আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | বিকাল ৫:৪৫

না’গঞ্জ আ’লীগের দুরবস্থা!

ডান্ডিবার্তা | ১০ আগস্ট, ২০২৩ | ১২:০৮ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ দল গুছাতে ব্যর্থ ও কোন্দলের কারণে দুরবস্থায় পতিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় নারায়ণগঞ্জের কোনো নেতাই বক্তব্য প্রদানের সুযোগ পাননি। বক্তব্য দেয়ার জন্য অনেকেই প্রস্তুতি নিয়ে গেলেও কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেউই বক্তব্য দেয়ার সুযোগ পাননি। দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য প্রদানের সুযোগ পেলেও নারায়ণগঞ্জের নেতারা শুধুমাত্র অন্যদের বক্তব্য শুনেই নারায়ণগঞ্জে ফিরেছেন। বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে তাদের আবেগকে প্রকাশ করার সুযোগ পাননি। আর এই বক্তব্য না দেয়ার কারণ হিসেবে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের ব্যর্থতাকেই দায়ী করা হচ্ছে। কারণ যারা দীর্ঘ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করেও কমিটি গঠন করতে পারেনি সেই সাথে দলের মধ্যে কোন্দলেন অবসান ঘটাতে পারেনি তাদেরকেই বক্তৃতা দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি। জানা যায়, গত ৬ আগষ্ট সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গণভবনে আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের জরুরি বিশেষ বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়। আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির আহবানে এই সভার সভাপতিত্ব করেন আওয়ামীলীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সাথে জরুরী বর্ধিত সভায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি, সাংগঠনিক দ্বন্দ্ব-বিবাদ নিরসন ও সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে আরও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়া হয়। আর এই বিশেষ বর্ধিত সভায় জেলা-উপজেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ৪০ জনেরও বেশি নেতা বক্তৃতা করার সুযোগ পান। ৬ ঘণ্টার মধ্যে ১ ঘণ্টার বিরতি দিয়ে ৫ ঘণ্টাই তৃণমূল নেতাকর্মীদের বক্তব্য শোনেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সাথে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তাদের অনেকের মুখ থেকে যেমন বেরিয়ে আসে দলীয় এমপিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তেমনি বিএনপির একদফা আন্দোলন রুখে দেওয়ার অঙ্গীকারও করেন তারা। কিন্তু বক্তব্য দেয়ার সুযোগপ্রাপ্ত এই ৪০ জনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের একজনও ছিলেন না। নারায়ণগঞ্জে পাশ্ববর্তী জেলা গাজীপুর, নরসিংদী থেকে আসা নেতারা বক্তব্য প্রদানের সুযোগ পেলেও নারায়ণগঞ্জের নেতারা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। বক্তব্য প্রদানের সুযোগ না পাওয়া প্রসঙ্গে উপস্থিত নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখার সময় স্পষ্ট বলেছেন, দীর্ঘ সময় নেতৃত্ব পেয়েও যারা দলকে গোছাতে পারেনি, কোন্দল দূর করতে পারেননি এবং কমিটির ঘোষণা দিতে পারেননি তাদেরকে বক্ত্যব্য প্রদানের সুযোগ দিলাম না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতেই নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের কোনো নেতা বক্তব্য প্রদানের সুযোগ পাননি। তবে বক্তব্য প্রদানের সুযোগ না পাওয়াটা আমাদের জন্য দুভাগ্য। এটা নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য ভালো কোনো বার্তা বহন করে না। দলীয় সূত্র বলছে, দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর পর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২০২২ সালের ২৩ অক্টোবর শহরের ইসদাইর এলাকার ওসমান পৌর স্টেডিয়ামে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। আর এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন। সেই সাথে সম্মেলনের শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলকে আবারও পুনর্বহাল করা হয়েছিলো। তবে এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি তাদের দ্বারা। আর এই কমিটি ঘোষণার পর থেকেই একসাথে দেখা মিলেনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলের। প্রতিবারই তারা আলাদাভাবেই কর্মসূচি পালন করেছেন। সকালে আবু হাসনাত শহীদ বাদল তার অনুসারী অঙ্গ সহযোগী নেতাকর্মীদের কর্মসূচি পালন করলে বিকেলে আব্দুল হাই আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে কর্মসূচি পালন করে থাকেন। দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিতেও তাদের পৃথকভাবে দেখা যায়। এদিকে ২০১৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে তৎকালীন শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহাকে মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর মহানগর আওয়ামীলীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। আর এই কমিটি গঠনের প্রায় ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের অধীনে থাকা ওয়ার্ড কমিটিগুলো গঠন করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। বিভিন্ন সময় উদ্যোগ নিলেও তারা শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারেননি। সবশেষ মহানগর আওয়ামীলীগের শহর ও বন্দরের ১৮টি ওয়ার্ড সম্মেলন সম্পন্ন হয়। এসকল সম্মেলনের মধ্যে শহরে ৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬ জন স্থলে ১০জন ও বন্দরে ৯টি ওয়ার্ডে ১৮জন স্থলে ১জনকে নির্বাচিত করতে পেরেছেন মহানগরের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা। একই সাথে প্রায় সময়ই সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক দুই বলয়ে বিভক্ত হয়ে যান। প্রসঙ্গত আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় ডাক পেয়েছিলেন আওয়ামীলীগের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোঃ শহীদ বাদল, মহানগরে সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, রূপগঞ্জ উপজেলার সভাপতি ও বস্ত্র পাট মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর গাজী, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান ভুইয়া, আড়াইহাজার উপজেলার সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম সরকার, সোনারঁগা উপজেলার সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল ইসলাম ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদক কায়সার হাসনাত, ফতুল্লা থানা সভাপতি ও কাশীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম সাইফুল্লাহ বাদল ও সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী চেয়ারম্যান, বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ, জাতীয় কমিটি সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীল ও আনিসুর রহমান দীপু, ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের এমপি শামীম ওসমান, আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও পৌরসভার মেয়রগণ।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা