হঠাৎ স্তব্ধ না’গঞ্জের বামদল!

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে অনেকটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গন। রাজনৈতিক অঙ্গনের বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বর্তমানে শান্তি সমাবেশ ও মহা-সমাবেশের মাধ্যমে ঢাকার রাজপথে গর্জন সৃষ্টি করেছেন। এছাড়াও আগামী আরো কর্মসূচির মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ জেলাতে এই দুইদল বিপ্লব সৃষ্টি করবে। এমতাবস্থায় বিগত দিনের সাধারণ জনগণের পছন্দের দল বাম রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের ভূমিকা বলা চলে না চোখে পরার মতোই। যার কারণ নেতাকর্মীরা বলছে নিজেদের মধ্যে নেই ঐক্যবদ্ধ তারা ভিন্ন ভিন্নভাবে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা দাবী নিয়ে থাকলে ও তা জনগণের চোখে পরার মতোই নয়। যার কারণে সাধারণ জনগণ ও বাম রাজনৈতিক তৃণমূলের দাবি, বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে তারা। এছাড়া বিগত দিনে গণসংহতি আন্দোলণ বাম রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের রাজপথে অনেকটাই চাঙ্গা রেখেছে। কিন্তু বর্তমানে গণসংহতি আন্দোলণ বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ আন্দোলণে যুক্ত হওয়ায় নারায়ণগঞ্জে রাজনীতিতে সাইড লাইনে চলে গেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। এছাড়া বাম গণতান্ত্রিক জোট বর্তমানে তারা না পারছে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে, না পারছে বিএনপির মত সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনকে সমর্থন দিতে। আর এ কারণে সংকটে পড়ছে দেশের বাম গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠনগুলো। জানা গেছে, দেড় দশক সময় ধরে বাম রাজনৈতিক দলগুলো বাম গণতান্ত্রিক মোর্চা নামে একটি জোটের মাধ্যমে আন্দোলন করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এই আন্দোলনে তারা একদিকে যেমন জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছে না, জনসমর্থন পাচ্ছে না, অন্যদিকে নিজেরাও বিকশিত হতে পারছে না। এতে তৈরি হচ্ছে উপদল, তৈরি হচ্ছে উপদলীয় কোন্দল। এছাড়া বর্তমানে একে একে করে এই বাম রাজনীতি ছেড়ে অনেক নেতৃবৃন্দরা বিগত দিনের মতোই কিছুর আশায় আবারও বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে যুক্ত হচ্ছে। যা নিয়ে বর্তমানে বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ব্যাপক বিজয়ের পর অনেকেই মনে করেছিল এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো বিকশিত হওয়ার সুযোগ পাবে। বিশেষত যুদ্ধাপরাধের বিচার যখন শুরু হয় তখন বাম দলগুলোর সামনে একটি বড় সুযোগ সামনে এসেছিল। এই বাম দলগুলো জনগনের সঠিক অধিকার আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামে অনেক ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগে ও বিএনপির বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতার প্রভাব দেখে ও তাদের অর্থ সম্পদের লোভে অনেকে ছুটে যাচ্ছে বিভিন্ন দলের পিছু। এর কারণে কিন্তু নানা রকম বিভ্রান্তি এবং হঠকারীতার কারণে বাম রাজনীতি চোরাবালিতে আটকে যায়। এখন বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাথে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল হল বিএনপি। বিএনপি রাজপথে আন্দোলন করছে। আবার এদিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নৈরাজ্যে প্রতিহত করতে উঠে পরে লেগেছে।এছাড়া আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংগঠনগুলো আরো শক্তিশালী ও গতিশীল করতে নেতাকর্মীরা দফায় দফায় সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের মূল থেকে শুরু করে অঙ্গসংগঠন ও ওয়ার্ড, থানা, ইউনিয়নের কমিটি গঠন করছে। যা নিয়ে বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সেদিক দিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে পরেছে বাম গণতান্ত্রিক জোটের রাজনীতি। এছাড়াও সকল নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে ঐক্যবদ্ধ হতে পারছে না। এ বিষয়ে কমিউনিস্ট পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমরা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলণ সংগ্রামের পাশাপাশি দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি আমাদের নারায়ণগঞ্জের যে বিভিন্ন সমস্যা সেগুলো নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম অবহৃত রেখেছি। বিশেষ করে আমরা যেভাবে জনগণের জন্য দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ে আন্দোলণে আছি এভাবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আমরা আন্দোলণে আছি। আর বাম গণতান্ত্রিক জোট সব সময় জনগণের সাথে সম্পৃক্ত আছি আর এখন আরো বেশি আছি। বর্তমাণে প্রতিদিনই আমাদের কর্মসূচি চলমান গতিতে চলছে। এ বিষয়ে ন্যাপ নেতা আওলাদ হোসেন বলেন, বর্তমানে বিএনপি আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতার লোভে রাজনীতি করছে একজনকে হাটিয়ে আরেকজন ক্ষমতায় আসতে চাচ্ছে। এদিকে আমরা দেখতে পাচ্ছি বিএনপি যে দাবি গুলো নিয়ে রাজপথে আছে সে দাবিগুলো যৌতিক দাবি আমরা বর্তমানে এই নিরপক্ষে সরকারের অধীনে নির্বাচনে জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করছি। আর বর্তমানে আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্য নেই যার কারণে বর্তমানে আমরা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে আন্দোলন সংগ্রাম জনগণের চোখে পরছে না। বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক নিখিল দাস বলেন, যেহেতু সামনে নির্বাচন সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের দল বাসদ এবং জোট বর্তমানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি দাবী করে যাচ্ছি দলীয় সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন আমরা দেখতে চাই না। নিরদলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যদি নির্বাচন হয় সে ক্ষেত্রে আমরা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবো। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যচ্ছি। আর আপনারা অবগত আছেন একটি দল কিন্তু কখনো সকল দিক দিয়ে গুছিয়ে থাকে না। নিজেদের মধ্যে অনঐক্য একটু থাকবেই সব মিলিয়ে একটি দল। কিন্তু বর্তমানে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টায় রয়েছি। আর বর্তমানে আমাদের চলমান রাজনীতি পরিচালিত হচ্ছে।