আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | সন্ধ্যা ৬:১৫

কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ!

ডান্ডিবার্তা | ০২ আগস্ট, ২০২৩ | ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে উত্তপ্ত নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির মাঠ। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে দায়িত্বশীল নেতাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে উত্তেজনা ততই বাড়ছে। এদিকে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে তা ক্ষমতাসীন দল নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম. বাহাউদ্দিন নাছিম গত সোমবার নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন, বাংলাদেশকে তারা ধ্বংস করতে চায়। বাংলাদেশে সন্ত্রাসী রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। এ সন্ত্রাসী রাজনীতি বিএনপি জামায়াত কায়েম করেছে। এ সন্ত্রাসী, আগুনের, খুনের রাজনীতি আমরা কোনোভাবে করতে দেব না। আমরা উন্নয়ন ও শান্তির কর্মসূচি করছি। এসব কর্মসূচি নিয়ে আমরা সজাগ থাকি বাংলাদেশের মানুষের শান্তির জন্য। এ দায়িত্ব পালনের জন্য আমাদের এদেশের মানুষ ম্যান্ডেট দিয়েছে। এখনও এ সন্ত্রাসীদের আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। একদিনে আমরা শান্তি সমাবেশ করেছি তাই বাংলাদেশে তারা কোথাও নাশকতা করতে পারেনি। তিনি আরও বলেছিলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হুমকি দেয় তাদের দেখে নেবে, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের হুমকি দেয় তারা চাকরি করতে পারবে না। তোমরা যদি রাজনীতি কর আমরা বাধা দেব না। তবে যদি ভয় দেখিয়ে সন্ত্রাসী কর, নৈরাজ্য কর আমরা বাংলাদেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করবে, প্রতিরোধ করবে। কোনো ভাইয়ের স্লোগান নয় আমাদের স্লোগান হবে একটাই জননেত্রী শেখ হাসিনার স্লোগান। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের ভালোবাসাকে পুঁজি করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা যদি মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা ধরে রাখতে পারি আমাদের কোনো শত্রু আমাদের কিছু করতে পারবে না। ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান গত সোমবার নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন, ওরা একটা মরণ কামড় দেবে। এ মরণ কামড় ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য না। ওরা নির্বাচনকে বন্ধ করতে চায় কারণ জানে নির্বাচন হলে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এখন আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার সময় এ ছাড়া কোনো পথ নেই। সামনে কঠিন সময় আছে। অনেকে বুঝতেছে না। আঘাত করা হবে। নারায়ণগঞ্জ তৈরি হন, আমাদের তৈরি হতে হবে। আমাদের পূর্বপুরুষরা যারা আওয়ামী লীগ সৃষ্টি করেছিল তাদের মতো আমাদের লড়তে হবে। আমেরিকায় যেমন একা ছিলাম কিন্তু দেখেছেন কিভাবে রুখেছি। আমি বিশ্বাস করি কর্মী যদি সাচ্চা হয় তাহলে শামীম সাচ্চা। নেতা বেঈমানি করে কর্মী কখনো বেঈমানি করে না। শামীম ওসমান আরও বলেন, আমেরিকায়ই ওদের ছাড় দেইনি। আর বাংলাদেশে ছাড় দেবো? বয়স যাই হয়েছে এখন আর চিন্তা করি না। মানুষ একবার মরে, দুইবার মরে না। শকুনরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে এসেছে। এটা আমাদের মাতৃভূমি এ মাতৃভূমিকে হত্যা করতে চায়। যেভাবে জাতির জনককে হত্যা করা হয়েছিল সেভাবে শেখ হাসিনাকে মারতে চায়। শেখ হাসিনা আমাদের আগামী দিনের স্বপ্ন। তিনি শুধু আওয়ামী লীগের সম্পদ নয় তিনি আমাদের প্রজন্মের সম্পদ স্বপ্ন। এ স্বপ্নকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আড়াইহাজার আসনের সংসদ সদস্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু গত সোমবার নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন, আমরা বিএনপির নীল নকশাকে কখনেই সফল হতে দিবে না। তাদের সন্ত্রাসী ও নৈরাজ্য কর্মকা-ের কবর রচনা করবো। নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের প্রতিটি কমিটি শক্তিশালী আছে, আগামীতেও থাকবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ গত সোমবার সাইনবোর্ডর পাসপোর্ট অফিসের সামনে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির জনসমাবেশে বক্তব্যে রাখতে গিয়ে বলেছিলেন, স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের অত্যাচারে দেশের মানুষ আজ ভালো নেই। আমাদেরকে আন্দোলন করতে হবে আন্দোলনের কোন বিকল্প নাই। গত রবিবার পুলিশের গুলিতে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি টিটু গুলিবিদ্ধ হয়ে এক চোখে অপারেশন করা হয়েছে। আপনারা অনেকেই জানেন এবং শুনেছেন। এভাবে সারা বাংলাদেশে আমাদের শত শত ভাইদেরকে গুলিবিদ্ধ করা হয়েছে। আবার অনেকে আমাদেরকে ছেড়ে চিরতরে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এই স্বৈরাচারী সরকার যে অন্যায় অত্যাচার করছে তা কি আর প্রশ্রয় দেওয়া যাবে। তিনি বলেছিলেন, আমাদের নেতা এদেশের কোটি মানুষের স্পন্দন এদেশের বীর জননেতা তারেক রহমান যে আন্দোলনে ডাক দিয়েছে সেটা কি এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনার পদত্যাগ। শোনেন হাসিনাকে বিতাড়িত করতে হবে আমাদের মধ্যে কোন ভেদাভেদ নেই। আমরা সবাই এক আমাদের মধ্যে কোন সমস্যা নেই। আমরা একসাথে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাবো ইনশাল্লাহ। আমাদের আদেশ কে দিয়েছেন জননেতা তারেক রহমান সেই আদেশ আমাদেরকে পালন করতেই হবে। তিনি আরও বলেছিলেন, শোনেন এখন যদি আপনারা প্রতিবাদ না করেন সামনে কিন্তু আরও কঠিন বিপদ আসতাছে। মনে রাখবেন ভাইয়েরা অন্যায় কারী ও অন্যায় সহ্যকারী সমান অপরাধ। সুতরাং অন্যায় করা যাবে না অন্যকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। আমরা আড়াইহাজারবাসীসহ সকলে মিলে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে এই স্বৈরাচারী সরকারকে পতন ঘটাবো ইনশাল্লাহ। গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করে বাংলাদেশের মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিব। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন গত সোমবার সাইনবোর্ডের পাসপোর্ট অফিসের সামনে জেলা বিএনপির জনসমাবেশে বক্তব্যে রাখতে গিয়ে বলেছিলেন, এই অবৈধ সরকারের অবৈধ এমপি বলেন বিএনপি কখনো ক্ষমতার মুখ দেখতে পারবে না। আমরা তাকে বারবার বলেছি আমরা ক্ষমতায় আসার জন্য নয়, সাধারণ মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করছি। তাদের বলতে চাই পুলিশ ছাড়া একবার আসেন তো, পারলে আমাদের মোকাবেলা করেন। তখন আপনারা পালানোর কোনো পথ পাবেন না। পুলিশ ছাড়া আসার মতো ক্ষমতা আপনাদের নারায়ণগঞ্জের কারো নেই। কারণ আপনি গডফাদার নামে পরিচিত। যারা তার হয়ে লুটপাট করে, টেন্ডারবাজি করে শুধু তারাই এখন আপনাদের সঙ্গে রয়েছে। গিয়াসউদ্দিন আরও বলেছিলেন, আমরা আপনার নেতার ধমকি ভয় পাই না। আপনার নেতা যখন পালিয়ে যাবেন আপনারা একজনও তার সঙ্গে যেতে পারবেন না। সবাইকে রেখে পালিয়ে যাবেন তিনি। আপনারা যারা রক্তচক্ষু দেখাচ্ছেন এইসব ভিডিও আমাদের কাছে থাকছে। এগুলোর হিসাব একদিন জনগণের কাছে দিতে হবে। এই গডফাদারের সঙ্গে যারা আছেন তারা সতর্ক হয়ে যান। আমাদের নেতাকর্মীদের পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেন, আপনারা তাদের কাছে নাম দিয়ে মামলা করান। এগুলোকে আমরা ভয় পাই না। আপনাদের এই ভুয়া নেতা একদিন আপনাদের ছেড়ে চলে যাবেন। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান গত ৩১ জুলাই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে সভাপতি হিসেবে বক্তব্যে রাখতে গিয়ে বলেছিলেন আজকে এই বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার নেই। আমাদের এই আন্দোলন দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য। দেশে দ্রব্যমূল্যের যে উর্ধ্বগতির মাধ্যমে এদেশে ৭৪’র দূর্ভিক্ষের প্রতিধ্বনি প্রতিহত করার জন্য আমাদের আন্দোলন। এই সরকার থাকলে এদেশে আবার দূর্ভিক্ষ হবে। এই সরকার শেখ হাসিনার সরকার তাকলে এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার থাকবে না। শেখ হাসিনার সরকার থাকলে দেশে খুন গুম হত্যা নির্যাতন হবে, দেশের হাজার হাজার মানুষ নির্যাতণের শিকার হবে, মিথ্যা মামলায় জেলে যাবে। তিনি বলেছিলেন, আজকের সমাবেশ থেকে বলতে চাই, সরকারের কর্মকান্ডের সমালোচনা করা, সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা মানুষের রাজনৈতিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, আজকে সেই সাংবিধানিক অধিকারকে সরকার কেড়ে নিতে চায়। আপনারা দেখেছেন গত রবিবার তারিখে সরকার হায়ানার মত ঢাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর সরকারের পেটুয়া পুলিশ বাহিনী, পুলিশের ছদ্ধবেশে যুবলীগ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ডিবির পোশাক পরে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে, গুলিবর্ষণ করেছে, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে। তিনি আরও বলেছিলেন, ১৯৭৪ সালে লাল বাহিনী, নীল বাহিনী রক্ষীবাহিনী গঠন করেছিলেন। রক্ষাবাহিনী গঠন করেও আপনাদের পতন রক্ষা করতে পারেন নাই। যতই নির্যাতন করবেন ততই পতন আপনাদের সামনের দিকে আসবে। নির্যাতন করে দেশের মানুষকে পশ্চিম পাকিস্তানীরাও ধমিয়ে রাখতে পারে নাই, দেশকে স্বাধীন করেছিলো। দেশের মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে জানে, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আন্দোলন করছেনা, আন্দোলন করছে দেশের মানুষের ভোটের অধিকার রক্ষার জন্য, গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক ছাত্রনেতা মাশুকুল ইসলাম রাজিব গত সোমবার সাইনবোর্ডের পাসপোর্ট অফিসের সামনে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির জনসমাবেশে বক্তব্যে রাখতে গিয়ে বলেছিলেন, আপনারা আমাদের সূর্য সৈনিকদের বিরুদ্ধে মামলা করে কি প্রমাণ করতে চান? আমাদের নেতারা এসব মামলা ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে। আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রামের যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার পড়বে সেটা হলো সুশৃঙ্খল বিএনপি। মনে রাখতে হবে কেবল একটি সুশৃঙ্খল বিএনপির পারে এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটাতে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা