আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | রাত ২:২১

আ’লীগকে টপকিয়েছে জাপা-বিএনপি

ডান্ডিবার্তা | ০৯ জুন, ২০২৩ | ১১:২২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট চলতি বছরের শেষের দিক জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এর আগেই নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিদলগুলো প্রস্ততি নিয়ে রেখেছে। নির্বাচনের আগেই জেলা ও মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে গুছিয়ে রেখেছে জাতীয় পার্টি (এরশাদ)। তাদের নারায়ণগঞ্জের দুইটি আসন এখনো দখলে রয়েছে। এবারো এই দুই আসনে তারাই নির্বাচন করতে যাচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখার নতুন আহবায়ক কমিটি দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামীলীগে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আগের কমিটি বহাল থাকায় এখনো পিছিয়ে রয়েছে নির্বাচনের প্রস্তুতিতে। গত বছরে ১৭ জুন জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন জাপা চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের। সম্মেলনের দেড় মাস পর ৩ আগষ্ট জাতীয় পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখার কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও মহাসচিব অ্যাড. মুজিবুল হক চুন্নু এমপির সুপারিশে সানাউল্লাহ সানুকে সভাপতি ও আবু নাঈম ইকবালকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৫১ সদস্য বিশিষ্ট নারায়গঞ্জ জেলা শাখার কমিটির অনুমোদন দেন। এছাড়া মোদাচ্ছেরুল হক দুলালকে সভাপতি ও মো: আফজাল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৭২ সদস্য বিশিষ্ট নারায়গঞ্জ মহানগর শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করা হয়েছে। জেলা ও মহানগর কমিটিতে বন্দর ও সোনারগাঁও উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যানদের রাখা হয়েছে। মুলত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি দুইটি আসনে ইউপি চেয়ারম্যানদের জোরালো ভূমিকা থাকে। ইতোমধ্যে বন্দর ও সোনারগাঁ উপজেলায় জাতীয় পার্টিতে শক্তিশালী করার জন্য বন্দর নবীগঞ্জে জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি কার্যালয় উদ্বোধন করা হয়েছে। সভা ও সমাবেশে মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে। এবারো বিএনপি ও আওয়ামীলীগকে চাপে রেখে সোনারগাঁ ও সদর-বন্দর আসন আবারো দখলে নিতে চায় জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টি নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সভাপতি মোদাচ্ছেরুল হক দুলাল জানান, জাতীয় পার্টি একটি সু-শৃঙ্খল দল। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে আমাদের রয়েছে। জেলা মহানগর শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোনারগাঁ ও বন্দরে এমপিদের উন্নয়নের কারণে জাতীয় পার্টি সব সময় শক্তিশালী দল হিসেবে গুছিয়ে রয়েছে। জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নারায়ণগঞ্জ শাখা কমিটি গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে আহ্বায়ক ও আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে সদস্যসচিব করে ৪১ সদস্যের অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এই কমিটি অনুমোদনের ৫ দিনের মাথায় ৪ যুগ্ম্-আহ্বায়কসহ ১৫ নেতা পদত্যাগের করেন। তারা হলেন- মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক. আব্দুস সবুর খান সেন্টু, হাজী নুরুদ্দিন, আতাউর রহমান মুকুল, আবুল কাউসার আশা, সদস্য অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন, আলমগীর হোসেন, শহিদুল ইসলাম রিপন, আমিনুল ইসলাম মিঠু, মনোয়ার হোসেন শোখন, ফারুক হোসেন, হাজী ফারুক হোসেন, হান্নান সরকার, আওলাদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা ও অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু। ১৫জনের পদত্যাগপত্র জমা ৬ মাসের মাথায় চলতি বছরের ২ এপ্রিল মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান মুকুল ও যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী নুরুদ্দীনের আবেদনের প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক পদ থেকে তাদেরকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দেয়া হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ অব্যাহতি দেওয়া হয়। চিঠিতে ব্যক্তিগত কারণে উক্ত পদে দায়িত্ব পালনে সম্ভব হচ্ছে না মর্মে উভয়ে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে আপনার পদত্যাগ পত্র গৃহীত হয়েছে। আতাউর রহমান মুকুল ও হাজী নুরুউদ্দিনকে অব্যাহতি প্রত্যাহারে চেষ্টা করেও কোন সুরাহা পায়নি। এই নিয়ে ও নারায়ণগঞ্জ সদর ও বন্দর থানা কমিটি নিয়ে ৫ম যুগ্ম আহবায়ক আতাউর রহমান মুকুলের মাতনৈক্য সৃষ্টি হয় যুগ্ম আহবায়ক ৩য় যুগ্ন আহবায়ক আব্দুস সবুর খান সেন্টু ও ৪র্থ যুগ্ম আহবায়ক হাজী নুরুউদ্দিনের। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালামের পরামর্শে বিদ্রোহী কমিটি ছেড়ে মূল ধারায় চলে যান সিনিয়র যুগ আহবায়ক অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন। গত ১৯ মে জেলা ও মহানগর বিএনপির জনসমাবেশে ও পরবর্তি শহরে বন্দরে ওয়ার্ড কমিটির সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানান, মহানগরের অধিনে শহর ও বন্দরের ১৮টি ওয়ার্ড সম্মেলন সম্পন্ন করা হয়েছে। বন্দর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের সম্মেলন জুনের শুরু করা হবে। এরই মধ্যে বন্দর উপজেলার আহবায়ক কমিটি করে দেয়া হয়েছে। বন্দরের ৫টি ইউনিয়নের পর সদর ও বন্দর থানার সম্মেলন আয়োজন করা হবে। সকলের সহযোগিতায় দ্রুত সময়ে মহানগর বিএনপি সম্মেলনের দিকে যাচ্ছি। অন্যদিকে ২০২১ সালে ১ জানুয়ারীতে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে আহ্বায়ক এবং মামুন মাহমুদকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত অনুমোদনে আরো সাত জনকে যুগ আহ্বায়ক ও ৩২ জনকে সদস্য করা হয়। এর এক বছরের মাথায় নাসিক নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় তৈমূর আলমকে জেলা আহবায়ক ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এরপর ১০ মাস ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবি দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর আবারো জেলা আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয়। সেখানে সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে আহ্বায়ক ও গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষনা করা হয়। এখানেও আরও সাতজনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। তারা হলেন, মামুন মাহমুদ, মনিরুল ইসলাম রবি, শহিদুল ইসলাম টিটু, মাসুকুল ইসলাম রাজীব, লুৎফর রহমান খোকা, মোশারফ হোসেন ও জুয়েল আহমেদ। দুই বছরে দুইটি জেলা বিএনপি আহ্বায়ক হওয়ায় পাঁচটি উপজেলা ও সাতটি থানা কমিটি গঠন করে রেখেছে। এদের মধ্যে বিরোধ হলেও যার যার পাল্লা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে গিয়াসউদ্দিন আহবায়ক হওয়া পর থেকে প্রতিটি থানা নতুন করে আহবায়ক কমিটি গঠন করেছে। তারা ইতিমধ্যে ওয়ার্ড সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিএনপি এগিয়ে গেলেও কমিটি বহাল থাকায় পিছিয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ। গত বছরের ২৩ অক্টোবরে আব্দুর হাইকে সভাপতি ও আবু হাসনাত শহীদ মোঃ বাদলকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। এরপর থেকে তাদের আবারো প্রকাশ্যে দ্বন্দ ও পৃথক পুর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রীয় নেতার কাছে জমা দেয়া হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও হাই ও বাদল একে অপরের বিরুদ্ধে আপত্তি তুলেছেন। এদিকে তাদের টপকিয়ে কেন্দ্রে আংশিক পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দিয়েছে মেয়র আইভী। তাদের তিনটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি তদন্ত করে একটি পুর্ণাঙ্গ কমিটি খসড়া কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে জমা পড়েছে। ২৩ জুন আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আগে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে আওয়ামীলীগের নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটি মেয়াদ শেষে হলেও এখনো বহাল রয়েছে। ২০১৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে এখনো এই কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা দায়িতে রয়েছেন। কেন্দ্রের চাপে সাড়ে ৯ বছরে এই সভাপতি ও সেক্রেটারী চলতি বছরের জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী মাসে ১৭টি ওয়ার্ড সম্মেলন করেছে। এতে বেশিভাগ ওয়ার্ড কমিটি নেতৃত্ব নির্বাচিত করতে পারেনি। ওয়ার্ড নেতা নিবর্চন ও সদর-বন্দর আসনের দলীয় প্রার্থীতা নিয়ে ইতিমধ্যে আনোয়ার হোসেন ও খোকন সাহার মধ্যে প্রকাশ্যে মতানৈক্য হয়েছে। জুলাই মাসে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটি সহ ৯টি জেলা সম্মেলনের অপেক্ষা থাকা কমিটিগুলো নিয়ে সিদ্ধান্তে যাবে সভানেত্রী শেখ হাসিনা। ওই সিদ্ধান্তে আনোয়ার ও খোকন সাহা বহাল থাকলে আবারো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের পিছিয়ে পড়তে যাচ্ছে বলে একাধিক নেতা মনে করছেন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা