আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | রাত ১০:১০

হামলা-মামলায় থামছে না বিএনপি

ডান্ডিবার্তা | ০৬ আগস্ট, ২০২৩ | ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট শক্তি প্রদর্শন করে মাঠে রয়েছে বিএনপি। জেলা ও মহানগর বিএনপি’তে এই মুহূর্তে কোন বলয় নেই। সবার একটাই লক্ষ্য বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা। সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে দলের তরুণ নেতারা বলেছেন, আমরা কোন বিভাজন চাই না। সে কারণেই গত এক সপ্তাহ ধরে উত্তাল নারায়ণগঞ্জ। গত ২৮ জুলাই রাজধানীতে সমাবেশ। পরদিন সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, গুলিতে আহত হন কয়েকজন। চোখ হারানোর উপক্রম ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতির। কিন্তু তার পরেও থামছে না বিএনপি। পরদিন আবার ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড বন্ধ করে সমাবেশ। গত ২ আগস্ট দলের ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রায় নিয়ে শহরে বিক্ষোভ, রাত পোহাতেই গত ৩ আগস্ট শহরে সমাবেশ করলো ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল। বিএনপি নেতারা দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এক সাথে লড়াই করবো। এক সাথে রাজপথে নামবো। জেল জুলুমকেও পরোয়া করিনা। জেলও খাটবো এক সাথে। আমাদের দমানোর আর কোন পথ নেই। আমরা সব পরিস্থিতির জন্য তৈরী। কেন্দ্র থেকে আমাদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ নির্দেশনা দিচ্ছেন। আসলে এই নারায়ণগঞ্জ থেকেই চূড়ান্ত আন্দোলন দানা বাঁধতে পারে। পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তার ঠিক নেই। আমরা এখন পরিণতির ভয় করি না। সবাই একমত হয়েই রাজপথে নামতে পারছি। আমাদের ঐক্য সরকারী দলের পান্ডাদের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে। মহানগর বিএনপি’র কয়েকজন সিনিয়র নেতা বলেন, আমরা রাজপথে নেমেছি। কোন কিছুকে পরোয়া করি না। তবে জনগণের ক্ষতি হয় এমন কিছু থেকে আমরা বিরত থাকবো। বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা কিছু না করলে অবস্থা এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে, ক’দিন বাদে সাধারণ মানুষই রাস্তায় নামবে। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি শেষ হয়ে যায়নি দাবি করে প্রবীণ নেতারা বলেন, কোন ভাই কিম্বা নেতার জন্য দল আটকে থাকবে না। এমনটা যারা ভাবেন। তারা স্বার্থপর বলেই ভাবেন। আমরা বুঝে গেছি এই ডিজিটাল যুগে দলকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ও নেতাকর্মীদের ধরে রাখার জন্য কেমন নেতা দরকার। কাকে নেতৃত্বে বসানো যায়। এখন সাধারণ কর্মীরাই বলতে পারে শহরের ২নং রেলগেইট এলাকায় সভা করতে গেলে কোন নেতাকে দরকার। আবার চাষাঢ়া শহীদ মিনারে সমাবেশ করতে গেলে কোন কোন নেতাকে উপস্থিত থাকতে হবে। অর্থাৎ কর্মীরাই দলের প্রকৃত শক্তি। জেলা বিএনপি’র সব নেতাই এই মূহুর্তে কর্মী হিসেবে দলের জন্য কাজ করছেন। মাঝখানে ঝিমিয়ে পড়েছিলেন। কোন সাড়া পাওয়া যেতনা। ঝড় ঝাপটাতো আর কম যায়নি। এক কোভিড পুরো বিশ্বকেই দিয়েছিল অচল করে। আমরাতো বিরোধী দল। অনেক কষ্টে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পেরেছি। এই মহান আল্লাহর পাকের দরবারে শুকরিয়া আদায় করি। গত ২৯ জুলাই বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা মহাসড়কে জড়ো হতে চাইলে পুলিশ তাদের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ অন্তত ৩০ রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। এসময় বিএনপির পাঁচ নেতাকে আটক করা হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় ২৩ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত আরো ৪শ’ জনকে আসামী করা হয়েছে। মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন ও তার দুই ছেলে কাউন্সিলর সাদরিল, কৃষক দল নেতা রিফাতকেও এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগরেরও নামও রয়েছে এজাহারে। মামলার আসামিরা হলেন সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এইচএম আনোয়ার প্রধান (৪৭), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য মোঃ জসিম উদ্দিন (৪০), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ২নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রচার সম্পাদক মোঃ ফারুক (৪৫), মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সাগর প্রধান (৪২), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য ইউসুফ আলী (৬০), গজারিয়া থানা ছাত্রদলের সভাপতি মাহাদী ইসলাম বাবু (৩৫), মুন্সিগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সভাপতি মো. আবুল হাসেম (৩৪), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মোঃ মাজেদুল ইসলাম (৫৮), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি জিএম সাদরিল (৪০), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন (৪৫), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি যুগ্ম সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন স্বাধীন (৪৭), জামায়াতে ইসলামের সদস্য জয়নাল আবেদীন ফারুক (৩৮), সিদ্ধিরগঞ্জ ২নং ওয়ার্ড বিএনপির মোহাম্মদ আলী, ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ সভাপতি মোঃ সুবেদ আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সোলাইমান পলাশ (৩৫), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুব দল সদস্য আনোয়ার হোসেন সানি (৩৮), জাকির হোসেন (৪৫), মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক রাকিবুর রহমান সাগর (৩৬), আতিক টেম্পু আতিক (৪২), মোঃ আতিকুর রহমান প্রধান (২৩), কামরুল হাসান সেন্টু (৪০), জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব মোঃ রিফাত (৩০)। পুলিশের গুলিতে চোখে গুরুতর আঘাত পান জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক এবং ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু। চোখে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই তিনি বাম চোখে কিছুই দেখতে পারছেন না। এই প্রতিবেদককে দেওয়া বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত শনিবার আমরা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সিদ্ধিরগঞ্জে ডাচ বাংলা ব্যাংকের মোড়ে কেন্দ্রীয় বিএনপি ঘোষিত ঢাকার প্রবেশ পথে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলাম। সেইখানে বিনা উস্কানিতে আমাদের ওপর গুলি করা হয়। তাদের কারণে আজ আমাদের এক বিএনপির নেতার দুটো চোখ নষ্টের পথে। টিটুর চোখে গুলি নিয়ে আমি আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি জানাচ্ছি। পুলিশ দ্বারা এ গুলির প্রমাণপত্র আমরা কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাদের কাছে জমা দিয়েছি। এগুলোর আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করা হচ্ছে এবং সেই সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। এদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি, শান্তিপূর্ণভাবে তারা সেদিন মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশ নির্বিচারে হামলা করে নেতাকর্মীদের আহত করেছেন। অন্যদিকে পুলিশের দাবি, সেদিন বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের উদ্দেশ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে তারা ৩০ রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করতে বাধ্য হয়। জানা যায়, এ ঘটনায় টিটু ছাড়াও আহত হোন বিএনপির আরও ২১ নেতাকর্মী। তবে তারা বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন। এদিকে আহত শহীদুল ইসলাম টিটুর বিষয়ে উদ্বিগ্ন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা সার্বক্ষণিক আহত টিটুর খোঁজ খবর নিচ্ছেন বলে জানা যায়।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা