আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | রাত ১০:১০

চিকিৎসকের অভাবে প্রাইভেট ক্লিনিকে ভোগান্তিতে রোগীরা

ডান্ডিবার্তা | ১৮ জুলাই, ২০২৩ | ১১:২২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর নবজাতক ও প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সারাদেশে ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা ও অস্ত্রোপচার বন্ধ রেখেছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের এই পদক্ষেপের প্রভাব পড়েছে রাজধানী লাগোয়া নারায়ণগঞ্জ শহরে। নারায়ণগঞ্জ শহরের বেসরকারি ক্লিনিকগুলো খোলা থাকলেও চিকিৎসক না থাকায় সেখানে নতুন কোন রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। বন্ধ রয়েছে অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম। নিয়মিত রোগী এবং অস্ত্রোপচারের রোগীরা বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে যোগাযোগ করলে তাদের বুধবার আসতে বলা হচ্ছে। রোগীর শারীরিক পরিস্থিতি নাজুক হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। গতকাল সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শহরের কয়েকটি বেসরকারি ক্লিনিকে সরেজমিনে গিয়ে এমনটা জানা যায়। চিকিৎসকরা দুইদিন চেম্বার বন্ধ রাখায় ক্লিনিকগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলেও জানায় কর্তৃপক্ষ। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১০০ বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়গনিস্টক সেন্টার রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত রোগী দেখেন দেশের কয়েকশ’ চিকিৎসক, চলে অস্ত্রোপচারও। বিকেল পাঁচটার দিকে সদর উপজেলার শিবুমার্কেট এলাকা থেকে ৭২ বছর বয়সী বৃদ্ধা শাশুড়ি বাছিরুন বেগমকে নিয়ে শহরের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আসেন নাসরিন আক্তার। সাথে থাকা তার ভাই সজল মিয়া বলেন, ‘গাইনি বিশেষজ্ঞকে দেখাতে এসেছিলাম। আইসা শুনি ডাক্তর নাই। বাকি কোন হাসপাতালেও নাকি ডাক্তার নাই। এখন এতদূর থেইকা আসছি। আগে জানলে তো আর এই হয়রানিতে পড়তাম না।’ আরও দু’টি বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে মডার্ণ ডায়াগেনস্টিক সেন্টারে হৃদরোগের সমস্যা নিয়ে আসা আব্দুর রহমান হতাশ হয়ে বাড়ি ফেরার জন্য রিকশা খুঁজছিলেন। কথা হলে তিনি বলেন, ‘সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে ডাক্তার দেখাইতে আসছিলাম। দুই দিন যাবত বুকে খুব ব্যাথা হচ্ছে। ডাক্তার দেখানো দরকার ছিল। শুনলাম আজ কোথাও ডাক্তার বসবে না। তাই বাসায় চলে যাচ্ছি।’ দুপুর তিনটায় শহরের চাষাঢ়ায় অবস্থিত কেয়ার জেনারেল হাসপাতালে কথা হয় খন্দকার মেহেদী হাসানের সাথে। তিনি বেসরকারি এই হাসপাতালটির কাউন্টার ম্যানেজার। তিনি বলেন, এই হাসপাতালে নিয়মিত তিনজন জেনারেল সার্জন, পাঁচজন গাইনি সার্জন, একজন অর্থপেডিক সার্জন এবং একজন ইএমটি সার্জন চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। সারাদেশে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে তারা সকলেই গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার হাসপাতালে কোন সেবা দেবেন না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আগেই জানিয়ে দিয়েছেন। ‘স্বাভাবিক সময়ে এই হাসপাতালে ১০-১২টি অস্ত্রোপচার হয়। তবে আজ ওটি (অপারেশন থিয়েটার) বন্ধ। বর্হিবিভাগের চিকিৎসা সেবাও বন্ধ। কারণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও এই দু’দিন চেম্বার করবেন না বলে জানিয়েছেন। আমরা নতুন রোগী ভর্তি নিচ্ছি না। যাদের অস্ত্রোপচারের ডেট ছিল তাদেরও ডেট পরিবর্তন করে বুধবার করে দেওয়া হয়েছে। পিত্তথলির অপারেশন হওয়া এক রোগীর সেলাই কাটার কথা ছিল আজ। কিন্তু চিকিৎসক না থাকায় তাকে আগামীকাল বুধবার আসার জন্য বলা হয়েছে।’ একই পরিস্থিতি ডনচেম্বার এলাকার মেডিহোপ হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টির সেন্টারেও। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার মো. ফয়সাল বলেন, প্যাথলজি বিভাগ ছাড়া বাকি সব কার্যক্রম বন্ধ। হাসপাতালে কয়েকজন রোগী ভর্তি আছেন। যাদের সেবা দেওয়ার জন্য জরুরি বিভাগের একজন চিকিৎসক রয়েছেন। তবে নতুন কোন রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। চাষাঢ়ার প্রাইম জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে হাসপাতালটি ফাঁকা দেখা যায়। হাসপাতালের স্টাফরা অলস সময় পার করছেন বলে জানান। কাউন্টারের সামনে কথা হয় মো. অনিক নামে হাসপাতালের এক স্টাফের সাথে। তিনি বলেন, ‘নিয়মিত রোগী যারা কন্টাক্ট করতেছেন তাদের দু’দিন পরে আসার জন্য বলা হচ্ছে। আর যেসব শিডিউল এই দুইদিনে ছিল তাদের ডেট আগেই পরিবর্তন করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।’ চিকিৎসকরা দু’দিন সেবা বন্ধ রাখায় আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানান বেসরকারি এসব হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ। খন্দকার মেহেদী হাসান বলেন, ‘সারাদেশেই তো ডাক্তাররা সেবা বন্ধ রেখেছেন। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এতে ক্লিনিকগুলো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এই দু’দিন রোগী না দেখার কারণে আগামী বৃহস্পতিবার আবার অতিরিক্ত চাপ পড়বে।’ একই কথা বলেন মেডিহোপ হাসপাতালের ম্যানেজার মো. ফয়সালও। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও শহরের সরকারি দু’টি হাসপাতালে নিয়মিত কার্যক্রম চলেছে। বেসরকারি হাসপাতালে সেবা বন্ধ থাকার প্রভাব দিনভর না পড়লেও সন্ধ্যার পরে রোগীর চাপ বাড়ার আশঙ্কা করছেন সরকারি হাসপাতাল দু’টির চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, সারাদিন হাসপাতাল দু’টিতে রোগীদের অতিরিক্ত চাপ না থাকলেও সন্ধ্যার পর তা বাড়তে পারে। কারণ সাধারণত চিকিৎসকরা ব্যক্তিগত চেম্বারে বিকেলের পর সন্ধ্যা থেকে রোগী দেখা শুরু করেন। রোগীরা যখন ব্যক্তিগত চেম্বারে কাঙ্খিত চিকিৎসককে না পাবেন তখন তারা সরকারি হাসপাতালগুলোর দিকে আসবেন। তবে এর প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন বলে জানান শহরের বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতাল নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (সুপার) ডা. আবুল বাশার। তিনি বলেন, ‘সারাদিন রোগীর চাপ অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মতোই ছিল। কিন্তু বেসরকারি ক্লিনিকগুলোর চেম্বার তো বিকেলে থাকে। ওইসব রোগীরা যখন ক্লিনিকগুলোতে গিয়ে ডাক্তার না পেলে আমাদের এখানে আসবেন। এজন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। সবগুলো জায়াগা আমরা দু’জন করে চিকিৎসক রেখেছি। ইমার্জেন্সিতেও দু’জন চিকিৎসক আছেন। ইমার্জেন্সি ও ইনডোর ২৪ ঘন্টাই খোলা আছে। রোগীরা যাতে কাঙ্খিত সেবাবঞ্চিত না হন সে প্রস্তুতি রেখেছি।’ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শেখ ফরহাদ বলেন, ‘দিনভর আউটডোর ও ইমার্জেন্সিতে রোগীদের আলাদা চাপ ছিল না। তবে সন্ধ্যার পর বাড়ে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা