
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের সর্বশেষ উপজেলা কমিটি ঘোষণার পর থেকেই জেলা আওয়ামী লীগ ও সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে টানাপোড়েন চলে আসছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বারবার এই কমিটি বাতিল করার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের কাছে দাবি জানালেও জেলা আওয়ামী লীগ তাতে সায় দেননি। বরং জেলা আওয়ামী লীগ তাদের সিদ্ধান্তে অনড়। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ যেকোনো মূল্যে এই কমিটি বাতিল করার পক্ষে। তাই এবার জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে বাদ দিয়েই কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বারস্থ হয়েছেন সোনারগাঁ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। তাদের কাছে অভিযোগ করেছেন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নানা অনিয়ম নিয়ে। এর আগে, গত ৫ মে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার এবং সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুম স্বাক্ষরিত ৭১ সদস্যের প্রস্তাবিত কমিটি অনুমোদনের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলের কাছে পাঠানো হয়। যে কমিটিতে ২২ জনের বেশি নতুন মুখ ছিল। যারা আগে কখনো সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। পাশাপাশি এ কমিটিতে সামসুল আলম নামের স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের এক সদস্যকে রাখারও অভিযোগ উঠে তখন। সমালোচনা শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। পরবর্তীতে গত ৪ জুলাই রাতে জেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হয়। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্ণাঙ্গ কমিটি বাতিলের দাবির জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেছে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সিনিয়র সহ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম এবং সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। ওই বৈঠকে দলের হাইকমান্ডের কাছে তারা দাবি করেছেন বর্তমানে যে কমিটি করা হয়েছে তা পকেট কমিটি। এই কমিটি বাতিল করা না হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মধ্যে বিরুপ প্রভাব পড়বে। এছাড়া এই কমিটিতে অনেক ত্যাগী নেতাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির বাহিরে গিয়ে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই এই কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের এমন বক্তব্যের পর দলটির হাইকমান্ড কমিটি বাতিলের বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। এদিকে এই কমিটির তালিকা প্রকাশের পর থেকেই জেলা আওয়ামী লীগ ও সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। পরস্পরকে উদ্দেশ্য করে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য রাখছেন। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের দাবি, অর্থের বিনিময়ে প্রস্তাবিত কমিটির ২০ জন নেতাকে বাদ দিয়ে কমিটিতে বিচ্ছিন্নদের জায়গা দেওয়া হয়েছে। যারা কোনোভাবেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের দাবি, অর্থের বিনিময়ে নয় যাচাই বাছাইয়ের ভিত্তিতে এই কমিটি করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে শক্তিশালী কমিটিই তৈরি করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। এই কমিটি এখন পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। অন্যদিকে সানারগাঁ উপজেলার আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ বাদ পড়া ২০ জনের মধ্যে জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নাম রয়েছে। তাদের মধ্যে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আব্দুল হাই ভূঁইয়ার ছেলে আহসান হাবীব টিপু, মেঘনা শিল্পাঞ্চল শ্রমিক লীগের আহবায়ক তাজুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল হালিম, সোনারগাঁ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক ভিপি রফিকুল হায়দার বাবু, সোনারগাঁ পৌরসভা আওয়ামী লীগ নেতা কবির হোসেন, আতাউর রহমান আক্তারসহ অনেকেই বাদ পড়েছেন। তাছাড়া প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রশিদ ভূঁইয়াকে পদ পরিবর্তন করে সদস্য করা হয়েছে ও শহিদুল্লাহ মিয়াকে পদবঞ্চিত করা হয়েছে। ফলে জেলা আওয়ামী লীগের ব্যক্তিরা লাভবান হলেও দলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এই কমিটি অনুমোদনের পর সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল কায়সার জানান, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি। আমরা যাচাই বাছাই করে ত্যাগী নেতাদের নিয়ে একটি প্রস্তাবিত কমিটি জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে প্রেরণ করেছি। সেই কমিটি অনুমোদন দেওয়ার কথা। জেলা আওয়ামী লীগ আমাদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ না করেই তাদের প্যাডে একটি কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন। কেউ চিনে না এমন অনেক ব্যক্তিদের এ কমিটিতে আনা হয়েছে। কমিটি অনুমোদন হলে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে হওয়ার কথা। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে কেন? আমাদের প্রস্তাবিত কমিটির কারো বিষয়ে কোন অভিযোগ থাকলে আমাদের জানিয়ে পরিবর্তন করতে পারতেন। কোন কিছু না জানিয়ে ২০ জন নেতাকে বাদ দিয়ে কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন। এ বিতর্কিত কমিটির অভিযোগ নিয়ে প্রয়োজনে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার কাছে যাবো। সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা উপজেলায় রাজনীতি করি। কে কেমন, কারা দল করে আমাদের সবই জানা। জেলায় বসে আমাদের প্রস্তাবিত কমিটির সকল নেতাদের পদ পরিবর্তন করে ২০ জনকে বাদ দিয়ে যারা দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেয় না। অনেকের পরিবার বিএনপি কেন্দ্রীক এমন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে কিভাবে এমন একটি কমিটি অনুমোদন দেয়? জেলা কমিটির পক্ষ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় প্যাডে এভাবে উপজেলা কমিটি অনুমোদন দেয়া ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। আমরা এ কমিটি মানি না। আমরা এ কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছি।’ নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই জানান, ‘প্রস্তাবিত কমিটিতে থাকা বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে এই পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটাই ফাইনাল কমিটি। নতুন করে কমিটিতে পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। আশা করছি, এই কমিটির মাধ্যমে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।’ উল্লেখ্য, সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। দীর্ঘ ২৫ বছর পর ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। যে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক। এ সম্মেলন শেষে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের নাম ঘোষণা করা হয়। এই তিন সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটিকে পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
হাবিবুর রহমান বাদল ষোল বছরের স্বৈরশাসনে দেশকে পঙ্গু করে শত দমন পীড়ন আর নির্বিচারে গুলি বর্ষন করে দেড় হাজারের বেশী ছাত্র-জনতাকে হত্যার পরও শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা তার গতি রক্ষা করতে পারেনি। গত বছরের ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার রোষানল থেকে বাঁচার জন্য ছোট বোন রেহানাসহ স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আত্মসমর্পণ এতটাই […]
হাবিবুর রহমান বাদল নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে। এনিয়ে সাধারণ নাগরিকরা সরব হয়ে উঠেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিভিন্ন মহল থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯