আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | ভোর ৫:১১

বির্তকের শীর্ষে মহানগর বিএনপি!

ডান্ডিবার্তা | ০৯ আগস্ট, ২০২৩ | ১২:৪৪ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষণার পর থেকেই একের পর এক ঘটনায় বিতর্কিত হয়ে আসছেন আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আল ইউসুফ খান টিপু। সবশেষ টাকা নিয়ে কেলেঙ্কারীর ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতার্মীদের মুখে তীব্র সমালোচনার ঝড় বইছে। কোনো নেতার কারণে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট হবে এটা কেউই মেনে নিতে পারছেন না। তারা এ বিষয়টিকে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে স্বচ্ছতা আনার দাবী জানিয়েছেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকার বিভিন্ন কমসূচিকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় বিএনপির কাছ থেকে দুইবারে ৮ লাখ টাকা অনুদান আনেন সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু। নেতাকর্মীদের মধ্যে সেই টাকা বন্টনের কথা বলা হলেও পরবর্তীতে সেই টাকা বন্টন না করেই নিজেই পকেটবন্দী করেছে আবু আল ইউসুফ খান টিপু। গত ২৮ জুলাই শুক্রবার রাজধানীতে বিএনপি মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ ওই সমাবেশের আগে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কাছে নগদ ৫ লাখ টাকা পাঠানো হয়। নির্দেশ দেওয়া হয় মহানগর বিএনপি যেন টাকার যথার্থ ব্যবহার করে লোকজনের সমাগম ঘটায় সেই সঙ্গে সহযোগি সংগঠনগুলোকেও যেন সমবন্টন করে টাকা দেওয়া হয়। সেই সাথে আগের দিন ২৩টি ইউনিট কমিটিকে ৫ হাজার টাকা করে ১ লাখ ১৫ হাজার ও ১০টি সহযোগি সংগঠনকে সমসংখ্যক টাকা দেওয়া হয়। কেন্দ্রের টাকা দেওয়ার খবরটি প্রচার হয়ে গেলে সহযোগি সংগঠন ও বিএনপির শীর্ষ নেতারাও এর সমবন্টন করার দাবী তুলেন। কিন্তু সদস্য সচিব সেটা করেননি। সেই সাথে টাকার হিসেবও নেতাকর্মীদের বুঝাননি। ২৮ জুলাই ঢাকায় সমাবেশে লোকজন যোগ দিলেও পরে কাউকে এ টাকার ভাগ দেওয়া হয়নি। টাকা ঢুকে যায় শীর্ষ নেতাদের পকেটে। এর আগেও ৩ লাখ টাকা এনেছিলেন আবু আল ইউসুফ খান টিপু। সেটারও কোনো হিসেব পাননি মহানগর বিএনপির নেতারা। নেতাকর্মীদের মাঝে বন্টনও করা হয়নি। তার আগে গত ১৫ জুলাই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। সেই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব বিভিন্ন ব্যক্তিদের কাছ থেকে অনুদানও সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে সম্মেলনের আগ মুহুর্তে সম্মেলন স্থগিত করা হয়। তবে সম্মেলন স্থগিত হলেও সেই অনুদানের টাকা ফেরত দেয়া হয়নি। এভাবে একের পর এক টাকা নিয়ে কেলেঙ্কারীর ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় বইছে। মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন বলেন, এসমস্ত কারণে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। টাকা লোপাটের ঘটনায় সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। অতীতে বিএনপির এরকম কোনো দুর্নাম ছিলো না। এরা দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই টাকা, ৭ লাখ, ৮ লাখ কেন্দ্রের কোনো টাকায় নেতাকর্মীদের মাঝে বন্টন করে দেয় না। নেতাকমীরা জানেই না এই টাকার কথা। তারা গোপনীয়ভাবে এই কাজগুলো করে থাকে। বিএনপির নেতাকর্মীরা সবাই ক্ষুদ্ধ এ নিয়ে। এ বিষয়টির একটা সুরাহা হওয়া উচিত। একের পর এক অন্যায় করে যাবে এভাবে একটা দল চলতে পারে না। এটার একটা প্রতিকার হওয়া উচিত। মহানগর বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর সেন্টু বলেন, এসকল কর্মকা-ে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। কেন্দ্রের একজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে এ বিষয়ে তদন্ত করার দরকার। অতীতে আমরা কোনো আর্থিক অনুদান নেয় নাই। আমরা কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসূচি পালন করে আসছি নিঃস্বার্থভাবে। আন্দোলনের জন্য কখনও টাকার প্রয়োজন হয় না। আন্দোলনের জন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের কোনো টাকার প্রয়োজন হয় না। আমরা নিজেরাই নিজেদের খরচ বহন করি। তিনি আরও বলেন, যে মানুষ অন্যের কাছে হাত পেতে চলে তার নেতৃত্ব দেয়া উচিত না। এই ঘটনায় তদন্ত হওয়ার দরকার। দলের মধ্যে স্বচ্ছতা আসার দরকার। আমরা চাইবো না কোনো ব্যক্তির বিএনপির সুনাম নষ্ট হোক। ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদের জন্যই এই দশা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপিকে ভুল বুঝিয়েছে। আমাদের কারও সাথে কোনো রকম আলোচনা না করেই কমিটি দিয়েছেন। আব্দুস সালাম আজাদ মহানগর বিএনপিকে অথর্ব কমিটিতে রূপান্তরিত করতে চাই। তাই এই কমিটির অনুদান দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। এটা তাদের ব্যাপার। তবে বিএনপির একজন কর্মী হিসেবে চাইবো না দলের দুর্নাম হোক। এসকল বিষয় নিয়ে সঠিক তথ্য উদঘাটন হওয়ার প্রয়োজন। এর আগে ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে অ্যাডভোকেট মো. শাখাওয়াত হোসেন খান এবং সদস্য সচিব হিসেবে অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর এই কমিটি ঘোষণার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। সেই সাথে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি থেকে ১৫ জন নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষণার আগে ২০১৬ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে প্রভাবশালী মহল হতে ২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছিলেন সহযোদ্ধা টিপু। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মাঝের কয়েক বছর বিরূপ সম্পর্ক থাকলেও গত সেপ্টেম্বরে মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটি দেয়ার সময়ে মিলন ঘটে। তবে বছর না যেতেই এ কমিটির বিরুদ্ধে আবারো অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারীর অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি কমিটি ঘোষণার পর টাকার বিনিময়ে কমিটি দেয়ার অভিযোগও রয়েছে টিপুর বিরুদ্ধে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা