আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | রাত ১২:২২

সভানেত্রীর হাতে মহানগরের আমলনামা

ডান্ডিবার্তা | ২২ মে, ২০২৩ | ১১:৪৯ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট ২০১৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর শহর আওয়ামীলীগ থেকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের রূপ নিলেও সাড়ে ৯বছরেও ঐক্যবদ্ধ রাজনীতে মাঠে থাকতে পারেনি দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা। হাইকমান্ডের চাপে তারা দুইজনে এক টেবিলে বসলেও তাদের মতানৈক্য দূরত্ব বৃদ্ধি করে। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনের ২ বছর পর প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে আনোয়ার হোসেনকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট খোকন সাহাকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর আওয়ামী লীগ ঘোষনা করেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। ওই সময় উপস্থিত ছিলেন, শামীম ওসমান এমপি, ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, চন্দন শীল, জি এম আরাফাত, আহসান হাবিব সহ সিনিয়র নেতারা। ওই সভায় দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্যে দীর্ঘ সময় আবেগময় বক্তব্যে রেখেছিলেন আনোয়ার হোসেন। রাজনীতি জীবন, নারায়ণগঞ্জ রাজনীতি পরিবেশ, পরিবারের সন্তান, জীবিকা নির্বাহ সহ বিভিন্ন নিয়ে গঠনমূলক বক্তব্যে দেন তিনি। এতে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা রীতিময় অবাক হন ও আনোয়ার হোসেনের প্রতি নমনীয় হয়ে পড়ে। আনোয়ার হোসেনের সেই আবেগময়ী বক্তব্যে চলাকালে দলের সভানেত্রী বলে উঠেন, আনোয়ার হোসেন তুমি আমার কাছে হলুদে পাখি। তৎকালীণ সদর উপজেলার নির্বাচনে তিনজন আওয়ামীলীগের প্রার্থী নিয়ে সভানেত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জে এই সব ডাটি পলিটিক্স (ধূলিসাৎ রাজনীতি) বন্ধ করতে হবে। গণভবনে আলোচনা শেষে শহর শাখা থেকে পদোন্নতি করে মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি পদে আনোয়ার হোসেনকে ঘোষণা করেন। পরে শামীম ওসমানের প্রস্তাবে আনোয়ার হোসেনের সমর্থনে খোকন সাহাকে মহানগরের সাধারণ সম্পাদক করা হয় বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। এরপর থেকে আনোয়ার হোসেন ও খোকন সাহা একতা থাকলেও মহানগর পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে আবারো দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। তাদের মধ্যে মতানৈক্য থাকায় দুই বছর তিন মাস পর ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দলের সভানেত্রী। ৭১ সদস্য কমিটিতে ঠাইঁ পায়নি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী। অপরদিকে মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যকরি কমিটির এক নম্বর সদস্য হন শামীম ওসমান এমপি। ডা. আইভীকে নিয়ে আনোয়ার হোসেন ও খোকন সাহার অপছন্দ থাকা তিনি এই কমিটিতে ঠাঁই পায়নি। তৎকালীন আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়ায় তিনি ৪০ জনের ও খোকন সাহা ৪০ জনের নামের তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছিলেন। সেখান থেকে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দেওয়া হয়েছে। সেখানে হয়তো আনোয়ার হোসেনের ৩৫ কিংবা ৩৬ জন অথবা খোকন সাহার ৩৫ কিংবা ৩৬ জনের নাম রাখা হয়েছে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবেই এ কমিটি নিয়ে এসেছি। আমাদের ঐক্য আরো জোরালো হবে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়ার পর ৯ বছরে ৭১ সদস্যকে একত্রে রাজপথে সহসা দেখা যায়নি। কিন্তু ২০২২ সালে অক্টোবরে শুরু মহানগর আওয়ামীলীগের সম্মেলন ঘিরে বর্ধিত সভায় ৭১জনের মধ্যে ৬৬ জনকে একত্রে দেখা গেছে। তারপর থেকে চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা এক টেবিলে দেখা যায়। ওয়ার্ড সম্মেলন নিয়ে বিরোধ ও সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলে সম্মেলন করার সিদ্ধান্তে আনোয়ার ও খোকন সাহা মধ্যে মতানৈক্য প্রকাশ্যে রূপ নেয়। এর সব বিরোধে প্রধান কারণ হিসেবে নেতা-কর্মীরা আঙ্গুর তুলে নির্বাহী কমিটির সদস্য এমপি শামীম ওসমানের উপর। এদিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের অন্তর্ভুক্ত শহরের ৯টি ও সিদ্ধিরগঞ্জের ৯টি ওয়ার্ডের সম্মেলনেও আনোয়ার হোসেন ও খোকন সাহা অমিল দেখা দেয়। আনোয়ার হোসেনকে মাইনাস করে ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩টি ওয়ার্ডে তাকে প্রধান অতিথি রাখা হয়েছে। বাকি ১৬টি ওয়ার্ডের প্রধান অতিথি ছিলেন চন্দন শীল, খোকন সাহা ও মজিবুর রহমান। এই নিয়ে আনোয়ার হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করলেও, খোকন সাহা কোন দ্বন্দ্বে জড়াননি। ১৪ এপ্রিল বন্দরে একটি অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা বলেন, আনোয়ার ভাই বলেন পঁচাত্তরের পর তিনি রোল খেটেছেন। পঁচাত্তরের পরে তো অনেকেই জেল খেটেছে। কে কী পেয়েছে, নেত্রী তাকে সর্বোচ্চ সম্মান দিলো। আপনি অনেক পেয়েছেন, যারা পায়নি তাদের সুযোগ করে দেন। তিনি (আনোয়ার হোসেন) দলটিকে বিশ টুকরো করেছেন। আজ তিনি নৌকা মার্কা চান, তার দেখাদেখি অনেকেই পোস্টার লাগাচ্ছে। আনোয়ার ভাইয়ের জন্য আমরা অনেক কিছু করেছি। তাকে সিটি করপোরেশনের মেয়র করার জন্য কাজ করেছি। চন্দন শীলের সেক্রিফাইলে তিনি ২০১৬ সালে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হলেন। কষ্ট লাগে যখন আনোয়ার ভাই পদের জন্য তার কমিটির এক নম্বর সদস্যকে খুনী হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি দল ভাঙার মিশন নিয়ে নেমেছেন। সবদিক মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের হ-য-ব-র-ল অবস্থা সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা প্রভাবশালী কাছে নিশ্চুপ থাকায় মহানগর একাংশ থেকে দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাড়ে ৯বছরের ইতিহাস টেনে একটি বার্তা পাঠানো হয়েছে। সেই বার্তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী খোজখবরও নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তিনি দেশের বাহিরে থাকায় দলীয় ফোরাম থেকে বিরত রয়েছে। এর মধ্যে ১৮ মে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আযম মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তলব করেছেন। সেই দিন তাদের কাছ থেকে মহানগরের সকল বিষয়ে অবগত হবেন ও ভবিষ্যত চিন্তা নিয়ে জানবেন। সেই প্রস্তাবগুলো দলের সভানেত্রী কাছে তুলে ধরা হবে। তারপর সম্ভাব্য ২০ মে দলের ফোরামের সভায় অন্যদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের ভাগ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা