আজ শুক্রবার | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ সফর ১৪৪৭ | রাত ১২:২০

বিতর্ক পিছু ছাড়ছেনা আ’লীগকে!

ডান্ডিবার্তা | ২১ জুলাই, ২০২৩ | ১২:২৩ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হওয়া চেয়ারম্যানের গোমর ফাঁস করে দিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই। তিনি নিজেও ওই চেয়ারম্যানের তির্যক মন্তব্যের শিকার হলেন। ললাটে এটে গেল এক কলঙ্কের তিলক। তবে আবদুল হাইয়ের বক্তব্যের একটি লাইন নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। তিনি দাবী করেছেন গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আলীরটেকের নির্বাচিত চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের মনোনয়নপত্র সুপারিশে তিনি সাক্ষর করেনি। বিশেষ এক ব্যক্তিকে ব্ল্যাঙ্ক চেক (ব্যাংকের ফাঁকা চেকের পাতা) প্রদান করে মনোনয়ন বাগিয়েছেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে নানা আলোচনা। ২০১১ সালের ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় নারায়ণগঞ্জের ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নির্বাচন। আলীরটেক ইউপি নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ও সায়েম আহমেদ। কিন্তু এদের কেউই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নেই। চেয়ারম্যান হওয়ার আশায় তারা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। আর এ বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে আব্দুল হাই মেনে নিতে পারেননি। তাই তিনি স্বাক্ষরও করেননি। কিন্তু তার স্বাক্ষর ছাড়াই এসকল নাম কেন্দ্রে জমা পড়ে। ওই সাক্ষর দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল। পরে মতিউর রহমানের নাম নিশ্চিত হলে তিনি জমা দেওয়ার আগের দিন হঠাৎ করে সরে দাঁড়ান অসুস্থতার অজুহাতে। এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই বলেন, জাকির হোসেন হেফাজত আর জামাতের লোকজন নিয়ে নির্বাচনের নমিনেশন জমা দিয়েছে। বলেছে নৌকা না নিয়া অন্য কিছু নিলে আরো ভোট বেশি পেত। এগুলো বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় এসেছে। আর সে তো প্রথমে নৌকার নমিনেশন পায়নি। পেয়েছিল মতি চেয়ারম্যান। পরে এক বিশেষ ব্যক্তিকে ব্লাইং চেক দিয়ে..। ওই নির্বাচনে গোগনগর ইউনিয়নে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা জসিমউদ্দিন। কিন্তু তার নামটি না পাঠিয়ে নব্য আওয়ামী লীগার ব্যবসায়ী ফজর আলীর নাম পাঠানো হয়েছিল। যা মেনে নিতে পারেননি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই। তিনি আলাদাভাবে জসিম উদ্দিনের পক্ষে ডিও লেটার দিয়েছিলেন। সেই সাথে শেষ পর্যন্ত জসিম উদ্দিনকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হয়। তবে ভোটে তিনি হেরে যান। ফজর আলী যাকে আওয়ামী লীগের একটি প্রভাবশালী পরিবার পরোক্ষ সমর্থন দেন তিনিই জিতে যান। অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগকে সবচেয়ে বেশি কলঙ্কিত ঘটনা ঘটেছে কুতুবপুরে। কুতুবপুরে আওয়ামী লীগের সকল মনোনয়ন প্রত্যাশীকে পিছনে ফেলে বিএনপি নেতা মনিরু আলম সেন্টুকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে কেন্দ্রে নাম পাঠানো হয়। তিনি কবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন তা কেউ না জানলেও তার নামটি কেন্দ্রে পাঠানো হয়। সেই সাথে তাকে কেন্দ্র থেকে মনোনয়নও দেয়া হয়। তিনি একসময়ে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ছিলেন। সেই সাথে তার বিরুদ্ধে নাশকতার মামলাও রয়েছে। কিন্তুইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে কুতুবপুর সেই মনিরুল আলম সেন্টুকেই আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতিকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। ফলে এই বিষয়টিকে মেনে নিতে পারছেন না আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। সেই সাথে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে এই বিষয়টিকে বেশ ফলাও করে প্রচার করা হয়। স্থানীয় পর্যায়ে সৃষ্টি হয় অনেক সমালোচনা। সেন্টু নিজেও স্বীকার করেছেন এমপি শামীম ওসমানের বদৌলতে তিনি নৌকা পেয়েছেন। এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেছিলেন, মনিরুল আলম আওয়ামী লীগের কেউ নন। তিনি তারেক রহমান ও মির্জা ফখরুলের লোক। তাঁর নাম কীভাবে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রস্তাব করা হয়? মনোনয়ন প্রস্তাবে এ কারণে তিনি সই করেননি উল্লেখ করে বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত এককভাবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সই করলেও তিনি আপত্তি জানিয়ে সই করেননি। তাঁর সাক্ষর ছাড়াই মনিরুলের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। আসলে কিছু করার নেই। প্রভাবশালীরা রয়েছেন। এদিকে গত ১৬ জুলাই নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্মার্ট কর্ণার উদ্বোধনের পর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় আওয়ামীলীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কবির বিন আনোয়ার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আবদুল হাই বলেন, নৌকা না থাকার কারণে সদর-বন্দর আসনে দুইটা রাজাকারের সন্তান চেয়ারম্যান হইসে। তারা নৌকার লোকজনের সাথে মারপিট করে। মাকসুদ চেয়ারম্যান ও তার পুত্র। রাজাকারের নাতি। আলীরটেকের চেয়ারম্যান জাকির। জামাতের ফাইন্যান্স্যার। এই সন্ত্রাসরা বিপুল অর্থের মালিক হইসে। অথচ দেখেন এতো বছর দল ক্ষমতায়। সকল কাজ আমাদের করতে হয়। তখন তো জাতীয় পার্টি আমাদের সাথে থাকেনা। এ ব্যাপারে জাকির হোসেন বলেন, নির্বাচনের সময় আমার কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে সেটা না পেয়ে তিনি আমাকে এখন জামায়তের পৃষ্ঠপোষক বলছেন। টাকার জন্য তার ছেলেকে না হইলেও ২৫ বার আমার কাছে পাঠাইসে তবে আমি টাকা দেইনি। আমি বর্তমানে নৌকার চেয়ারম্যান। আমার আগে তাকে জিজ্ঞেস করা দরকার ছিলো যে তার কাছে এমন কি প্রমাণ আছে যে আমি জামায়াতের পৃষ্ঠপোষক। ১৯৯৬ সালে যখন শামীম ওসমান এমপি তখন আমি ফতুল্লার থানার কাউন্সিলর। আমি জন্মলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ করি। আমি আজকে তাকে ফোন করেছিলাম কিন্তু সে ধরেনি। ফোনটা ধরলে তাকে জবাবটা দিতাম। আমি যে জামায়াত এবং বিএনপির সাথে জড়িত না তার যথেষ্ট কারণ আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার দাদি মারা গেছে, আমার ভাগিনা মারা গেছে, আমার এক ভাই মারা গেছে, আমার ফুপার একটি পা গেছে। তাই আমি কি করে বিএনপি বা জামাতের সমর্থন করি! আপনারা আব্দুল হাইকে প্রশ্ন করেন আমি অন্য কোনো দলের সাথে জড়িত এমন কোনো প্রমাণ তার কাছে আছে কিনা। তিনি আরো বলেন, গত নির্বাচনের সময় তিনি (আব্দুল হাই) আমার কাছে ৫০ লাখ টাকা চেয়েছে। কিন্তু আমি সেটা না দেওয়া তিনি আমাকে জামায়াতের ফাইনেন্সার বলছে। বলতে পারে! তার ছেলেকে কম হলেও ২৫ বার পাঠাইছে। আমি বলছি চিন্তা ভাবনা করে জানাচ্ছি। সে যদি প্রমাণ দিতে পারে আমি আওয়ামীলীগ ছাড়া অন্য কোনো দল করি তাহলে এই দেশ ছেড়ে চলে যাবো।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা