আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | রাত ১২:২১

বিএনপির বিরুদ্ধে মাঠে রূপগঞ্জ আ’লীগ

ডান্ডিবার্তা | ০৮ জুলাই, ২০২৩ | ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট রূপগঞ্জ আসনটি নানা কারণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে রাজনীতিও বার বার দোলাচলে থাকে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভেতরে রয়েছে নানা গ্রুপ কোন্দল। তার মধ্যেও বর্তমান বিএনপি এখানে যে শক্ত অবস্থান গড়তে শুরু করেছে সেটাও উঠে এসেছে ক্ষমতাসীন দলের এক নেতার বক্তব্যে। ওই বক্তব্যের পর নড়েচড়ে বসেছে সকলেই। আসলেই কি বিএনপি শক্তিশালী নাকি আওয়ামী লীগের দুর্বলতা সেটা নিয়েও আছে নানা প্রশ্ন। দলের নেতাকর্মীরা জানান, রূপগঞ্জে বিএনপি বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। বিশেষ করে ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর জেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের পর থেকে চাঙ্গা এখানকার রাজনীতি। শুরুতে এতে সদস্য সচিব হিসেবে পদ পান গোলাম ফারুক খোকন যিনি ছিলেন জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তরুণ বয়সে মুখ্য দায়িত্ব পালন করা খোকন গত ১৭ জুন জেলা বিএনপির সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর গুরুত্ব বেড়ে যায় রূপগঞ্জের। তবে এসবের পেছনে রয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও এঁতিহ্যবাহী ভূইয়া পরিবারের উত্তরসূরী মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু যাকে সকলে দিপু ভূইয়া হিসেবে পরিচিত। তার নেতৃতে রূপগঞ্জের বিএনপির রাজনীতিতে গতি ফিরতে শুরু করেছে। শুধু রূপগঞ্জ উপজেলা না বরং নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি ও এর সহযোগি সংগঠনেও রয়েছে দিপু ভূইয়ার ইতিবাচক প্রভাব। তার নির্দেশনায় ইউনিট কমিটিগুলোও নিজেদের মেলে ধরতে শুরু করেছে। রূপগঞ্জ আসনে এমপি হলেন গোলাম দস্তগীর গাজী। একই সঙ্গে তিনি মন্ত্রী। এখন পর্যন্ত গাজীর অনুগামীরা শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে দিপু ভূইয়াকেই ভাবছেন। তাদের এও মতামত দিপু মাঠে থাকলে গাজীকে বেশ বেগ পেতে হবে। কিন্তু এ বিএনপির এ উথ্যানকে মেনে নিতে পারছে না স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজন। গত ৩ জুলাই রাতে মুড়াপাড়ায় খোকনের বাড়িতে ঘটে হামলার ঘটনা। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের শতাধিক লোকজন খোকনের বাড়িতে হামলা করে। ভাঙ্চুর করে একাধিক সিসি ক্যামেরা। বিষয়টি আবার স্বীকারো করেছেন মুড়াপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আওলাদ হোসেন গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাছের উপস্থিতিতে এক বৈঠকে বক্তব্য প্রদানকালে এই কথা বলেন আওলাদ হোসেন। ইতোমধ্যে ফেইসবুক লাইভের মাধ্যমে সেই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আওলাদ হোসেনকে বলতে শোনা যায়, “মুড়াপাড়ায় বিএনপির অবস্থা কেমন জিগ্বাইলে সবাই বলে একদম অবস্থা খারাপ। সত্য কি আসলেই এইটা? সত্যটা হইসে তারা তলে তলে শক্তিশালী কমিটি করার চেষ্টা করতাছে। আমরা এখন যেই সুযোগ সুবিধা দেই, অন্যদিকে বিএনপি আইলে ওই সুযোগ পাওয়া তো দূরের কথা আমাগো ঘরে ঘৃমাইতে কষ্ট হইবো। ঈদের আগ পর্যন্ত প্রত্যেক জায়গায় জায়গায় দোয়া মাহফিল করতে দিসি। অনেক এলাকায় ওরা প্রোগ্রাম করে কিন্ত আমাদের কাছে খবর আসে না। অনেকের বাড়ির কাছে প্রোগথাম হয় অনেকেই কিছু বলে না। আমাদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝির কারণে ওরা এই সুযোগ পাইসে। গত ৩ জুলাই রাতে মুড়াপাড়ায় খোকনের বাড়িতে কর্মসূচী প- করার বর্ণনা দিয়ে বলেন, “গত ৩ জুলাই শুনলাম খোকনের বাড়িতে মিলাদ মাহফিল হইসে, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সভাপতি আসে কেমনে এখানে? আমি চেয়ারম্যানরে বললাম এই ঘটনা, উনি কইলো তাড়াতাড়ি যাও। আমরা গিয়া দেখছি অনেক মানুষজন। আমি আগে মন্ত্রী মহোদয় ও পাঞ্সা ভাইরে ফোন দিলাম। উনি কইলো চেয়ারম্যানের সাথে কথা কইতে। আমরা যেন কাউরে মারধর বা ভাঙচুর না করি। আমরা সুন্দরভাবে ওরা যেন প্রোগ্রাম করতে না পারে সেই কাজটা করবো। আমরা গিয়া পাচ মিনিট সময় দিয়া বলছি, যারা আছেন তারা সবাই চইলা যাইবেন। আপনারা বিএনপি করবেন জামাত করবেন শিবির করবেন অন্য উপজেলায় গিয়া, আমাগো রূপথঞ্জে এসব চলবো না। পাঁচ মিনিটে যদি না যান তাইলে এমন ধাওয়া দিমু যে আপনারে ধইরা নিতে আরেকজন আনা লাগে। আমরা এমনে কালকের প্রোগ্রাম শেষ করছি।’ তবে শুধু ৩ জুলাই না বরং দিপুর পক্ষে থাকার কারণে মুড়াপাড়ায় রূপগঞ্জে গোলাম ফারুক খোকনের বাড়ির গেটের বিপরীতে জমিতে যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের কার্যালয় বা স্থাপনা নির্মাণ করতে আদালতের নিষেধাজ্ঞার পরেও সেখানে কাজ চলমান আছে। এ অবস্থায় সেখানে ৩১ জুলাই কার্যালয় উদ্বোধন করে রীতিমত খোকনকে কড়া ছেলে গাজী গোলাম মর্তুজা পাঙ্গা। গোলাম ফারুক খোকন বলেন, ২২ মে মুড়াপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আমার বাড়িতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা করে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এসময় সন্ত্রাসীরা কয়েক রাউন্ড ফাকা গুলিবর্ষণ করে এবং কয়েকটি ককটেল বিল্ফোরণ ঘটায়। এর পর আশেপাশে মহড়া দিচ্ছে। এখন সেখানে তারা যুবলীগের অফিস বানাচ্ছে । ২২ জুন আমাদের লোকজন বাধা দিলে প্রথমে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে আবার পুলিশের উপস্থিতিতে কাজ শুরু হয়। এদিকে ৪ আগস্ট বিকাল ৩ টায় উপজেলার ভুলতায় দিপুর অফিস ও তার মালিকানাধীন মার্কেটের বণিক সমিতির অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিএনপির দাবি, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা লীগ ও যুবমহিলা লীগের নেতাকর্মীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালে ভূইয়া দিপুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে রেখেছিল ছাত্রলীগের বাহিনী। সে সময়ে দিপু ভূইয়াকে উদ্ধার করতে গিয়ে মারধর ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতের শিকার হন ছাত্রদলের সালাউদ্দিন, রাকিব সহ আরো কয়েকজন। ওই বছরের ২৮ অক্টোবর দুপুরে গোলাকান্দাইলে দিপুর বাড়িতে আলোচনা সভার আয়োজন করে উপজেলা যুবদল। দুপুর উপজেলা যুবদলের গোলাম ফারুক খোকনের নেতৃত্বে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গোলাকান্দাইল এলাকায় একটি র‌্যালী বের করে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা, গোলাকান্দাইল, বলাই খাঁ, সাওঘাট এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে র‌্যালিটিকাচারীনাড়িতে এক সংক্ষিপ্ত সভার আয়োজন করলে উপজেলা ছাত্রলীগের ৪০-৪৫জন নেতাকর্মী হামলা চালায়। এক পর্যায়ে পুলিশের ভেতরে প্রবেশ করে লাঠিসোটা নিয়ে একের পর এক গাড়ি ভাঙচুর ও বাড়িতে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। ওই সময়ে দিপু বাইরে এসে নিজের দলের প্রথমে বাধা দেয়। কিন্তু দিপু তার পরেও নেতাকর্মীদের উদ্ধার করতে এলে দুই ক্যাডার দিপুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। তখন তাদের মধ্যে বাকবিতপ্তাও ঘটে। এর তিন বছর পর ২০১৮ সালে দিপু ভূঁইয়ার রূপগঞ্জের বাড়িতে বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনী ও ৩০ হাজার লোকের জন্য আয়োজিত মেজবানী অনুষ্ঠান পুলিশ বন্ধ করে দেয়। এর পর থেকে আর সেটা আয়োজন করা যায়নি। তখন তারেক রহমান। তিনি তখন বলেন, এ সরকার কতটা নির্যাতন করেছে যে প্রতি বছর দিপ্রু ভুইয়ার বাড়িতে মেজবান হয়, এবারো ৩০ হাজার লোকের আয়োজন ছিল হয়েছে। এটা দুঃখজনক। এতো নির্যাতন সহ্য করেও এখনো মাঠে আছেন তারা। এজন্য ধন্যবাদ জানাই।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা