আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | রাত ১২:২০

রাহুগ্রাসের কবলে এনায়েতনগর বিএনপি!

ডান্ডিবার্তা | ০৫ জুন, ২০২৩ | ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট এনায়েতনগর ইউনিয়ন ৯টি ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি নিয়ে বইছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। অধ্যাপক খোন্দকার মনিরুল ইসলাম ও স.ম নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে রয়েছে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে অযোগ্যদের দিয়ে কমিটি করার অভিযোগ। ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক খোন্দকার মনিরুল ইসলাম ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক স. ম নুরুল ইসলাম ফতুল্লা থানা বিএনপির রাজনীতিতে পুরোধা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। দু’জনেই জিয়াউর রহমানের জাগো দল থেকে তাদের রাজনীতি শুরু করেছেন। ১৯৮৯ সালে ক্লীন ইমেজের অধিকারী নেতা প্রয়াত খোরশেদ আলমকে সভাপতি ও স.ম নুরুল ইসলামকে সাধারন সম্পাদক করে ফতুল্লা থানা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সে কমিটিতে খন্দকার হুমায়ন কবির ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি ও অধ্যাপক খোন্দকার মনিরুল ইসলাম ছিলেন সহ- সভাপতি। মোঃ খোরশেদ আলমের মৃত্যুর পর ফতুল্লা থানা বিএনপির একক কতৃত্ব চলে আসে স.ম নুরুল ইসলামের হাতে। তৎকালীন সময়ে তিনিই কঠোর হস্তে নিয়ন্ত্রন করেছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির রাজনীতি। সে সময় ধর্মগঞ্জে তার বাস ভবনে ছিল নেতাকর্মীদের ভীড়। দক্ষ সংগঠক হিসেবে তার যেমন পরিচিতি থাকলেও বদ মেজাজী হিসেবেও বেশ সুনাম ছিল কর্মীদের কাছে। ৯০দশকে নারায়ণগঞ্জ -৪ আসনে বিএনপির রাজনীতি ছিল সাবেক সাংসদ বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলীর হাতে। ফতুল্লায় তার ঘনিষ্ট সহচর ছিলেন স.ম নুরুল ইসলাম। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলীর কারিশমায় ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনে এমপি হন বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। নির্বাচনের পর হালুয়া রুটির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে তাদের সম্পর্ক ফাটল ধরে। মোহাম্মদ আলীর অনুসারীরা গিয়াসউদ্দিনকে ফতুল্লায় অবাঞ্ছিত ঘোষনা করে। মোহাম্মদ আলীর অনুসারীদের বাঁধার মুখে ফতুল্লায় আসতে গিয়াসউদ্দিনকেও প্রতিকূল সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল সে সময়। গিয়াসউদ্দিনও মোহাম্মদ আলী সহ তার অনুসারীদের প্রশাসনিক ভাবে শায়েস্তা করেছিলেন বর্তমান ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক হাসান মাহমুদ পলাশকে বাদী করে মোহাম্মদ আলী বিরুদ্ধে সোনার চেইন ছিনতাইয়ের মামলা দেয়া হয়েছিল। বাদ যায়নি মোহাম্মদ আলীর অনুসারীরাও তৎকালীন সময়ে সরকারের ক্লীনহার্ড অপারেশনে স.ম নুরুল ইসলাম ও তার ভাইদেরকে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ধোলাই দিয়েছিলেন গিয়াসউদ্দিন। সে থেকে তাদের বিরোধ চরম আকার ধারন করে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৩ সালে পাগলা মেরীএন্ডারসনে আয়োজিত বিএনপির কাউন্সিলে স.ম নুরুল ইসলাম কাউন্সিলদের ভোটে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হলেও অধ্যাপক মনিরুল ইসলামকে বিজয়ী ঘোষনা করেন গিয়াসউদ্দিন। সে থেকে অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম ও স.ম নুরুল ইসলামের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। অধ্যাপক খোন্দকার মনিরুল ইসলাম ও স.ম নুরুল ইসলাম সম্পর্কে তারা ভায়রা ভাই। দলীয় পদ চলে যাওয়ার পর এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার বাসনায় মাঠে নামেন স.ম নুরুল ইসলাম। নির্বাচনে বাধ সাধেন বন্ধু মোহাম্মদ আলী। তিনি সাপোর্ট করেন আরেক বন্ধু ফতুল্লা থানা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ নাসিরউদ্দিনকে। নির্বাচনে পরাজিত হয়ে স.ম নুরুল ইসলাম সঙ্গ ত্যাগ করেন মোহাম্মদ আলীর। সে সময়ে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শিল্পপতি শাহ আলমের সাথে তৈরী হয় সখ্যতা। নাসির চেয়াম্যানের মৃত্যুর পর এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আবারও প্রার্থী স.ম নুরুল ইসলাম। নির্বাচনে তার আশা ছিল, শাহ আলমের প্রকাশ্য সমর্থন পেলে তিনি নির্বাচনী বৈতরনী পার হয়ে যাবে। শাহ আলমের সমর্থন না পাওয়ায় নির্বাচনে জয়ী হন মোহাম্মদ আলীর ভাতিজা হাবিবুর রহমান লিটন। শাহ আলমের সঙ্গ ত্যাগ করে রাজনীতিতে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন স.ম নুরুল ইসলাম। এ সুযোগে সুচতুর পলিটিশিয়ান গিয়াসউদ্দিন স.ম নুরুল ইসলামের বাড়িতে গাড়ি পাঠিয়ে নিয়ে যান সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিলে। সেখানে তারা পূর্বের ভুলত্রুটি ভুলে গিয়ে একত্রিত হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। সে থেকে সুযোগের অপেক্ষার প্রহর গুনতে শুরু করেন তারা। গিয়াসউদ্দিন জেলা বিএনপির আহবায়ক হলে শেষ হয় অপেক্ষার প্রহর। ফতুল্লা থানা বিএনপির রাজনীতি এখন তাদের হাতের মোয়া। তারাই বিতরন করছেন ফতুল্লা থানার ৫ টি ইউনিয়ন বিএনপির পদ পদবী। বর্তমানে এই দুই নেতার প্রেসক্রিপসনে বাস্তবায়নে গঠিত হয়েছে এনায়েতনগর ইউনিয়ন ৯ টি ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি। এনায়েতনগর ইউনিয়নের তৃনমুল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে অধ্যাপক খোন্দকার মনিরুল ইসলাম ও স.ম নুরুল ইসলামের চরম সেচ্ছাচারিতা ও আর্থিক সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের মাইনাস করে যারা বিগত দিনে দলের কোনো কর্মসূচিতে ছিল না এমন কি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িতদেরকেও কমিটিতে পদায়ন করা হয়েছে। তাদের এ ধরনের কর্মকান্ডে প্রতিবাদ হিসেবে ৯ নং ওয়ার্ডের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির ৩৯ জন পদত্যাগ করেছেন। পর্যায়ক্রমে সব কয়টি কমিটি থেকে গনহারে পদত্যাগ করা হবে জানান তৃনমূল পর্যায়ের নেতারা। ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির বিগত দিনের ত্যাগী পরীক্ষিত নেতারা বর্তমান কমিটিতে স্থান না পেয়ে স.ম নুরুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে তাকে এবং এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব মাহবুবুর রহমান সুমনকে লাঞ্চিত করেছেন বলে জানা যায়। শুধু এনায়েতনগর ইউনিয়ন নয় ফতুল্লা থানার অন্তর্গত পাঁচটি ইউনিয়নে কমিটিতে যদি ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মীদের সঠিক মূল্যায়ন করা না হয় তাহলে রাজনীতির মাঠে কঠিন জবাব দেয়া হবে বলে জানান নেতাকর্মীরা। আর দুই ভায়রার রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত করে গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ড কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন তৃনমুলের সদস্যরা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা