আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | রাত ১০:১৪

সিদ্ধিরগঞ্জে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লাখো মানুষের বসবাস

ডান্ডিবার্তা | ২২ জুলাই, ২০২৩ | ১২:২৪ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট সিদ্ধিরগঞ্জে পরিবেশ অধিদপ্তরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আবসিক এলাকায় পরিবেশ দূষণকারি অসংখ্য চুন কারখানার রাজত্ব চলছে। এসব কারখানা থেকে প্রতিনিয়ত নির্গত বিষাক্ত গ্যাস ও কালো ধোঁয়া পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই কারখানাগুলো অন্যত্র স্থানান্তরের দাবী করছেন এলাকাবাসীর। তবে এ ব্যাপারে শীগগিরই আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেব পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা উপপরিচালক। আবাসিক এলাকায় কোন কলকারখানা থাকতে পারবে না এটা পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়ম। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার হীরাঝিল, সিআইখোলা, পাইনাদি, মিজমিজি, ওয়াপদা কলোনী ও আটিগ্রামসহ অন্তত দশটি আবাসিক এলাকায় কয়েক দশক ধরে চলছে অস্যংখ্য চুন কারখানা। শুধু তাই নয়, রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া, সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর, পিরোজপুর ও মেঘনাসহ আশপাশের আবাসিক এলাকায়ও অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে অন্তত আরও আট-দশটি চুন কারখানা। এসব কারখানায় শ্রমিকদের জন্য নেই কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বছরের পর বছর বিষাক্ত কেমিক্যালের সাহায্যে পাথর পুঁড়িয়ে চুন উৎপাদনের কাজ করে যাচ্ছেন অন্তত সাড়ে ছয়শ শ্রমিক। পরিবেশ অধিদপ্তরের সূত্র জানিয়েছে, পরিবেশ দূষণকারি এসব চুন কারখানাগুলোর ছাড়পত্রের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর পরিবেশ অধিদপ্তর নতুন করে নবায়ন না করায় অবৈধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আবাসিক এলাকা থেকে চুন কারখানা স্থানান্তত করতে পরিবেশ অধিদপ্তর নোটিশ দিলেও মালিকরা মানছেন না। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারের নিষেধাজ্ঞা ও সমস্ত নিয়ম উপেক্ষা করে চুন কারখানাগুলোতে বিষাক্ত কাঁচামাল ও পাথার পুঁড়িয়ে দিনের পর দিন উৎপাদন হচ্ছে চুন। চুল্লি থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাস, পাউডার ও কালো ধোঁয়ায় প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। এর উত্তাপ ছড়াচ্ছে বাসাবাড়িতে। ফলে নানা ধরণের মরণব্যাধিতে আক্তান্ত হয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছেন স্থানীয় এলাকাবাসীসহ কয়েক লাখ মানুষ। নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের রেজিষ্ট্রার ডা: আমিনুল ইসলাম বলেন, চুন কারখানা থেকে নির্গিত বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়ায় শ্বাস কষ্ট, হাপানি, এ্যাজমা ও দীর্ঘমেয়াদী নানা রোগ সহ ক্যান্সারও হতে পারে। চোখের দৃষ্টিশক্তিও নষ্ট হতে পারে। তাই আবাসিক এলাকায় চুন কারখানায় উৎপাদন মানুষের জীবনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। পরিবেশ দূষণ ও মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সের নতুন করে নবায়ন না পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি বাংলাদেশ চুন কারখানা মালিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আনোয়ার ইসলাম। সিদ্ধিরগঞ্জের কয়েকটি চুন কারখানায় গেলেও কথা বলেন নি মালিকপক্ষের কেউই। তবে নোটিশ দেয়ার দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও চুন কারখানার মালিকরা তাদের কারখানাগুলো সরিয়ে না নেয়ায় কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, অচিরেই আবাসিক এলাকার সকল চুন কারখানার বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আমরা তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। বাংলাদেশ চুন কারখানা মালিক সমিতি ও পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে সরকার অনুমোদিত ৩৫টি চুন কারখানার মধ্যে ১৭টি কারখানাই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গড়ে উঠেছে। এগুলোর মধ্যে বর্তমানে চালু আছে ১৫টি কারখানা। তবে লাইসেন্সের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া কারখানাগুলোকে পরিবেশ অধিদপ্তর নতুন করে নবায়ন না করায় এগুলো এখন অবৈধ হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা