আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | রাত ১২:১৮

ত্যাগী নেতা কর্মীরা অবমূল্যায়িত!

ডান্ডিবার্তা | ০৩ জুন, ২০২৩ | ৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট দীর্ঘদীন ধরেই নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সাংগঠনিক তৎপরতা নিয়ে দলের নেতা-কর্মীরা হতাশায় ছিলেন। দলীয় কর্মসূচী পালনে ব্যর্থসহ দলীয় কোন্দলে কোনঠাসা ছিলেন দলের নেতৃবৃন্দ। এমনকি, ঢাকার পাশ্ববর্তী জেলা রাজনৈতিক সূতাকাগার হিসেবে সু-পরিচিত নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতি অনেকটাই অস্তিত্ব সংকটের মধ্যেই ছিল। এর মধ্যে ঘনিয়ে এসেছে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। সামগ্রিক দিক বিবেচনার মধ্য দিয়েই সম্প্রতি সাবেক সাংসদ গিয়াসউদ্দীকে আহ্বায়ক এবং গোলাম ফারুক খোঁকনকে সদস্য সচিব করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদিকে, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করার ১৫দিন অতিবাহিত হলেও এখনো দলীয় কর্মসূচী পালনে আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্বে কোন কর্মসূচী পালন করতে দেখা যায়নি। এমনকি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনার পর পর নেতাকর্মীদের সাথে পরিচিতি সভাও করতে দেখা যায়নি। এমতবস্থায়, জেলা বিএনপির রাজপথের নেতাকর্মীদের প্রশ্ন? আহ্বায়ক কমিটির বর্তমান নেতৃবৃন্দ কি পারবে নারায়ণগঞ্জের মত গুরুত্বপূর্ণ জেলার রাজনীতিতে বিএনপির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে? এয়াড়াও বতর্মান নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে দলটির স্থানীয় বেশ কয়েকটি বলয়কে ঘিরে নানান ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। নতুন এই কমিটিকে এক পাক্ষিক বলছেন আবার কেউ কেউ। এতে কিছুটা হলেও চাপে পড়েছেন জেলার রাজনীতিতে প্রভাবশালী ভূমিকায় থাকা বিএনপির বাকি চার নেতা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম আজাদ, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের বিএনপির একাংশের নিয়ন্ত্রণ কর্তা শাহ আলম, দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান। কারণ কমিটির কোথাও তাদের অবস্থান রাখা হয়নি অথচ বিগত ১৪ বছরের বিরোধী দলের রাজনীতিতে তাদের তয়েছে অনেক ত্যাগ ও রাজপথের শ্রম। নতুন এই কমিটিকে ঘিরে বর্তমানে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন। জেলা যুবদলের সদস্য সচিব পদ থেকে সরিয়ে সরাসরি মূল দলের দায়িত্ব দিয়ে দেয়াকে খুব একটা সহজ ভাবে নিতে পারছেন না দলটির নেতারা। রূপগঞ্জের প্রভাবশালী নেতা ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপুর আস্থাভাজন হিসেবে জেলাজুড়ে সুপরিচিতি রয়েছে খোকনের। অন্যদিকে নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে দলটির সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে। সাবেক সাংসদ হবার পরও বিগত ১৪ বছর বিরোধী দলের সময়ে রাজপথে ও দলীয় কাজে সক্রিয়তা ছিলেন গিয়াসের। তার নেতাকর্মীরাও ছিলেন নিস্ক্রিয় অথচ বিগত বিএনপির সরকারের সময় নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন জোনে ছিল একচ্ছত্র আধিপত্য। বিশাল অর্থ বিত্তের মালিক বনে গেলেও দীর্ঘ এ সময়ের দলের পেছনে নেই তাদের খরচের তেমন নজির। দীর্ঘদিন নিষ্কিয় থাকায় অনেকটা রাজনীতি থেকে হারিয়ে যেতে বসেছিলেন গিয়াস। তবে দীর্ঘদিন পর গিয়াসকে আবারও মূল ধারার রাজনীতিতে ফিরিয়ে নিয়ে আসার পেছনে দিপু বলয়ের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে এমনটা ধারণা করা যাচ্ছে। বিগত সময়ে নারায়ণগঞ্জে ও সোনারগাঁয়ে যখন বিএনপির নেতাকর্মীরা বিপদে ছিলেন তখন তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন মান্নান, আজাদ। এ ছাড়াও ফতুল্লা সিদ্ধিরগঞ্জের নেতাকর্মীদের নানাভাবে অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছিলেন শাহ আলম। মান্নান ও আজাদ বিগত নির্বাচনে সোনারগাঁ ও আড়াইহাজা থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতাও করেছিলেন তিনি। সম্প্রতি সোনারগাঁয়ে বিএনপির একটি সভায় দিপু ভূইয়াকে উদ্দ্যেশ্য করে বেশ কড়া কথা বলেছিলেন মান্নান। জেলার কমিটি নিয়ে যে তাদের মধ্যে অভ্যন্তরীন প্রতিযোগিতা ছিল এতে তা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে সে বক্তব্যে। একই অনুষ্ঠানে গিয়াসউদ্দিনকে নিয়েও বক্তব্য রাখেন তিনি। অন্যদিকে বিএনপির রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত না থাকলেও বিএনপির একটি বড় অংশ এখনও নিয়ন্ত্রণ করেন ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করা শাহ আলম। দলীয় কর্মসূচিতে বেশ সক্রিয় এই বলয়ের নেতাকর্মীরা। তবে নবগঠিত কমিটিতে শাহ আলমের অনুসারীদের কাউকেই রাখা হয়নি। অন্যদিকে গত নির্বাচনে রূপগঞ্জ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করা কাজী মনিরুজ্জামানেরও একই দশা। জেলা বিএনপির সাবেক এই সভাপতিও স্থান পাননি জেলার কমিটিতে। নেই তার কোন অনুসারীও। কাজী মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর থেকেই রাজনীতিতে খুব একটা সক্রিয় অংশগ্রহণ দেখা যায়নি এই নেতার। তবে জেলার রাজনীতিতে এখনও নিয়মিত অংশগ্রহণ করে থাকেন তার অনুসারীরা। নারায়ণগঞ্জে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের যেকোন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় থাকেন কিং মেকার হিসেবে খ্যাত বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ। এবারও তিনি আলোচনায় ছিলেন তার নিজস্ব বলয় নিয়ে। জেলার রাজনীতিতে আড়াইহাজার কেন্দ্রীক একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক বলয় আছে আজাদের। দলীয় কর্মসূচিতেও থাকে তার নিয়মিত পদচারণা। তবে জেলার কমিটিতে ঠাই পায়নি কিং মেকার খ্যাত আজাদের কোন অনুসারীরা বা তার সাথে সখ্যতা থাকা নেতাদের কেউ। বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বিষয়টিকে প্রতিযোগিতা বললেও সামনে আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে এর প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এর ফলে বলয়ভিত্তিক রাজনীতি ও তৃণমূলে বিভাজন তৈরি হবে যা সামনে আন্দোলন সংগ্রামে প্রভাব ফেলবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা