আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | রাত ১০:১৪

নবীগঞ্জে রাজিব হত্যাকান্ডে ৩জন গ্রেফতার

ডান্ডিবার্তা | ০৮ জুলাই, ২০২৩ | ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ

বন্দর প্রতিনিধি বন্দরে বিচার শালিসি বৈঠকে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে রাজিব হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো বন্দর থানার নবীগঞ্জ কদমতলী এলাকার মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে মামলার ১নং এজাহারভূক্ত আসামী কানু মিয়া (৫০) নবীগঞ্জ রুপনগর এলাকার মোস্তফা কামালের ছেলে ৬নং এজাহারভূক্ত আসামী শিমুল (৩১) ও নবীগঞ্জ রেললাইন বেলাল হোসেনের ছেলে ১১নং এজাহারভূক্ত আসামী সৌরভ (১৯)। গ্রেপ্তারকৃতদের গতকাল শুক্রবার দুপুরে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করে মামলার তদন্তকারি কর্মকতা। একসময় যাদের গ্রুপে থেকে এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতেন তাদের হাতেই খুন নারায়ণগঞ্জের বন্দরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে রাজিব (৩০) নামে এক যুবক নিহতের অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে নবীগঞ্জের কামাল উদ্দিন মোড়ের ওয়ালটন শোরুমের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জ কাইতাখালি এলাকার তারা মিয়ার ছেলে। তার বন্ধু আলম মিয়ার দাবি, গত রোজায় রাতুল, সনেট ও রানা গ্রুপের সঙ্গে রাজিবের ঝামেলা হয়েছিল। এর জেরে প্রায় সময় তারা ক্ষিপ্ত থাকতো। কোরবানির ঈদের তিন দিন আগে একটি অটোরিকশা চুরি হয়। সেই চুরির দায় রাজিবের ওপর দেওয়া হয়। পরে সেই চুরির অভিযোগে বিচারের জন্য নবীগঞ্জ বাস¯ট্যান্ড নবানকুর ক্লাবে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা চাপ দেয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক সময়ে তারা একই প্রুপের লোক ছিল। বন্দরের নবীগঞ্জ কদমতলী, রূপনগর, কাইতাখালী, নোয়াদ্দাসহ বেশ কিছু এলাকা ছিল তাদের নিয়ন্ত্রণে। মাদক ব্যবসাসহ প্রভাব বিস্তার নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। গত বৃহস্পতিবার হত্যাকান্ডের ঘটনার রাতেই বন্দর থানার বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে উল্লেখিত আসামীদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এর আগে গত বৃহস্পতিবা সন্ধ্যায় ৬টা ৪০ মিনিটে বন্দর থানার নবীগঞ্জস্থ কামাল উদ্দিনের মোড়স্থ ওয়ালটন শোরুমের সামনে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে। এ ব্যাপারে নিহত রাজিবের স্ত্রী ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে গতকাল শুক্রবার সকালে ১১ জনের নাম উল্লেখ্য করে আরো ৮/১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। সন্ত্রাসী হামলায় নিহত রাজিবের মৃত দেহ মযনা তদন্তের পর শুক্রবার দুপুরে তার নিজবাড়ি কাইতাখালি এলাকায় আনা হলে সেখানে উৎসক লোকজন ভীড় জমায়। নিহত রাজিব বন্দর থানার ২৪নং ওয়ার্ডের কাইতাখালি এলাকার তারা মিয়ার ছেলে। হত্যা মামলার আসামীরা হলো বন্দর থানার নবীগঞ্জ কদমতলী এলাকার মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে কানু মিয়া (৫০) নবীগঞ্জ রুপনগর এলাকার মহিউদ্দিন ওরফে এমপি ছেলে রাতুল (২৫) নবীগঞ্জ রেললাইন এলাকার রাহুল (২০), নবীগঞ্জ কদমতলী এলাকার ইউসুফ আলী ছেলে সনেট (৩২) একই এলাকার নূর হোসেন মিয়ার ছেলে রানা (৩৯) রুপনগর এলাকার মোস্তফা কামালের ছেলে শিমুল (৩১) নবীগঞ্জ টি-হোসেন রোড এলাকার হাবিবুল্লাহ মিয়ার ছেলে হাসান ওরফে পাকিস্তানী হাসান (৩২) রুপনগর এলাকার আব্দুল বাতেন মিয়ার ছেলে শুভ (২৬) নবীগঞ্জ এলাকার রোমান ড্রাইভারে ছেলে সাব্বির (২০) নবীগঞ্জ উত্তর নোয়াদ্দা এলাকার জামাল মিয়ার ছেলে আমিন ওরফে রঙ্গিলা (২১) ও নবীগঞ্জ রেললাইন বেলাল হোসেনের ছেলে সৌরভ (১৯)। মামলার এজাহার সূত্রে জানাগেছে, মামলার ১নং এজাহারভূক্ত আসামী কানু মিয়া অটো ইজিবাইক চুরি ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলার উল্লেখিত সকল আসামীগন গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় মামলার বাদিনীর স্বামী রাজিবকে বন্দর থানার নবীগঞ্জ নবঙ্কুর মাঠে নিয়ে চোর সাবস্ত করে। বিচারের এক পর্যায়ে রাত পৌনে ৭টায় উল্লেখিত সকল আসামীগন বাদিনী স্বামীকে নবীগঞ্জ সিএনজি ¯ট্যান্ড সংলগ্ন অবস্থিত নবঙ্কুর সাংস্কৃতিক ক্লাবের পশ্চিম পাশে নবীগঞ্জ ঘাটগামী রাস্তায় নিয়া ১নং বিবাদী হুকুমে ২নং, ৩নং ও ৪নং আসামী হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো ছুরি দিয়ে বাদিনী স্বামী বুকের বাম পাশে, দুই হাতে, ডান দিকের পাজরে গুরুত্বর কাটা জখম করে। বাকি অন্যান্য আসামীরা আমার স্বামীকে ধরে রাখে। পরবর্তীতে বাদিনী স্বামী গুরুত্বর জখম প্রাপ্ত হয়ে নবঙ্কুর সাংস্কৃতিক ক্লাবে গিয়ে পরে যায়। পরে সেখানে উপস্থিত লোকজন বাদিনী স্বামীকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজিবকে মৃত ঘোষনা করে প্রত্যক্ষদর্শী নিহত রাজিবের বন্ধু আলম জানান, গত রোজার মাসে রাতুল, সনেট, রানা সহ তাদের গ্রুপের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল রাজিব ওরফে বিচ্চুর। এর জের ধরে প্রায় ওরা আমাদের উপর ক্ষিপ্ত থাকতো। কোরবানির ঈদের ৩ দিন আগে একটি অটোরিকশা চুরি হয়। এ অটো চুরির দায় রাজিবের উপর দেয় রাতুল ও তার বাহিনী। ওই অটোরিকশা চুরির বিচারের জন্য নবীগঞ্জ বাস¯ট্যান্ড নবানকুর ক্লাবে নিয়ে যায় রাজিবকে। বিচার শালিসে আসতে চাইনি আমরা। ওদের পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে ছিল রাতুল ও তার বাহিনীর লোকজন। বিচার শালিস বসার আগেই রাতুল, সনেট ও রানা সহ ১০/১২ সন্ত্রাসী রাজিবকে ধাওয়া করেছিল। রাজিব ধাওয়া খেয়ে কামাল উদ্দিনের মোড় আশ্রয় নেয়। এসময় রাতুল, সনেট ও রানা সহ ১০/১২ জন রাজিবকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে রাস্তায় ফেলে তারা পালিয়ে যায়। পরে রক্তাক্ত গুরুত্বর আহত অবস্থায় রাজিবকে উদ্ধার করে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু বলে ঘোষণা করেন। এলাকাবাসী জানান, নিহত রাজিব ওরফে বিচ্চু চোরের সঙ্গে চুরির ভাগভাটোয়ারা নিয়ে স্থানীয় সন্ত্রাসীর প্রধান রাতুল, সনেট ও রানা মিয়ার সঙ্গে পূর্ব থেকে শত্রুতা চলছিল। নিহত রাজিব ও তারা একই গ্রুপের লোক ছিল। এ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে নবীগঞ্জ কদমতলী, রূপনগর, কাইতাখালী, নোয়াদ্দা সহ আশপাশের এলাকায়। এসব এলাকায় তাদের নিয়ন্ত্রণে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসা, চুরি ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ। থানা পুলিশ ম্যানেজ করে এলাকায় রাম রাজত্ব কায়েম করেছে। সন্ত্রাসী সনেটের বিরুদ্ধে ৩টি হত্যাসহ ডজন মামলা আসামি। নিহত রাজিব ওরফে বিচ্চুর বিরুদ্ধে রয়েছে চুরি, ডাকাতি সহ একাধিক মামলা আসামি। এ ব্যাপারে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু বকর সিদ্দিক জানান, রাজিব হত্যাকান্ডের রাতেই বন্দরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১নং, ৬নং ও ১১নং এজাহারভূক্ত আসামীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে গতকাল শুক্রবার দুপুরে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছি। মামলার বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা