আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | রাত ৮:১৬

না’গঞ্জে নৌকা পেতে অনড় আ’লীগ

ডান্ডিবার্তা | ০৯ জুলাই, ২০২৩ | ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট আগামী জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগ মুহুর্তে নারায়ণগঞ্জ ২৫ বছর পর নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁর উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন হয়েছে। কিন্তু এই কমিটি নিয়ে রিতিমত ঝড় বইছে। কেননা অনুমোদিত কমিটিতে প্রস্তাবিত কমিটি তালিকায় নাম দেয়া ১৮ জনকে বাদ দেয়া হয়েছে। তবে মজার বিষয় হলো প্রস্তাবিত কমিটির অনুমোদনের আগেই পরিচিত সভা করেন সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। যা রাজনীতিতে ইতিহাস হয়ে থাকবে। স্বাভাবিক ভাবে যে কোন কমিটি অনুমোদনের পর পরিচিতি সভা হয়। জেলা আওয়ামী লীগের দুই কর্ণধারের মন্তব্য তারা অনেক যাচাই বাছাই করে কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন। অপর দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের দাবী কমিটিতে অনিয়ম করা হয়েছে। এই ১৮ জনকে বাদ দেয়া নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ স্থানীয় দলীয় রাজনীতিতে প্রশংসিত হচ্ছেন। সেই সাথে তাদের সাহসিক সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন নেতা কর্মীরা। এদিকে সকল আলোচনা সমালোচনার অবশান কাটিয়ে অবশেষে বিভক্ত সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যের পূর্নাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, সহ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সর্বশেষ প্রস্তাবিত কমিটি থেকে ১৮ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগ ১৮ জনকে নতুন করে কমিটির বিভিন্ন পদে পদায়ন করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো সোনারগাঁয়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটলো। দেশের বিভিন্ন স্থানে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটিকেই জেলা আওয়ামী লীগ অনুমোদন দেন। নারায়ণগঞ্জের অন্যান্য উপজেলা কমিটির ক্ষেত্রে এমন ঘটনাই ঘটেছে। ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটলো শুধু সোনারগাঁয়ে। রাজনৈতিক মহলে আলোচনা হচ্ছে প্রস্তাবিত কমিটির আবার কিসের পরিচিত সভা। কমিটির চুড়ান্ত অনুমোদনের আগে দেশের কোথাও এ ধরনের পরিচিত সভা কিংবা মত বিনিময় সভা করার দৃষ্টান্ত নেই। যদি চুড়ান্ত অনুমোদিত কমিটি থেকে কেউ বাদ পড়ে তখন যাকে বিভিন্ন পদে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হলো সামাজিকভাবে কিভাবে তারা সম্মান নিয়ে বাঁচবে। তারাই বা এখন দলীয় ভাবে কী পরিচয় দিবে। সোনারগাঁ উপজেলার প্রস্তুাবিত কমিটিতে বাদ পড়া নাম ও সোনারগাঁ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি মোবারক হোসেনের সন্তান এরফান হোসেন দীপকে মূল্যায়ন করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবীদ দীপক কুমার বনিক দিপুকে বাদ দেওয়া হয়েছিল জেলা আওয়ামী লীগ তাদের মূল্যায়ন করেছে। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ মহাগর আওয়ামী লীগ জেলা আওয়ামী লীগ থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। মহানগর আওয়ামী লীগ এখনো পর্যন্ত ওয়ার্ড কমিটি ঘোষনা করতে পারে নাই। তার মাঝে ৪ মাস আগে ১৭টি ওয়ার্ডের সম্মেলন করলেও এখনো পর্যন্ত সেগুলোর কমিটি ঘোষনা করা হয় নাই। অভিযোগ রয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহার মাঝে বনিবনা হচ্ছেনা বলে আটকে রয়েছে। সম্মেলন হওয়া কমিটি গুলো কবে নাগাত ঘোষনা হবে তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছে পদ প্রত্যাশী নেতারা। সেই সাথে তারা হতাশ হয়ে রয়েছে। তাছাড়া বিগত সময়ে এরক ঘটনা আগেস কখনো ঘটে নাই। স্বাভাবিক ভাবে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সম্মেলনের দিনই কমিটি ঘোষনা করা হয়ে থাকে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে সম্প্রতি আওয়ামী লীগ তাদের সহযোগি সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগে সম্মেলন হওয়ার পরেও কমিটি আটকে থাকে এমন দৃষ্টান্ত দেখা যাচ্ছে। এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জের ১০টি ওয়ার্ডের সম্মেলন এখনো আটকে রয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগের। কবে নাগাত হবে তাও জানেন শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। এই দিক দিয়ে বিতর্কের উর্ধ্বে থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সেক্রেটারির সাহসিকতার সিদ্ধান্তে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে প্রশংসায় ভাসছে। কেননা নানা আলোচনা সমালোচনার কারনে এখান প্রস্তাবিত কমিটি থেকে ১৮ জনকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করেছে জেলার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। এই দিক দিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ পিছিয়ে রয়েছে। তারা এখনো পর্যন্ত ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে। দলীয় সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে আওয়ামী লীগের নেতারা নৌকার প্রার্থী দেয়ার দাবী জানিয়ে আসছেন। বিশেষ করে ২০১৮ সনের একাদশ নির্বাচনের পর তাদের এই দাবী জোরালো হতে থাকে। কেননা নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মাঝে সদর-বন্দর আসনটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় তারা এখানে আগামী নির্বাচনে ছাড় দিতে চান না। কেননা এই আসনে দীর্ঘ দেড়যুগের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী নেই। ২০০৮ সন থেকে সদর-বন্দর আসনটি জাতীয় পার্টির দখলে রয়েছে। তবে এবার জাতীয় পার্টির সাথে আওয়ামী লীগের মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টি না থাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা নৌকার প্রার্থী নিয়ে আশার আলো দেখছেন। ২০০৮ সনের নির্বাচনে সদর-বন্দর আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে নাসিম ওসমান তখন সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। পরে তিনি ২০১৪ সনে মারা গেলে তার আসন থেকে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন নিয়ে এই আসনের উপ নির্বাচনে সেলিম ওসমান এমপি হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১৮ সনেও তিনি এখান থেকে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। আর এতে করে অভিযোগ রয়েছে এখানে নৌকার এমপি না থাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় নেতারা অবহেলিত হয়ে রয়েছে। তাই গত বছরের ২০২২ সনের নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে নৌকার দাবী তুলেছেন। তখন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নিকট দাবী রেখে বলেছেন, আমরা নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে নৌকা চাই। বিশেষ করে শহর বন্দর এবং সোনারগাঁ এলাকায় নৌকার প্রার্থী দেয়ার দাবী জানান তিনি। একই সাথে দলের নেতা কর্মীরা যেন অবহেলিত না থাকেন এজন্য আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য এড.আনিসুর রহমান দিপু সদর-বন্দর আসনে নৌকার দাবী জানিয়ে আসছেন। সেই সাথে আগামী নির্বাচনে তাদেরকে যেন এখানে প্রার্থী দেয়া না হয় এই কথা বলে আসছেন বিভিন্ন সভায়। কিন্তু ২০১৮ সনে নৌকার মনোনয়ন চেয়ে আলোচনায় এসেছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাওয়া জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সদর-বন্দর আসনের বর্তমান সাংসদ সেলিম ওসমানের পছন্দ হয় নাই। কেননা তখন সাংসদ সেলিম ওসমান ভিপি বাদলকে ল্যাতা বলে মন্তব্য করেছেন। সেই সাথে তাকে মতলবে পাঠিয়ে দেয়ার কথা বলেছেন একটি সভায়। যদিও তিনি তা নিরব সহ্য করে গেছেন। তবে এবারও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসানাত মো. শহিদ বাদল ওরফে ভিপি বাদল সদর-বন্দর আসনে নৌকার প্রার্থী দেয়ার জন্য দাবী তুলেছেন। তার এই দাবী আদায়ের জন্য নেতৃবৃন্দদেরকেও ঐক্যবদ্ধ করছেন। এছাড়া জানা যায়, একই ভাবে সোনারগাঁ আসনটিও জাতীয় পার্টির দখল মুক্ত করার জন্য নৌকার প্রার্থী দেয়ার দাবী তুলেছেন জেলা আওয়ামী লীগের এই দুই শীর্ষ নেতা। কেননা তাদের সাহসী ভূমিকায় তৃনমূল নেতা কর্মীরা এখন নৌকার প্রার্থী পাওয়ার আশা দেখছেন। সোনারগাঁ আসন এক দশক ধরে জাতীয় পাটির দখলে রয়েছে। ২০১৪ সনে টানা দুই বারের এমপি নির্বাচিত জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকায় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তাই আগামী জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সোনারগাঁ এবং নারায়ণগঞ্জ আসনে যেন অবশ্যই নৌকার প্রার্থী দেয়া হয় দলীয় সভানেত্রীর কাছে তারা সেই দাবী তুলেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি প্রসঙ্গে বলেন, এখানে যাচাই বাছাই করে তৃনমমূল থেকে উঠে আসা ত্যাগীদের মূল্যায়ন করেছি। সেই সাথে প্রস্তাবিত কমিটির তালিকায় যাদের বিরুদ্ধে ভূমিদস্যূ সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে আমরা তা যাচাই করে তাদের নাম বাদ দিয়েছি। এছাড়া আমরা দলীয় সভা নেত্রীর কাছে আমাদের দীর্ঘ দিনের চাওয়া নারায়গঞ্জের ৫টি আসনে নৌকার প্রার্থী চাই। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি নবীন প্রবীন মিলিয়ে শক্তিশালী কমিটি দেয়ার। যাতে করে আগামী নির্বাচনে এখানে নৌকার প্রার্থীকে জয়ী করে নিয়ে আসতে পারে। এছাড়া আমরা নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে নৌকা চাই। বিশেষ করে সোনারগাঁ এবং সদর-বন্দর আসনে যেন নৌকা প্রার্থী দেয়া হয়। তাছাড়া আমরা মনোনয়ন চাইলেই আমাদের নিয়ে কথা বলে। কিন্তু জাতীয় পার্টির এমপিদের নিয়ে কেউ কিছু বলে না। তবে নৌকার প্রার্থীর দাবীতে অনড়। নেত্রী আমাদের দাবী মূল্যায়ন করবে তা প্রত্যাশা করি।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা