আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | রাত ১২:১৫

হকারমুক্ত হলো রাসেল পার্ক

ডান্ডিবার্তা | ১২ জুলাই, ২০২৩ | ৯:৪৫ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই ফুটপাতের পুরোটা ছিলো অবৈধ হকারদের দখলে। ফুটপাত ছাপিয়ে সড়কের অনেকটা জুড়েও পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন তারা। ফলে ফুটপাতে হাঁটার সুযোগ পাচ্ছেন না পথচারীরা। এই ছিল নগরীর শেখ রাসেল পার্ক, জল্লারপাড় ও আশেপাশের এলাকার প্রতিদিনকার দৃশ্য। ফলে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হতো পার্কে ঘুরতে আসা ভ্রমন পিপাসুসহ স্থানীয়দের। কোনোভাবেই এখানকার ফুটপাত দখলমুক্ত হতো না। এ কারণে দুর্ভোগ ছিলো নগরবাসীর নিত্যসঙ্গী। তবে নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর একটি উদ্যোগে বদলে গেছে এই দৃশ্য। সম্প্রতি হকার উচ্ছেদে মাইকিং করা হয় সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে। মাইকিং করার পর হকাররা নিজ উদ্যোগে অবৈধ দোকানপাট সরিয়ে নেয়, ফলে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পায় নগরবাসী। পার্কটি হকার মুক্ত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পার্কটিতে ঘুরতে আসা সাধারণ মানুষ ও স্থানীয় বাসিন্দারা। নগরবাসী ও পথচারীদের মতে, মেয়র ডা. সেলিনা হায়ৎ আইভী নগরবাসীকে সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে দেয়ার যে ব্রত নিয়ে শেখ রাসেল পার্ক নির্মাণ শুরু করেছিলেন, প্রকৃত অর্থে তা আজ কার্যকর হয়েছে। কেননা এতোদিন পার্কের চারপাশের হকারদের যন্ত্রণায় হাটা-চলা মুশকিল হয়ে পড়েছিলো সাধারণ দর্শনার্থীদের। তবে, আগামীতে হকারমুক্ত এ পার্কের আশেপাশে যেন আর হকারযুক্ত হতে না পারে সে লক্ষ্যে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে খোদ মেয়র আইভীকে এমনটাই মনে করে নগরবাসী। জানা গেছে, পার্কটির নির্মাণ কাজ শুরুর পর থেকেই এর চারপাশে হকার বসিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতো স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়দের অনেকে বলেন, এসব ধান্ধাবাজরা মূলত কতিপয় নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে এসব অপকর্ম করতো। হকারদের কেন্দ্র করে স্থানীয় দুটি গ্রুপের অনুসারীদের মাঝে বেশ কয়েকদফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলেও জানায় স্থানীয়রা। স্থানীয়দের মতে, পার্কের যে সৌন্দর্য্য মূলত এখন তা দৃশ্যমান। তবে, যদি আবার এসব টংগুলো বসানো হয় তাহলে পার্কটি পুনরায় তার সৌন্দর্য্য হারাবে। তাই সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের উচিত যাতে হকাররা রাস্তা ও ফুটপাত আর দখল করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা। এতে দর্শনার্থী ও বিনোদন পিপাসু জনসাধারণ মনোরম পরিবেশে প্রকৃতির যে সৌন্দর্য্য তা উপভোগ করতে পারবে। জীবনের পড়ন্ত বেলায় স্বাস্থ্যগত জটিলতা থেকে রক্ষা পেতে প্রতিদিন রাতে হাটতে আসা বয়:বৃদ্ধ সোবহান মিয়া বলেন, আগে পার্ক ছিলো না বলে জিমখানায় বা খানপুরে গিয়ে হাটতে হতো। এখন এ পার্কটি হওয়ায় পার্কের চারপাশেই হাটাহাটি করি, এতে স্বাস্থ্য ভালো থাকে। কিন্তু হকারদের দোকানপাট, চেয়ার-টেবিল ও হাক-ডাকের কারণে খুব ভোগান্তি পোহাতে হতো। তবে, বিগত ২দিন যাবৎ হকারমুক্ত যে পরিবেশ দেখছি তাতে বেশ ভালোই লাগছে। আসলে এমনই তো হওয়ার কথা ছিলো বলেন তিনি। এছাড়াও মেয়র আইভীকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি পার্কটি হকারমুক্ত রাখার দাবি জানান তিনি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পার্কের চারপাশ উন্মুক্ত। হাটা-চলা করতে বেশ স্বাচ্ছ্যন্দ বোধ করছে পথচারীরা। এমনকি রাস্তা দিয়ে রিক্সা বা গাড়িতে করে যাওয়ার সময়ও পার্কের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারছে নগরবাসী, যা এতোদিন হকারদের কারণে দেখা যেতো না। কথা হয় পার্কে হাটতে আসা বেশ কয়েকজনের সাথে, তারা প্রত্যেকেই চান হকারমুক্ত মনোরম পরিবেশযুক্ত উন্মুক্ত রাসেল পার্ক। সন্তানকে কাঁধে নিয়ে খুনসুটি করতে করতে লেকের পাড় দিয়ে হাঁটছিলেন একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জামান মির্জা। পাশ থেকে বাবা-ছেলের এই খুনসুটি পরম তৃপ্তি নিয়ে উপভোগ করছিলেন মা তাহেরা বেগম। পঞ্চবটি থেকে শেখ রাসেল পার্কের লেকে ঘুরতে এসেছিলেন তাঁরা। এতো সুন্দর একটি পার্ক নগরবাসীকে উপহার দেয়ায় মেয়রকে ধন্যবাদ জানাতে ভুল করেননি তারা। এই দম্পতি জানান, সময় পেলেই সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে আসেন এখানে। কিন্তু এতোদিনের হকারদের কারণে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে না পারলেও বর্তমানে হকার উচ্ছেদ হওয়ায় পার্কের প্রকৃত সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারছেন তারা। পাশাপাশি সন্তানকে নিয়ে পার্কের ওয়াকওয়ে দিয়ে স্বাচ্ছন্দে হাটাচলা করতে পারছেন তারা। বাচ্চাটার আনন্দ দেখে ভালো লাগছে বলেও জানান তারা। স্থানীয়রা বলছেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ও নান্দনিকতার মিশেলে দেশের অন্য যে কোনো জেলার কাছে নারায়ণগঞ্জকে রোল মডেল হিসাবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভী। তারই ধারাবাহিকতায় নানা বাধা-বিপত্তি পেড়িয়ে এখানে পার্ক নির্মাণ করেন আইভী। নগরমাতা হওয়ার সুবাদে পার্কটির সৌন্দর্য্য রক্ষা করার দায়িত্বও তার। তাই, হকার উচ্ছেদের মাধ্যমে এখন যে পরিবেশ বজায় রয়েছে তা বিদ্যমান থাকলে আরও বেশী মানুষ পার্কটিতে আসবে বলে মনে করেন তারা। এজন্য নগরবাসীর সুবিধার্থে অন্যান্য সিদ্ধান্তের বেলায় মেয়র আইভী যেমন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকেন, এখানে হকার উচ্ছেদেও তাকে তার অনড় অবস্থানে থাকতে হবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। দেওভোগ এলাকার সুমন বলেন, ‘পার্কটি হাটাচলা ও বসার জন্য নির্মাণ করার কথা থাকলেও ফুটপাত দিয়ে হাটার পথের পুরোটাই এতোদিন দখল করে দোকান বসিয়েছিলো হকাররা। ফলে হেঁটে আসাটাই কঠিন, বিশেষ করে বিকেল-সন্ধ্যায় একটু নিরিবিলি পরিবেশ উপভোগ করতর এসে এসব দোকানের জন্য হাঁটা মুশকিল হয়ে পড়তো। তবে, এবার মেয়র আইভীর কারণে পার্ক ও এর আশেপাশের হকার দের উচ্ছেদ করায় মেয়রের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা