আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | রাত ১২:২২

নয়ন খুনে বাকরুদ্ধ পরিবার

ডান্ডিবার্তা | ০৯ জুলাই, ২০২৩ | ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট গত শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় পরিবারের সাথে দুপুরে খেয়ে বিকেলে বোনের সাথে বের হয় বাসা থেকে কিশোর নয়ন। বোনকে মামা বাড়ি এগিয়ে দিয়ে বন্ধুদের সাথে দেখা করতে যায় তিনি। সন্ধ্যায় পাড়ার এক গলিতে আড্ডা দিচ্ছিলেন, এ সময় মায়ের সাথে দেখা। মা বললো ‘বাড়ি চলো বাবা’ উত্তরে একমাত্র আদরের সন্তান নয়ন বললো ‘মা তুমি বাড়ি যাও আমি আইতাছি’। কিন্তু কে জানতো সেই আদরের কলিজার টুকরা লাশ হয়ে ফিরবে বাড়িতে।’ গত শুক্রবার ফতুল্লার গলাচিপা বোয়ালিয়া খালে রাতে নয়ন সিকদার নামে এক কিশোরকে নৃশংসভাবে এলোপাথারি কুপিয়ে আহত করে আরেকদল কিশোর। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নয়নকে মৃত ঘোষণা করে। তিন ভাই বোনের মধ্যে নয়ন সিকদার ছিলো দ্বিতীয়। ছোট বেলা থেকেই বাবা মায়ের আদরের পাশাপাশি বড় বোন জুথি’র আদরও ছিলো অন্যতম। একমাত্র ভাইয়ের কোন আবদারই বৃথা যেতে দিতো না। পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা নিন্ম মধ্যবিত্ত হলেও ভাইয়ের আবদার পূরণ করতেন তিনি। মৃত্যুর ২ ঘন্টা আগেও ভাইয়ের সাথে শেষ কথা গুলো হাসি মাখা মুখেই হয়েছিলো। আদরের ছোট ভাইয়ের এমন নৃশংস হত্যা বোন জুথিকে বাকরোধ করে দিয়েছে। যেনো কোন ভাবেই ভাইয়ের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না বোন জুথি। কথা হয় নিহত নয়নের বড় বোন মোসা. জুথির সাথে, তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ছোট বেলা থেকে খুব আদর করি ভাইডারে। কে জানতো এমন দিন দেহন লাগবো আমাগো। কতযে না করতাম তবুও খারাপ পোলাপান গুলা আমার ভাইরে বাসা থেইকা ডাইকা নিয়া যাইতো। নেশা-পানি খাইতো আমার ভাইডারেও লগে নিয়া যাইতো। আমার ভাইডা খুব ভালো ছিলো। ওদের কয়েকটা বন্ধু ছিলো জয়, নাজমুল ও ইয়াসিনসহ আরও কয়েকজন বন্ধু আছে যারা, ওরে ডেকে নিয়ে যাইতো। ওরা ভাইরে ঠিক মতো কাজ করতে দিতো না, বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে নিয়া জাইতো। মাঝে মাঝে রাতে বাসায় আইতে দিতো না। আম্মা যাইয়া নিয়া আসতো। এমনে যে আমার ভাইডারে মারবো আমি ভাবতেও পারি নাই। আমি এই খুনের বিচার চাই। যারা মারছে তাদের ফাঁসি চাই। নয়ন সিকদার কিশোর হলেও পরিবারের প্রতি তার ছিলো অন্য রকম একটা ভালোবাসার বন্ধন। মাকে যেমন ভালোবাসতেন তেমনি আদর করতেন ছোট বোন ফারিয়াকেও। ভাইয়ের সেই ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হলো ছোট বোন ফারিয়া। নয়নের বাবা শহরের টানবাজার এলাকায় মিনা বাজার মার্টেকের নৈশপ্রহরীর কাজ করেন। বাবা-বড় বোন ও নিহত নয়নের পরিশ্রমের টাকা নিয়ে চলতো তাদের পরিবার। মায়ের স্বপ্ন ছিলো একদিন এই ছেলেই পরিবারের হাল ধরবে। কিন্তু মায়ের সেই স্বপ্ন এক নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো। নিহত নয়নের মা নাসিমা বেগম অভিযোগ করে জানান, কয়েকদিন আগে নয়নের বন্ধু জয়ে’র সামনে আমি নয়নকে বলেছিলাম এই ছেলের সাথে মিশবে না। সেদিন ওই জয় আমাকে থ্রেড করে বলেছিলো ‘তোর পোলারে দেখিস কি করি’। ওরা আমার বাজানডারে আমার কাছ থেইকা কাইড়া নিলো। আমার ছেলেডা এট্টুককাল (ছোটবেলা) থেকে কাজ করে। আমাগো দেখাশোনা করতো। এই পোলারে নিয়া মেলা কষ্ট করছি, আমার পোলা ভাত মাইখা খাইতে পারতো না। আমি না খাইলে আমার পোলায় ভাত খাইতো না। বলতো ‘মা তুমি দুগা ভাত খাও’। কে আমারে এখন কইবো ‘মা তুমি ভাত না খাইলে আমি খামু না’। আমারে তো এখন আরও কেউ মা কইয়া ডাকবো না। আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই। আমি ওগো ফাঁসি চাই। আমার বুক যারা খালি করছে আমি ওদের বিচার চাই।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা