেন তা নিয়ে তৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ও এলাকাবসীর মধ্যে আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। সিদ্ধিরগঞ্জ আদমজী আঞ্চলীক শ্রমিক লীগের ভারপ্রপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. কবির হোসেন বলছেন, আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের সদস্য সচিব পরিচয় দেয়া সাদ্দাম হোসেনের কমিটি অবৈধ। এই কমিটিকেও বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে কেন্দ্র থেকে। অপরদিকে আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক সদস্য সচিব পরিচয় দেয়া সাদ্দাম হোসেন বলছেন, আব্দুস সামাদ বেপারী কিভাবে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কমিটি করে ঘোষনা দেয়। এটাকি তাদের পকেট কমিটি না। মা বানায়, পুতে বেছে। তাদের এই কমিটি। এদিকে আহ্বায়ক কমিটির ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক ইলিয়াস মোল্লা বলেন, সামাদ বেপারী দলের নীতি নির্ধারন ও নিয়ম উপেক্ষা করছেন। কারণ তাদের পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতাকর্মীরা বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জে শ্রমিকলীগের সম্মেলন ও কমিটি নিয়ে চলছে ষড়যন্ত্র। সম্মেলন কবে হবে কমিটি কবে ঘোষণা হবে তাও অনিশ্চিত। কমিটিকে কেন্দ্র করে দলে মাদক কারবারি, বিভিন্ন মামলার আসামি, কিশোর গ্যাং লিডারসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িতরা স্থান করে নিচ্ছে। অবমুল্যায়িত হচ্ছে দলের দু:সময়ে রাজপথ কাপানো ত্যাগী নেতাকর্মীরা। এনিয়ে তৃনমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র ক্ষোভ। কমিটিতে স্থান পেতে বিতর্কিত করছেন নানা তদ্ববির ছুটছে শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের দ্বারে দ্বারে। যুগের পর যুগ ধরে রাজপথের পরীক্ষিত ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে বির্তকিতরা পদ পদবী পাওয়ার জন্য তৎপর হয়ে উঠায় তৃনমূলের মধ্যে সৃষ্টি হয় অসন্তোষ, বিরাজ করেছে চরম ক্ষোভ। এদিকে তৃনমূল নেতাকর্মীদের দাবি বিতর্কিত নয় ত্যাগী ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকদের চাই নতুন কমিটিতে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা