আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | রাত ২:২০

কমিটির জট খুলছে আ’লীগ-বিএনপির

ডান্ডিবার্তা | ১৪ জুন, ২০২৩ | ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট একদিকে টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় যেতে প্রস্তুত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে, সরকারের পদত্যাগসহ তত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন করতে চলমান আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে চাচ্ছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। আর এ লক্ষ্যে, জেলা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যায়ে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা কমিটি গুলোকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে দেশের অন্যতম বৃহত্ত এই দুই রাজনৈতিক দল। জানা গেছে, বিভিন্ন কারনে নারায়ণগঞ্জে আটকে ছিলো আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিভিন্ন কমিটি। দলীয় কোন্দলসহ নানা কারণে কমিটি পূর্ণগঠনে দেখা যায়নি কোন কার্যকারী পদক্ষেপ। তাই একদিকে যেমন দূর্বল হচ্ছিলো সাংগঠনিক কার্যক্রম, অন্যদিকে, হতাশ হয়ে পরছিলো তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি দেখা দিচ্ছে নতুন নেতৃত্বের অভাব। তাই, জাতীয় নির্বাচনের আগে দলকে শক্তিশালী করতে তৃণমূলকে ঢেলে সাজাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন, ওয়ার্ড থেকে শুরু করে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে চলছে নেতৃত্ব বাছাই। পাশাপাশি সদস্য নবায়ন এবং নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজও করছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, ভুল বোঝাবুঝি, নেতৃত্বের সংঘাত সবকিছু মিলিয়ে নির্বাচনের আগেই দলকে ঐক্যবদ্ধ করা দলটির অন্যতম লক্ষ্য। নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল (ভিপি বাদল) বলেন, ‘আমাদের বন্দর, সোনারগাঁ উপজেলাসহ আরও যেই কমিটি গুলো অবশিষ্ঠ রয়েছে সেগুলোর কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি আমাদের জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিও খুব শীঘ্রই ঘোষণা করা হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা (বিএনপি) তাদের মতো আন্দোলন করবে আমরা আমাদের মতো করে এগিয়ে যাবো। তারা যদি কোন বিশৃঙ্খলা করে তাহলে প্রতিহত করতে প্রশাসন রয়েছে। তারা যদি উল্টা-পাল্টা কিছু করে তাহলে তাদের ছাড় দেয়া হবে না।’ খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসেই শেষ হয় নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের আওতাধীন ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টির সম্মেলন। কোন কোন ওয়ার্ডে দুই যুগের বেশি সময় ধরে হয়নি কোন সম্মেলন। কিছু ওয়ার্ডে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হলেও বেশির ভাগ ওয়ার্ডে ঘোষণা করা হয়নি কমিটি। দায়িত্বপ্রাপ্তরা বলছে, সঠিক নেতৃত্ব বাছাই করতে এবং দক্ষ নেতৃত্বের সন্ধানে সময় লাগছে বেশি। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। খুব শীঘ্রই আমরা সবগুলো কমিটি গঠন করবো।’ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সবসময় প্রস্তত থাকে উল্লেখ করে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সামনে নির্বাচন নেত্রী প্রস্তত থাকতে বলেছেন। আমরা সেই লক্ষে নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ রাখছি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সমসবময় প্রস্তত থাকে। নির্বাচন আসলেই সকলে মিলে ঝাঁপিয়ে পরবে রাজপথে।’ যদিও অভিযোগ রয়েছে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের দুই কর্ণধার সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহার মতের অমিল থাকার কারণেই কমিটি গঠনে দেরি হচ্ছে। সম্প্রতি এই দুই নেতাকে কেন্দ্রে তলব করা হলেও অজানা কোন এক কারণে স্থগিত করা হয় সেই সভা। যেখানে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে বসে বিভিন্ন সাংগঠনিক বিষয়ে আলাপ করার কথা ছিলো তাদের। অন্যদিকে বিএনপির লক্ষ্য আন্দোলন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবির চূড়ান্ত আন্দোলনের আগেই দলটির জেলাসহ উপজেলা, ইউনিয়ন, থানা ও ওয়ার্ড কমিটি পূর্ণগঠনে চলছে তোড়জোড়। কার্যক্রমে গতি আনতে ‘ত্যাগী ও যোগ্যদের হাতে’ নেতৃত্বভার তুলে দিতে চান দলটির শীর্ষ নেতারা। নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায় করতে দল পুনর্গঠনের মাধ্যমে বিপর্যস্ত বিএনপি আবার ঘুরে দাঁড়াতে চায়। নির্বাচনে ‘অবিশ্বাস্য’ বিপর্যয়ের পর বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ে বিরাজ করছে হতাশা। এ অবস্থা থেকে দলকে বের করে আনতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকর্মীদের জামিনে মুক্ত করার উদ্যোগও নিয়েছে দলটির হাইকমান্ড। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, ‘আমরা (গিয়াস-খোকন) দায়িত্ব নেয়ার আগে থেকে কিছু কমিটি তৈরি করা ছিলো। আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর বাকি কমিটি গুলো গঠন করি। আমরা চেষ্টা করছি যোগ্য নেতাদের দ্বারা কমিটি গুলো গঠন করার। কমিটি গঠনের পর বিভিন্ন অণিয়মের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একটি কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দেখা যায় একাধীক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী থাকে। সবাইকে তো আর সভাপতি সাধারণ সম্পাদক করা যায়না, তাই মাঝে মাঝে কেউ অনিয়মের অভিযোগ তুলে থাকে।’ তিনি আরও জানান, ‘বিএনপির জন্মলগ্ন থেকেই নারায়ণগঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। ২০০১ সালে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনেই বিএনপি জয়লাভ করে। কারণ মানুষ বিএনপিকে ভালোবাসে। আমরা আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামীতে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষে প্রস্তুত। বিএনপি নেতারা বলেছেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলকে সুসংগঠিত করে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। তাই এবার তৃণমূলের মত নিয়েই নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন নতুন কমিটি করা হবে। ভোটের মাধ্যমেই এসব কমিটির নেতা নির্বাচিত করা হবে। এদিকে, যুগপৎ আন্দোলনের জন্য নারায়ণগঞ্জ বিএনপি প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা যে কর্মসূচিগুলো পালন করার সুযোগ পেয়েছি সেটা আমাদের শক্তির ৫০ ভাগও না। আমরা তো জনগণের পক্ষে কথা বলছি। আমাদের এখনোও ওরকম কোন কর্মসূচি দেয়া হয়নি যেটাতে আমরা আমদের সর্বচ্চো শক্তি দেখাবো।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যে সারা জেলায় আমাদের ১০টি ইউনিট কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে পেরেছি। জেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের আগে ৫টি ইউনিট কমিটি গঠন করা ছিলো, বাকিগুলো আমরা (গিয়াস-খোকন) দায়িত্ব নেয়ার পর করেছি।’ এ সরকারের পতন ঘটলেই কেবল দেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে বলে মনে করছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা। তাদের মতে, এই সরকারের পতন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, জনগণের ভোটের অধিকারের লক্ষ্যে আন্দোলন করা হবে। এসব দাবিতে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আরও বড় ধরনের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে কাজ চলছে বলেও জানান দলের নেতারা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা