আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | রাত ১২:২১

না’গঞ্জে জাপাকে আর সুযোগ নয়!

ডান্ডিবার্তা | ২০ জুলাই, ২০২৩ | ১০:১৭ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জের ৫টি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটি আসনে জাতীয় পার্টির এমপি থাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে যে ক্ষোভ সেটা আবারো প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কবির বিন আনোয়ার নারায়ণগঞ্জ আসলে তাঁর সামনেই স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী তিন নেতা আগামী নির্বাচনে কোনভাবেই ওই দুটি আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে না দিতে আহবান রাখেন। সেই সঙ্গে এখানে জাতীয় পার্টির কারণে আওয়ামী লীগ ঠিকমত দাঁড়াতে পারছে না ও প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছেন জানালেও এ সম্পর্কে বক্তব্য দিতে গিয়ে কবির বিন আনোয়ারের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট উত্তর না পেয়ে কার্যত হতাশায় নিমজ্জিত নেতাকর্মীরা। কবির বিন আনোয়ার মতবিনিময় সভায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে সবাইকে লোভ লালসা না করতে। সোনারগাঁ উপজেলা নিয়ে গঠিত সোনারগাঁ আসনের বর্তমান এমপি হলেন লিয়াকত হোসেন খোকা ও শহর ও বন্দর এলাকা নিয়ে গঠিত সদর-বন্দর আসনে সেলিম ওসমান। এ দুইজন টানা দুইবারের এমপি। সদর-বন্দর আসনে সেলিম ওসমানের আগে এমপি ছিলেন তাঁরই বড় ভাই প্রয়াত নাসিম ওসমান। এ আসনে ২০০৮ সালে জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। আর সোনারগাঁয়ে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের এমপি থাকলেও মহাজোটের কারণে ২০১৪ সালে জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ দুটি আসনের আওয়ামী লীগের নেতারা বার বার লাঙল বাদ দিয়ে নৌকার দাবী করে আসছেন। এও অভিযোগ করে বলছেন, লাঙলের যাতায় পিষ্ট হচ্ছে নৌকা, খেই হারিয়ে ফেলছে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতায় থেকেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নির্যাতিত নিপীড়নের শিকার। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভাতেও বিষয়গুলো উঠে আসে। সেখানে কবির বিন আনোয়ারের মত প্রভাবশালীকে পেয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল ও সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বিশেষ বক্তব্য রেখেছেন। ৫টি আসনে নৌকার দাবি করে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মোহাম্মদ বাদল বলেন, আমরা চাই আগামী দিনে নৌকার বিজয়। মাননীয় প্রধান অতিথি আগামীতে আমরা নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে নৌকা চাই। আমি মহাজোটের বিরোধীতা করছিনা। তাদের অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা হোক। যিনি আছেন তিনি প্রয়োজনে নৌকায় আসেন। আমাদের রাজনীতি করে দলীয় মনোনয়ন পেতে হবে সেটা বড় কথা না। অনেকেই ভাবেন সদর-বন্দর আসনে মনে হয় মনোনয়ন নেওয়ার সাহস কারো নাই। অনেকে বলেন একজনই ১০ বার এমপি হবেন। নো আমরা এটা বলিনা। একটা গ্রুপ বার বার এমপি নির্বাচন করবে! এই সংবিধানের ধারা পরিবর্তন হতে পারেনা? আমরা একটি সুষ্ঠু নীতিমালা চাই। জেলা আওয়ামীলীগের সবশেষ কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি ও নাসিকের মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, একটু আগে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ (বাদল) বলে গেছেন নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসকে ধরে রাখতে ৫টি আসনে নৌকা চাই। আমি সেটার সাথে একমত। সোনারগাঁ কেন আমাদের হাতছাড়া থাকবে। কেন সেখানে জাতীয় পার্টিকে দিতে হবে। এখন সময় এসেছে এখানে আওয়ামীলীগের প্রতিনিধি দেওয়ার। জয় বাংলা বলতে পারেনা, নৌকার স্লোগান দিতে পারেনা, যা ইচ্ছা। আজকে ১৫ বছর দল ক্ষমতায় কিন্তু সেখানে সাংগঠনিক অবস্থা খুবই খারাপ। আমাদের মুখের কথা আপনি বিশ^াস করবেন না। আপনি গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে তদন্ত করিয়ে পরে সিদ্ধান্ত নিবেন। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন আমি জানিনা কেনো এখানে দিতে হবে। যাকে দেওয়া হয়েছে সেও জাতীয় পার্টি থেকে। জাতীয় পার্টি থেকে কেনো দিবে। আওয়ামীলীগে চলে আসুক। আওয়ামীলীগের ঘরের সন্তান। তবে ডেফিনেটলি এখানে অন্যকে চাই। আমাদেরকে এভাবে ডিপ্রেশনে রাখার কোনো দরকার নেই। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, মাননীয় প্রধান অতিথি আমরা কি অপরাধ করলাম যে আমাদের লাঙলের চাষ করতে হবে। লাঙলের বোঝা বইতে গিয়ে আমাদের কাঁধে দাগ পরে গেছে। আমরা লাঙলের বোঝা নিতে চাইনা। আমরা ৫টি আসনে নৌকা চাই। নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে নৌকা পাশ না করলে কোথায় পাশ করবে। এখানে জাতীয় পার্টির এক এমপি ক্লাস এইট পাশ নাকি সিক্স পাশ আমি জানিনা। এখানে নারায়ণগঞ্জ শহরে যেখানে সিটি করপোরেশন আছে জাতীয় পার্টির একজনকে দেওয়া হলো। সামনে যদি জোট থাকে তাহলে এই দুইটা সিট বাগেরহাটে দিয়ে দেন। দিনাজপুরে দেন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে কি কারণে দিবেন। এদিকে আসন্ন নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি আসনে নৌকা দাবি করে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাদের দেয়া বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কবির বিন আনোয়ার বলেন, আমাদের অনেক শৃঙ্খলার অভাব আছে। সেই শৃঙ্খলা পার্টিতে আবার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। রাজনৈতিক সমঝোতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দলের ক্ষতি হচ্ছে। এই জেলা ছাড়াও অন্যান্য জেলায়ও সমস্যা আছে। যেখানে লম্বা সময় অন্য দলে সংসদ সদস্য থাকার কারণে তারা তাদের দলের স্বার্থ রক্ষা করে যাচ্ছে। এছাড়া অন্য বিষয়গুলোও আপনারা বলেছেন। আমি জানি, সবই জানি। প্রত্যেকের সাথে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় আছে। কিন্তু আপনাদের মনে রাখতে হবে আমরা কাজটাকে দুই ভাগে ভাগ করেছি। একটা হচ্ছে আমাদের নির্বাচন পূর্ব কাজ। নির্বাচনের আগে। মাত্র আর ৪-৫ মাস সময় বাকি আছে। আর দুই মাস পর স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচন নিয়ে সবাই ব্যস্ত হয়ে যাবে। আপনারা জানেন চক্রান্ত চলছে। তাই আপাতত ব্যক্তিগত দুঃখ কষ্ট, মনোবেদনা, আবেগ অনুভূতি, দলাদলি, বিভিন্ন গ্রুপ; এগুলো আমাদেরকে ভুলতে হবে। মনে রাখতে হবে জাতির পিতাকে যেমন আমরা ব্যর্থ করে দিয়েছিলাম, তৎকালীন আওয়ামীলীগের লোকজন। যারা খন্দকার মোশতাকের সাথে ছিল, তারা কেউ তো আওয়ামীলীগের বাহিরে ছিলনা। আমরা কি আজও বঙ্গবন্ধু কন্যাকে এই পর্যায়ে এসে আবার ব্যর্থ করে দেবো। আমাদের এই আচরণ, লোভ-লালসার কারণে কি আমরা নষ্ট করবো? সেই প্রশ্ন রইল।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা