আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | রাত ১২:২৩

শিমরাইল রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ড নিয়ে সংঘর্ষের আশঙ্কা

ডান্ডিবার্তা | ১২ জুন, ২০২৩ | ১০:২২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বহুল আলোচিত সাত খুনের ফাসির আসামী নূর হোসেনের পরিবার। নূর হোসেনের ভাই নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজি নুরুদ্দিন, ছোট মিয়া জর্জ ও তার ভাতিজা ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল নেমেছেন নয়া মিশনে। এ মিশনে তাদের অনুগত হয়ে পুতুলের মত প্রতীক হিসেবে কাজ করছে বহুল বিতর্কীত বিনএপি নেতা সালাউদ্দিন। এনিয়ে গত এক বছরে তিন তিনাবর কমিটি বদল হলেও তারা একক নিয়ন্ত্রন নিতে আবার দুই দিনের ঘোষণায় নির্বাচন দেন। আগামী মঙ্গলবার এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে নির্বাচনের কোনো রেজুলেশন নেই, নেই সাংগঠনিক বৈধতা. নেই ভোটার তালিকা, নেই নির্বাচন কমিটি। কারা এ নির্বাচনে ভোট দিবেন কারো তা জানা নেই। চাঁদাবাজদের এহেন কর্মকান্ডে রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডে মালিকরা কয়েকভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে চলছে চরম উত্তেজনা। এ উত্তেজনাপূর্ণ সময়ের মধ্যেই তিনবার কমিটি দেওয়া হয় রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডে। বিতর্কের কারণে বারবার বদল করা হয় কমিটি। এরই মধ্যে সপ্তাহ খানেক পূর্বে বিতর্কিত মো. সালাউদ্দিনকে সভাপতি, জসিমকে সাধারণ সম্পাদক এবং শফি উদ্দিন মোল্লাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। তবে তা বিগত এপ্রিল মাসে গঠন করা হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়। এ কমিটি নিয়ে আবারও বিতর্ক এবং উত্তেজনা বিরাজমান রয়েছে। এরই মধ্যে গত ১০ মে রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া, কাউন্সিলর নূর উদ্দিন, কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসিসহ রেন্ট এ কারের কয়েকজন মালিক সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় বসে কমিটি নিয়ে চলমান জটিলতা সমাধান করতে গেলে নুর হোসেনের ভাই চাচা নূর উদ্দিন ও ভাতিজা বাদলের পক্ষ থেকে আগামী মঙ্গলাবারের নির্বাচনের সিদ্ধান্ত আসে। তবে নির্বাচনের বিষয়ে মুজিবর রহমান অসম্মতি জানালে নূর উদ্দিন পক্ষপাতিত্ব করে তাকে রাজি করান। এদিকে থানায় বসে চাঁদাবাজির কমিটি নিয়ে দেনদরবারের ঘটনায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে পুলিশের কর্মকান্ড। বিতর্কিত হয়ে পড়ছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফা। যদিও তিনি বলছেন ভিন্ন কথা। এদিকে আগামী মঙ্গলবার নির্বাচনের ঘোষণায় রেন্ট-এ কার মালিকরা ক্ষুব্দ হয়ে উঠেছে। তাদের মতে শিমরাইল রেন্ট-এ কার মালিক সমিতির কোন গঠণতন্ত্র নেই। নেই কোন রেজিষ্ট্রেশন কিংবা অনুমতি। এমতাবস্থায় এখানে কিভাবে নির্বাচনের প্রসঙ্গ আসে। এরফলে মালিকদের এক পক্ষের মধ্যে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভ। যে কোন সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। রেন্ট-এ কারের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম জানান, আগামী মঙ্গলবার নির্বাচন ঘোষণা করেছে একচেটিয়াভাবে। আমাদের কোন মতামত কিংবা সিদ্ধান্ত নেয়নি, কথা বলার সুযোগ দেয়নি। আমরা সময় চেয়েছি, সময়ও দেয়নি। আমরা এ নির্বাচনে যাবোনা, অংশগ্রহণও করবোনা। গত শনিবার রাতে কাউন্সিলর নূর উদ্দিন এবং বাদল এ ঘোষণা দিয়েছেন। আমাদের নিয়ে কমিটির বিষয়ে মিমাংশা করে দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু নূর উদ্দিন মিয়া বলেন মিমাংশা নাই, নির্বাচন দেওয়া হবে। এখানে কোন রেজুলেশন নাই, রেজিষ্ট্রেশন নাই, ভোটার লিস্ট নাই, তারা একটা নির্বাচন দিয়ে দিলো। তিনি আরও বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি উপস্থিত ছিলেন। তবে মজিবর রহমান বলেছেন, এখানে নির্বাচন দেওয়া যাবেনা। নূর উদ্দিন মিয়া বুঝিয়েছেন তিনি পারমিশন এনে দিবেন। মঙ্গলবার নির্বাচন, কিন্তু আমরা এ নির্বাচন মানিনা। এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমানকে ফোন করা হলে তিনি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ব্যস্ত আছেন বলে জানিয়ে ফোন কেটে দেন। ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিয়া নূর উদ্দিন জানান, এ কমিটিতে যখন-তখন এসে কেউ সভাপতি হয়ে যায়, কেউ সাধারণ সম্পাদক হয়ে যায়। পরে কমিটি দুই মাসও টিকেনা। এ নিয়ে মালিকদের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি হয়ে দলাদলি শুরু হয়েছে। পরে থানায় বসে আমরা তাদেরকে সিদ্ধান্ত দিয়েছি আগামী মঙ্গলবার মালিকদের মৌখিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে কমিটি গঠন করে দেওয়া হবে। মালিকদের মৌখিক হ্যা/না এর ভিত্তিতে এ কমিটি গঠন করা হবে। জানা গেছে, শিমরাইল মোড়ে সরকারি জায়গা দখল করে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডে আড়াই শতাধিক ছোট-বড় গাড়ি রয়েছে। ছোট-বড় প্রত্যেক গাড়ির জন্য মাসিক হারে চাঁদা দিতে হয়। প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস মাসে ১ হাজার ৩০০ টাকা এবং হাইএস গাড়ি প্রতি ১ হাজার ৮০০ টাকা করে কমিটির নামে মাসিক চাঁদা আদায় হচ্ছে। পরিসংখ্যান মতে আড়াই শতাধিক গাড়ি থেকে মাসে ২ লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন খাত দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় এককালিন টাকা। অভিযোগ রয়েছে, সভাপতি সালাউদ্দিন কমিটির মতামত না নিয়ে একাই স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রন করতে চান নেপথ্যের শক্তি দিয়ে। এ নিয়ে কমিটিতে দেখা দেয় বিরোধ। ফলে বহিরাগত ১৫ থেকে ২০ জন সন্ত্রাসী নিয়ে স্ট্যান্ডে গিয়ে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রন নিতে চেষ্টা করে সালাউদ্দিন। খবর পেয়ে কমিটির অন্যান্য কর্মকর্তা ও সদস্যরা একত্র হয়ে সালাউদ্দিন বাহিনীকে ধাওয়া দেয়। স্ট্যান্ডে দেখা দেয় উত্তেজনা। খবর পেয়ে নুর হোসেনের ছোট ভাই জজ মিয়া লোকাজন নিয়ে মহড়া দেন। একপর্যায়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক হুমায়ূন কবির সঙ্গিয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। রেন্ট-এ-কারের মালিকরা জানান, শিমরাইল মোড়ে রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রন নিতে কয়েকদিন পরপরই কমিটি নাটক সাজানো হয়। এতে আমরা ব্যবসায়ীকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছি। আর চাঁদারভারে পড়েছি নুয়ে। চাঁদাবাজদের উন্নয়ন হলেও হয়না আমাদের উন্নয়ণ। এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা জানান, এ বিষয়ে থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, কাউন্সিলর নূর উদ্দিন, বাদ সহ রেন্ট-এ কারের লোকজন বসে নির্বাচনের এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ সিদ্ধান্তে পুলিশের কোন ভূমিকা নেই।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা