আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | রাত ১০:০৯

জেলা বিএনপিতে বিভক্তি স্পষ্ট

ডান্ডিবার্তা | ২৪ জুলাই, ২০২৩ | ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির রাজনীতিতে পদ পদবীতে পিছিয়ে থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদ। তাদের দুই জনের অনুসারিরা আলাদা আলাদা ভাবে কর্মসূচি পালন করছে। এতে করে জেলা বিএনপিতে বিভাজন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিএনপি দলীয় ঘোষিত প্রত্যেকটি কর্মসূচিতেই তার সরব উপস্থিতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। মামুন মাহমুদ ও তার অনুসারীরা নিজেদের অবস্থান জানান দিয়ে আসছেন যা আগামী দিনে মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের জন্য চিন্তার কারণ হিসেবে আবির্ভাব হতে যাচ্ছে। দলীয় সূত্র বলছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জেও পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আর এই পদযাত্রা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুলাই দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত যেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির দখলে ছিলো যেন নারায়ণগঞ্জের রাজপথ। এই দখলের ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদও বেশ সরবতা দেখিয়েছেন। এদিন বিকেল তিনটায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন প্রাপ্ত নেতা মামুন মাহমুদ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ মহাসড়কের জালকুড়ি এলাকা থেকে পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করেন। সেই সাথে সাইনবোর্ড এলাকায় গিয়ে তাদের এই কর্মসূচির সমাপ্ত করা হয়। আর এই কর্মসূচিতে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা এলাকার বিএনপি সহ বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বিশাল লোক সমাগম হয়। প্রখর রোদেও নেতাকর্মীদের স্বতস্ফূর্ততার কোনো অভাব ছিলো না। আর এই পদযাত্রা কর্মসূচি চলাকালিন সময়ে ঘণ্টাখানেক সময়ের জন্য ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ মহাসড়ক তাদের দখলেই ছিলো। এই কর্মসূচিতে ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ হাসান রোজেল, ফতুল্লা থানা বিএনপি নেতা একরামুল কবির মামুন ও নজরুল ইসলাম পান্না মোল্লা সহ জেলা বিএনপির সাবেক পদধারী নেতারা। এর আগে ১২ জুলাই নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশের মধ্য দিয়ে সরকারবিরোধী একদফা আন্দোলনের চূড়ান্ত ঘোষণা দেয় বিএনপি। এদিন বেলা ২টায় সমাবেশ শুরু হয়। সে লক্ষ্যে বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনকে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে সমাবেশে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। সেই সাথে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তদেরও নির্দেশনা দেয়া হয় লোকবল নিয়ে সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য। তাদেরকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিজের শক্তিমত্তা প্রদানের সুযোগ করে দেয়া হয়। তারই ধারবাহিকতায় বিএনপির এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা শোডাউন করে থাকেন। একই সাথে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও আলাদা আলাদা শোডাউন করে থাকেন। আর এই শোডাউননের মধ্য দিয়ে মামুন মাহমুদও নিজেকে নজরে এনেছেন। তার সংসদীয় এলাকার বিভিন্ন থানা কমিটির সাথে চ্যালেঞ্জ করে নেতাকর্মী সমর্থক নিয়ে হাজির হয়েছেন। সেই সাথে থানা কমিটির থেকে তার লোকবলেও সংখ্যাও কম ছিলো না। বরং পদ পদবীর বাইরে থেকে তুলনামূলকভাবে তিনিই বড় শোডাউন করেছেন। তার আগে গত ৯ জুলাই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৭ নেতাকে কেন্দ্রে ডেকে নিয়ে সভা করেছেন। তাদের মধ্যে ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ হতে মামুন মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন। এসময় তারেক রহমান এসকল নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আপনাদের সকলে গত নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছেন কেউ প্রত্যাশী ছিলেন। আপনাদের সকলের নিজস্ব একটি বলয় আছে কর্মীবাহিনী আছে। রাজনীতির বাইরেও সামাজিক পরিচয় আছে। সে কারণেই এবার ১২ জুলাই সবদিক মিলিয়ে ঢাকায় আসতে হবে চমক দেখাতে হবে। আগামীতে ইনশাল্লাহ সকলকে মূল্যায়ন করা হবে। তারেক রহমানের সাথে এই বৈঠকের পর এসকল নেতারা সকলেই নতুন উদ্যমে জেগে উঠেছেন। তাদের অনুসারীরা নতুন করে প্রেরণা পেয়েছেন। দলের বাইরে গিয়ে প্রত্যেকেই নিজের অনুসারীদের নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে সভা করেছেন। সভায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য তারেক রহমান তাদের উপড় কতটুকু আস্থা রেখেছে সেটা জানিয়েছেন। আর এই বক্তব্য শুনে এসকল নেতাদের অনুসারীরা তাদের নেতাদের ঘিরে আরও বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়িতে ঈদ পুনর্মিলনীর নামে প্রস্তুতি সভা করেছিলেন। যেখানে তারা বিপুল পরিমাণ নেতাকর্মী নিয়ে সমাবেশে উপস্থিত হবেন বলে জানিয়েছিলেন। সেই সাথে সমাবেশের দিন মামুন মাহমুদ তার কথা অনুযায়ী বিপুল পরিমাণ নেতাকর্মী নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। এভাবে একের পর এক কর্মসূচিতে মামুন মাহমুদ সহ ও তার অনুসারীরা নিজেদের সরবতার জানান দিয়ে আসছেন। সেই সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির তার শক্ত অবস্থানও গড়ে তুলছেন। যা আগামী দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তার অনুসারীরা সকলেই ঐক্যবদ্ধভাবে জেগে উঠবেন। অথচ তার আসনে ইতোমধ্যে শক্ত অবস্থান গেড়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। তার বিপরীতে মামুন মাহমুদও নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। জানা যায়, গত বছরের ১৫ নভেম্বর বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ৯ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আর এই কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন গোলাম ফারুক খোকন। সেই সাথে কমিটিতে ১ম যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে ছিলেন মামুন মাহমুদ। আর এই কমিটি ঘোষণার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ব্যানারে তিনি আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছেন। কোনো কর্মসূচিতেই তাকে একসাথে দেখা যায়নি। এভাবে বাইরে থাকতে থাকতে মামুন মাহমুদ এবার জেলা বিএনপি থেকেই বাহির হওয়ার প্রক্রিয়ায় ছিলেন। কোনো থানা কমিটিতেই তার অনুসারীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। সবশেষ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলকে কেন্দ্র করেও মামুন মাহমুদ বঞ্চিত হয়েছেন। জেলা বিএনপির সভাপতি প্রার্থী হিসেবে তার প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার ইচ্ছা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তিনি প্রতিদ্বন্দ্বীতা থেকে বিরত রেখেছেন। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে গেছেন তার প্রতিপক্ষ অবস্থানে থাকা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। তবে ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে মামুন মাহমুদ আবার নিজেকে জাহিরের সুযোগ পেয়েছেন। যা আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাবনা এনে দিয়েছে। সেই সাথে তিনি কর্মসূচির মাধ্যমে তার সম্ভাবনাকে উজ্জল করে তুলছেন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা