
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়লেও কেন্দ্রের দিকে এখনো তাকিয়ে আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব, ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা, আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতা আর নেতায় নেতায় বিভেদে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের ভরাডুবির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। এবিষয়ে নানাবিধ ব্যাখা যুক্তি হিসেবে দাঁড় করাচ্ছেন রাজনৈতিক বোদ্ধারা। তারা বলছেন, আওয়ামীলীগের সভানেত্রীর উপর অতিমাত্রায় নির্ভরতার কারণেই ভরাডুবি হতে পারে নারায়ণগঞ্জের আসনগুলোতে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্থানীয় নির্বাচনের চেয়ে একেবারেই আলাদা। এক্ষেত্রে জনগণের সাথে প্রার্থীদের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা থাকতে হয়। কিন্তু দ্বন্দ্ব-বিভেদ আর বলয়ের কারণে এই কাজটি থেকে একেবারেই দূরে আওয়ামীলীগ নেতারা। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের একবছরেও এখনো দুই নেতার কমিটিতেই স্থবির হয়ে রয়েছে। দ্বন্দ্ব-বিভেদ আর প্রভাব বিস্তারের কারণে অনেক ডাক সাইটের নেতাদের বাদ দিয়ে জমা দেয়া প্রস্তাবিত কমিটিও এখনোও পূর্ণাঙ্গ হয়নি। নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের দৈন্যদশা আরো বেশি। দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় পড়েও এখনো ওয়ার্ড কমিটিগুলোর সুরাহা করতে পারেনি মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদক এমনকি সিদ্ধিরগঞ্জের ১০টি ওয়ার্ডের তো দৈন্যদশা চলছে আওয়ামীলীগের। বর্তমান সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের উপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতার দরুণ সিদ্ধিরগঞ্জে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম শুন্যের কোঠায়। যার দরুণ পদধারী নেতার তকমা নিয়ে জনগণের কাছে যেতে পারছেন কর্মীরা। সিদ্ধিরগঞ্জ আর ফতুল্লায় দীর্ঘমেয়াদী জলাবদ্ধতা এই আসনে সম্ভাব্য আওয়ামীলীগ প্রার্থীর জন্য মরার উপর খাড়ার ঘা হিসেবেই কাজ করবে বলে মত রাজনৈতিক বোদ্ধাদের। ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনে শামীম ওসমান জনগণের দ্বারস্থ হলেও অন্যান্য সম্ভাব্য প্রার্থীরাও কেন্দ্রের ভরসায় এখনো চেয়ার থেকে উঠে বসেননি। সদর-বন্দর আসনে আওয়ামীলীগের অবস্থা আরো করুণ। দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টির দখলে থাকা এই আসন আওয়ামীলীগ নেতারা পুনরুদ্ধার করতে বললেও এখানকার বেশিরভাগ আওয়ামীলীগ নেতা জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ঘেঁষা। যার দরুণ আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থী থাকলেও এখানে কয়েকধাপে বিভক্ত আওয়ামীলীগ। আওয়ামীলীগ নেতারাই খোদ আওয়ামীলীগে অনেক নেতার কাজ করা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। বিএনপি এখনো তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারটি নির্দিষ্ট করে না বললেও তাদের সক্রিয়তার কাছে সিকেভাগোও নেই আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তাই জাতীয় নির্বাচনে সদর-বন্দর আসনে আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থী চূড়ান্ত হলেও তার নির্বাচনী ভবিষ্যত কতখানি সাফল্যমত হবে এটি নিয়ে বড় ধরণের সংশয় রয়েছে খোদ আওয়ামীলীগেও। সম্প্রতি মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং জাতীয় পরিষদের সদস্য এড. আনিসুর রহমান দিপু নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আগ্রহ প্রকাশ করলে অন্যান্য আওয়ামীলীগ নেতারা তাতে নড়েচড়ে বসেননি। এমনকি গতবারের নির্বাচনের আওয়ামীলীগের প্রার্থীতা নিয়ে সরব জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আরজু রহমান ভূঁইয়া ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান এবার নির্বাচন নিয়ে একেবারেই বিমুখ। দলীয় দ্বন্দ্ব আর মনরক্ষার মিশনে আরজু রহমান ভূঁইয়ার নাম তো কেন্দ্রে জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবিত কমিটিতে নাম প্রস্তাবই করা হয়নি। এমনভাবে বাদ গেছেন, গত কমিটির সহ-সভাপতি ও সাবেক পিপি আসাদুজ্জামান আসাদ এবং সদস্য শামসুজ্জমান ভাসানি। সূত্র বলছে, সোনারগাঁ আসনেও টানা দুই মেয়াদে জাতীয় পার্টির দখলে। এখানাকার আওয়ামীলীগ নেতারা মনোনয়ন প্রশ্নে এবং নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে চার-পাঁচভাগে বিভক্ত। সম্প্রতি সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত কমিটি নিয়েও কাঁদা ছোঁড়াছুঁড়িতে ব্যস্ত স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা। এখানেও জাতীয় পার্টির সাথে আওয়ামীলীগের একটি বড় অংশ সখ্যতা বজায় রাখেন বলে অভিযোগ খোদ আওয়ামীলীগ নেতাদের। বালু ব্যবসা, ঝুট ব্যবসাসহ নানা আর্থিক সুবিধার কারণে আওয়ামীলীগ নেতারা নিজেদের দলের চেয়ে জাতীয় পার্টিও নেতাদের উপর ভরসা বেশি পান বলে জানিয়েছে সূত্র। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক কায়সার হাসনাতের প্রস্তাবিত সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে মাদকসেবী, খুনের আসামীসহ অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে আসার অভিযোগ করেছেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম। এছাড়া ডা.আবু জাফর চৌধুরী বিরুসহ আরো কয়েকটিভাগে আওয়ামীলীগ বিভক্ত হওয়ায় এখানে আওয়ামীলীগের প্রার্থী দিলেও খুব বেশি সুবিধা না করতে পারার সম্ভাবনাই দেখছে রাজনৈতিক বোদ্ধারা। কার্যক্রম নিয়মিত চালু রাখায় সাবেক সংসদ সদস্য মোবারক হোসেনের ছেলে এরফান হোসেন দীপের নাম তো প্রস্তাবই করা হয়নি সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে। রূপগঞ্জ আসনে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর যতখানি সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন ততটাই এখন স্থবির। বিশেষ করে রূপগঞ্জ আওয়ামীলীগে নিজের প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে আওয়ামীলীগ নেতারা এখানে খন্ডবিখন্ড। রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পদ নিজের দখলে রাখলেও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের একটি বড় অংশ বর্তমান সংসদ সদস্যের উপর নাখোশ। এছাড়া তারাবো ও কাঞ্চন পৌরসভাতে প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে বড় ধরণের দুরত্ব তৈরি হয়েছে এখানে। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া বিএনপির মূল দলসহ অঙ্গসংগঠনের তার বিশাল কর্মীবাহিনীকে পদায়ন করতে পারায় বিএনপি-আওয়ামীলীগ মুখোমুখি লড়াই হলে আওয়ামীলীগ প্রার্থী এখানে বড় ধরণের ব্যর্থতা নিয়ে ফিরতে হতে পারে। তাছাড়া ভূমি নিয়ে দ্বন্দ্ব, কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব আর প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে একে অন্যকে তুলোধুনোর যুদ্ধ চলায় রূপগঞ্জ আসনে আওয়ামীলীগ প্রার্থীকে বেগ পেতে হবে বড় সরো। আড়াইহাজার আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু আওয়ামীলীগে এক নেতার দেশ হিসেবে কায়েম করতে পারলেও এখানে আওয়ামীলীগ নেতাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। বিশেষ করে আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবুকেই কেন হতে হলো এই প্রশ্ন এতো বছর ধরেও ঘুরপাক খাচ্ছে। যুবলীগ নেতা ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল পারভেজ একেবারেই অবস্থায় রয়েছেন। আওয়ামীলীগের অন্যান্য প্রাথীরাও নজরুল ইসলাম বাবুর ভয়ে জনগণের দ্বারস্ত হচ্ছেন না। আড়াইহাজারে বিএনপির ত্রিমুখী অবস্থান। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম আজাদ, সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান আঙ্গুর, প্রয়াত বিএনপি নেতা বদরুজ্জামান খসরুর ছেলে মাহমুদুর রহমান সুমন নানাভাবে বিএনপিকে উজ্জিবিত রেখেছেন এই উপজেলায়। তবে তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে আওয়ামীলীগের নজরুল ইসলাম বাবু ব্যতীত দ্বিতীয় কোন বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন না তারা। সর্বশেষ আড়াইহাজার ও গোপালদী পৌরসভাতেও নজরুল ইসলাম বাবু তার প্রভাব বিস্তারের নতিজা প্রকাশ করেছেন। রাজনৈতিক বোদ্ধারা বলছেন, আওয়ামীলীগে এসব সমস্যা সমাধানে কালক্ষেপণ হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের বড় ধরণের ভরাডুবির আশঙ্কা রয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।
হাবিবুর রহমান বাদল ষোল বছরের স্বৈরশাসনে দেশকে পঙ্গু করে শত দমন পীড়ন আর নির্বিচারে গুলি বর্ষন করে দেড় হাজারের বেশী ছাত্র-জনতাকে হত্যার পরও শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা তার গতি রক্ষা করতে পারেনি। গত বছরের ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার রোষানল থেকে বাঁচার জন্য ছোট বোন রেহানাসহ স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আত্মসমর্পণ এতটাই […]
হাবিবুর রহমান বাদল নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে। এনিয়ে সাধারণ নাগরিকরা সরব হয়ে উঠেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিভিন্ন মহল থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯