আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | রাত ৮:০৭

শিক্ষার্থীর আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিলো শিক্ষক

ডান্ডিবার্তা | ২৩ জুলাই, ২০২৩ | ১২:২৫ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট সিদ্ধিরগঞ্জে একটি কোচিং সেন্টারের শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানী ও শিক্ষার্থীর আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটে কদমতলী পশ্চিমপাড়া (প্রধান মসজিদ সংলগ্ন) এলাকায় অবস্থিত ‘অল কেয়ার একাডেমী’ কোচিং সেন্টারে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি জিডি করেন। অভিযুক্ত লম্পট শিক্ষকের নাম আলী আকবর। তিনি কদমতলী নয়াপাড়া এলাকার খান বাড়ির ভাড়াটিয়া জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানাধীন গাজীপুরে। এদিকে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তা চাইলে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। স্থানীয় ও বিভিন্ন ভুক্তভোগী অভিযুক্তের বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডসহ ‘অল কেয়ার একাডেমী’ কোচিং সেন্টারের প্রতিষ্ঠা প্রতিষ্ঠাতা মো. আলী পলাশেরও বিভিন্ন অপকর্ম তুলে ধরেন। তাদের মতে ওই কোচিং সেন্টারে শিক্ষাদানের অন্তরালে কোমলমতী শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে প্রলুব্দ করে অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে ফেলে। কৌশলে এসব অনৈতিক কর্মকান্ড ভিডিও ধারণ করে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে রাখে। কোচিং সেন্টারের শিক্ষক এবং প্রতিষ্ঠাতার এমন কর্মকান্ডে অভিভাবক এবং স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। অবিলম্বে উক্ত প্রতিষ্ঠানটি বন্ধে প্রশাসনিক নজরদারি এবং হস্তক্ষেপ দাবি করছেন সচেতন মহল। এদিকে ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ জিডি করার ১০ দিন অতিবাহিত হলে এসআই নয়ন এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেননি এবং অভিযুক্ত আকবর প্রকাশ্যে থাকলেও তাকে গ্রেপ্তার করেননি। উল্টো তাকে অভিযুক্তের সাথে একাধিকবার আলাপরত দেখা গেছে। জানা গেছে, অল কেয়ার একাডেমীতে শিক্ষকতা করাকালীন ২০২০ সালের দিকে অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে মো. আলী আকবর (২৪) নামে এক শিক্ষক। দীর্ঘদিন সম্পর্ক চলাকালীন ওই ছাত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয় আলী আকবর। পরে ওই ছাত্রীর আপত্তিকর ও নগ্ন ছবি নিজের মোবাইল ফোনে ধারণ করে আলী আকবর। এছাড়া সম্পর্ক চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে ওই ছাত্রীর কাছ থেকে মোবাইল ফোনে চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে অসংখ্য নগ্ন ছবি সংগ্রহ করে সে। দীর্ঘ দুই বছর পর তাদের সম্পর্কের অবনতি হলে দু’জনেই সম্পর্ক ছিন্ন করে। এদিকে চলতি বছরের জুলাই মাসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্ট্রাগ্রামে ঐ ছাত্রীর নাম ব্যবহার করে একটি ভুয়া আইডি থেকে ঐ ছাত্রীর নগ্ন ও আপত্তিকর একাধিক ছবি প্রচার করা হয়। যা বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রয়েছে। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর দাবি, ইন্ট্রাগ্রামে প্রচার করা ঐ আপত্তিকর ছবিগুলো আলী আকবরের কাছেই সংগৃহীত ছিল। যা সে নিজে অথবা অন্য কারো মাধ্যমে প্রচার করছে বলে ধারণা ভুক্তভোগী ছাত্রীর। এ বিষয়ে অভিযুক্ত আলী আকবরের সাথে কথা হলে তার মোবাইলে ওই ছাত্রীর আপত্তিকর ছবি ছিল বলে সে অপকটে স্বীকার করে। কিন্তু সে উক্ত ছবিগুলো ঐ ছাত্রীর সাথে সম্পর্ক থাকাকালীন সময়েই মোবাইল থেকে মুছে ফেলেছে বলে জানায়। তার কাছ থেকে এসব ছবি প্রচার করা হয়নি বলে দাবি করে। তাছাড়া আলী আকবরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিক ছাত্রীর সাথে তার প্রেম সংক্রান্ত এবং আপত্তিকর অসংখ্য ছবি দেখা গেছে। পাশাপাশি অসংখ্য ছাত্রীর সাথে তার প্রেম সংক্রান্ত চ্যাটিংও পাওয়া গেছে। কদমতলী এলাকায় আলী আকবরের পরিচিত একাধিক যুবকের সাথে কথা হলে আলী আকবরের চারিত্রিক সমস্যার কথা অনেকেই স্বীকার করে। বর্তমানে আলী আকবর তার নিজ বাসার একটি কক্ষে একাদশ শ্রেণীর একাধিক ছাত্রীকে কোচিং করায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আলী আকবরের পরিচিত একাধিক যুবক জানায়, অল কেয়ার একাডেমীতে শিক্ষকতা করাকালীন আলী আকবর প্রতিটি ব্যাচের একাধিক মেয়ের সাথে নানা কৌশলে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে। এছাড়া আলী আকবর অনেক ছাত্রীকে তাদের বাসায় গিয়েও প্রাইভেট পড়ায়। এ সুযোগেও সে অভিভাবকদের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করে তাদের মেয়েদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে। ছাত্রীদের সাথে এমন একাধিক ঘটনা জানাজানি হলে অল কেয়ার একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা নিজেকে ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাচাতে আলী আকবরকে তার কোচিং সেন্টার থেকে শিক্ষকতার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়। অল কেয়ার একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা মো. আলী পলাশ বেশ কয়েক বছর পূর্বে ঢাকার বনশ্রীতে এক ছাত্রীকে বাসায় গিয়ে প্রাইভেট পড়ানোর সুবাদে পলাশ তার আরেক বন্ধুর সাথে ঐ ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করিয়ে দেয়। পরে পলাশের সহযোগীতায় তার বন্ধু ঐ ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যায়। ওই ছাত্রীর পরিবার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পলাশ সহ তার বন্ধুর নামে মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় পলাশ জেলও খেটেছে। এ ঘটনা ছাড়াও কোচিং সেন্টারে একাধিক ছাত্রীর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের ঘটনায় এলাকায় পূর্বে একাধিকবার চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছিল। পরে সেসব ঘটনা বিভিন্ন কৌশলে ধামাচাপা দেয় পলাশ। এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে এ ধরণের সকল কোচিং বাণিজ্য প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে বন্ধ করা জরুরী। পাশাপাশি এমন অপকর্মে লিপ্ত এসব নামধারী শিক্ষকদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি জোরদার করা উচিৎ। কেননা এমনটা চলতে থাকলে তরুণ সমাজ অবক্ষয়ে নিমজ্জিত হয়ে পড়বে। এ বিষয়ে কথা বলতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মশিউর রহমান নয়নের মোবইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। অভিযোগ বা জিডির বিষয়গুলো তদন্তকারী অফিসাররাই বলতে পারেন। মামলার বিষয়ে কোনো কিছু থাকলে সেটি আমি তথ্য দিতে পারবো।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা