আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | রাত ৮:০৪

না’গঞ্জের উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা

ডান্ডিবার্তা | ১০ জুলাই, ২০২৩ | ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে যানজট ও পরিবহন খাতের বিশৃঙ্খলা নারায়ণগঞ্জ শহরের নিত্যসঙ্গী। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের জন্য একটি বিস্তৃত পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই পরিকল্পনায় সড়ক পথ, নৌপথ ও মেট্টোরেল থাকছে। শীতলক্ষ্যা নদীতীরে গড়ে ওঠা নারায়ণগঞ্জ রাজধানী ঢাকার অন্যতম প্রবেশদ্বার হিসেবেও পরিচিত। শত শত বছর ধরে ব্যবসা-বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। কয়েক দশক ধরে হয়ে উঠেছে শিল্পসমৃদ্ধ ও ঘনবসতিপূর্ণ জেলা। এই শহরের সমস্যা গুলোর মধ্যে অন্যতম পরিবহন খাতের বিশৃঙ্খলা। ফলে যানজটে ভোগান্তিতে পড়ছে মানুষ। এতে ব্যাহত হচ্ছে অর্থনৈতিক কার্যক্রম। সমস্যাটির সমাধানে মহাপরিকল্পনা তৈরির কাজটি করছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। প্রকল্পের নাম দিয়েছে ‘প্রিপারেশন অব কম্প্রিহেনসিভ ট্রান্সপোর্ট মাস্টারপ্ল্যান ফর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন’। মহাপরিকল্পনা তৈরির জন্য এরই মধ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে নিযুক্ত করেছে ডিটিসিএ। ডিটিসিএর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ মহাপরিকল্পনার মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ শহরের জন্য একটি উন্নত ও আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং পরিবহন-সম্পর্কিত উন্নয়নে গুরুত্ব দেয়া হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে গাবতলী থেকে নিউমার্কেট-গুলিস্তান-কমলাপুর-সাইনবোর্ড হয়ে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত একটি মেট্রোরেল (এমআরটি লাইন-২) লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। একই সময়ের মধ্যে কমলাপুর থেকে সাইনবোর্ড হয়ে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত আরেকটি মেট্রোরেল (এমআরটি লাইন-৪) লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির। মহাপরিকল্পনায় ঢাকার এসব মেট্রোরেল সম্প্রসারণের বিষয়গুলোয় গুরুত্ব দেয়ার কথা জানিয়েছেন ডিটিসিএর কর্মকর্তারা। মেট্রোরেল ছাড়াও নারায়ণগঞ্জে মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট হাব, এক্সপ্রেসওয়ে, রিংরোড নির্মাণের জন্য সমীক্ষার কথাও জানিয়েছেন তারা। এর মধ্যে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন, নারায়ণগঞ্জে মেট্রোরেল ও মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট হাব নির্মাণের জন্য প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও ধারণাগত নকশা প্রণয়নের কাজ পেয়েছে এসিই কনসালট্যান্টস লিমিটেড। দরপত্র অনুযায়ী ১৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকায় কাজটি পেয়েছে এসিই কনসালট্যান্টস। ডিটিসিএ বলছে, ২০১৫ সালে ঢাকা ও আশপাশ এলাকাগুলোর জন্য প্রণীত আরএসটিপিতে ২১টি ট্রান্সপোর্টেশন হাবের সুপারিশ রয়েছে। এর মধ্যে একটি ট্রান্সপোর্ট হাব নারায়ণগঞ্জে করার প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু আরএসটিপি প্রণয়নের সময় নারায়ণগঞ্জ শহরের ট্রাফিক সার্ভে ডাটাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়নি। ফলে ট্রাফিক চাহিদা নিরূপণ করা যাচ্ছে না। ট্রাফিক চাহিদার ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন প্রকল্প ও উদ্যোগের জন্য আলাদাভাবে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা কার্য সম্পাদন সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ। ভবিষ্যতে নারায়ণগঞ্জ শহরের মধ্য দিয়ে মিডল রিংরোড, হাইস্পিড রোড ইত্যাদি মেগা প্রকল্পের পরিকল্পনাও রয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সুষ্ঠু সমন্বয়ের প্রয়োজন হবে। জনসংখ্যা ও আয়তনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নারায়ণগঞ্জ নগরীর জন্য একটি বিস্তৃত পরিবহন পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হলে এতে উল্লিখিত সব বিষয় সমন্বিতভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রিপারেশন অব কম্প্রিহেনসিভ ট্রান্সপোর্ট মাস্টারপ্ল্যান ফর নারায়ণগঞ্জসিটি করপোরেশন প্রকল্পের পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা নারায়ণগঞ্জে মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য একটি প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও ধারণাগত নকশা প্রণয়ন করে দেব। এ প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য নারায়ণগঞ্জ জন্য একটি পরিবহন মহাপরিকল্পনা তৈরি করা। ট্রাফিক চাহিদার ওপর ভিত্তি করে ম্যাস ট্রানজিটের প্রস্তাবিত নেটওয়ার্কের জন্য প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও ধারণাগত নকশা প্রণয়ন করা। ড্যাপ ও আরএসটিপিতে নারায়ণগঞ্জে একটি মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট হাব করার সুপারিশ রয়েছে। এটারও প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও ধারণাগত নকশা প্রণয়ন করা হবে।’ মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ দেশের গুরুত্বপূর্ণ সিটি করপোরেশন। এর জন্য যদি এখনই একটি পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা না হয়, তাহলে অপরিকল্পিত নগরায়ণের ঝুঁকি আরো বেড়ে যাবে।’ এছাড়া ইনার রিং রোডের সাথে যুক্ত হবে নারায়ণগঞ্জ শহর। রিং রোডে বিরতিহীন চলাচল নিশ্চিত করতে চাষাঢ়ায় নির্মাণ করা হবে ফ্লাইওভার আর পঞ্চবটি ও হাজীগঞ্জে ওভারপাস। ঢাকার যানজট কমিয়ে গাড়ির চলাচলে গতি বাড়াবে ইনার রিং রোডের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আরএসটিপি অনুযায়ী, ঢাকার ইনার রিং রোড রাজধানীর আবদুল্লাহপুর থেকে শুরু হবে। এটি ধউর, বিরুলিয়া, গাবতলী, বাবুবাজার, কদমতলী, পোস্তগোলা, চাষাঢ়া, হাজীগঞ্জ, ডেমরা ঘুরে তেরোমুখ হয়ে আবার আবদুল্লাহপুরে যুক্ত হবে। ৮৮ দশমিক ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি ইস্টার্ন বাইপাস (পূর্বাংশ) ও ওয়েস্টার্ন এরিয়া (পশ্চিমাংশ)- এ দুই ভাগে বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। পূর্বাংশে ডেমরা থেকে পূর্বাচল সড়ক ও তেরোমুখ হয়ে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার এলাকায় বাঁধ নির্মাণে পাউবোকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বাঁধটির উপর সড়ক নির্মাণ করবে সওজ। তবে এখনও পাউবো তাদের অংশের কাজ শুরুই করেনি। অপরদিকে ইনার রিং রোডের পশ্চিমাংশে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ১২ হাজার কোটি টাকার সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়। রুটটি হল- আবদুল্লাহপুর, ধউর, বিরুলিয়া, গাবতলী, বাবুবাজার, কদমতলী, তেঘরিয়া, ফতুল্লা, চাষাঢ়া, হাজীগঞ্জ, শিমরাইল হয়ে ডেমরা পর্যন্ত। সড়কটি নির্মাণে সওজ প্রস্তাবিত উন্নয়ন প্রকল্প পরিকল্পনা (পিডিপিপি) জমা দিয়েছে। জানা গেছে, আবদুল্লাহপুর থেকে ধউর পর্যন্ত চার কিলোমিটার ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের আওতায় নির্মাণ করা হবে। ধউর থেকে গাবতলী পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার চার লেনের সড়ক নির্মাণে ডিপিপি তৈরি করছে সওজ। এতে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হচ্ছে। অপরদিকে পোস্তগোলা থেকে চাষাঢ়া পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে আরেকটি প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চাষাঢ়ায় ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। আর পঞ্চবটি ও হাজীগঞ্জে ওভারপাস নির্মাণ করা হবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা