
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট বাংলাদেশের রাজনীতিতে আস্তে আস্তে উত্তাপ বাড়ছে আওয়ামীলীগ এবং বিএনপি দুজনই এখন মুখোমুখি অবস্থানে। তবে রাজনৈতিক সহিংসতার চেয়ে কৌশলের খেলাই লক্ষ্য করা যাচ্ছে দুই দলের মধ্যে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দু’জনই কৌশলগতভাবে একে অপরকে চমকে দেয়ার পরিকল্পনা তৈরি করছে। এই পরিকল্পনায় কে জয়ী হয় সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচন এগিয়ে নিয়ে বিএনপিকে অপ্রস্তুত করে দেয়ার একটি পরিকল্পনা আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের মধ্যে রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। কিন্তু সেপ্টেম্বর থেকে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছে এমন কথা শোনা যাচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আনা যায় কিনা সেরকম একটি আলাপ-আলোচনা আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের মধ্যে শুরু হয়েছে। অক্টোবর-নভেম্বরে নির্বাচন এগিয়ে আনা হলে এবং সেপ্টেম্বরে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে সেই নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপি সহ অন্যান্য নির্বাচন বিরোধী দলগুলো অপ্রস্তুত হয়ে যেতে পারে এমন একটি ধারণা পোষণ করছেন কেউ কেউ। আর সে কারণেই বিএনপিকে চমকে দেয়ার জন্য নির্বাচনকে এগিয়ে আনার একটি ভাবনা আওয়ামী লীগের মধ্যে রয়েছে। অন্যদিকে বিএনপিও আওয়ামী লীগকে চমকে দিতে চায়। বিএনপি প্রকাশ্যে বলছে, তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। কিন্তু এই ঘোষণার আড়ালে বিএনপি নেতারা আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন। বিএনপির কোনো কোনো মহল বলছেন যে শেষ মুহূর্তে গিয়ে বিএনপি আওয়ামী লীগকে চমকে দিতে পারে। আওয়ামী লীগের মধ্যে একটা ধারণা ক্রমশ দৃঢ় হচ্ছে যে শেষ পর্যন্ত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না এবং বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে আবার চতুর্থবার সহজে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে। বিএনপি আওয়ামী লীগের এই নিশ্চিন্ত অবস্থাকেই চমকে দিতে চায়। দীর্ঘদিন ১০ দফা নিয়ে রাজপথে ব্যাপক আন্দোলন সংগ্রাম করেছে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। গত বছর থেকেই একের পর এক দলীয় কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে তারা। আবার অপর দিকে আওয়ামী লীগ ও তাদের দলীয় কর্মসূচি মোতাবেক যেদিন বিএনপির কোন প্রোগ্রাম সেদিন শান্তি সমাবেশ পালন করে যাচ্ছে তারা। কিন্তু কোনভাবেই নানা বাধা উপেক্ষা করেই আন্দোলণে চমক দিয়ে যাচ্ছে বিএনপির নেতৃবৃন্দ। বর্তমানে সরকার পতনের একদফা নিয়ে ঢাকামুখী চূড়ান্ত আন্দোলন গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। সেই লক্ষ্যে গত ১২ জুলাই ঢাকার রাজপথে কম্পন সৃষ্টি করেছে তারা। অপর দিকে একই দিনে ঢাকার বায়তুল মোকাররমের সামনে আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ পালন করেছে। এবার আগামী ২৭ জুলাই ‘চলো চলো, ঢাকা চলো’ স্লোগান তুলে দেশের বিএনপির সকল নেতাকর্মীরা ঢাকার মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। নেতাকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী জানা গেছে, কয়েক লাখ লোকের জমায়েত ঘটিয়ে সেই মহাসমাবেশ থেকেই একদফার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি মহা-সচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়াও নেতাকর্মীরা বলছে ক্ষমতাসীনদের দিক থেকে বাধা এলে আন্দোলনের ধরন পাল্টে যেতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। সরকার পতন ও নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একদফা দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ বিএনপির নেৃতবৃন্দ এর পক্ষে সর্বোচ্চ জনগণের সমর্থনও রয়েছে। রাজপথে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত তারই প্রমাণ। দেশবাসীকে চূড়ান্ত ফলের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে এই আশা নিয়ে রাজপথে রয়েছে বিএনপির নেতৃবৃন্দ। অপর দিকে একই দিনে ২৭ জুলাই রাজধানীতে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট তিন সংগঠন। সেদিন দুপুর ২টায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটের কাছে সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ এবং দুই সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ। এই সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল পরবর্তী সমাবেশগুলোতে সে রকম পরিস্থিতি হওয়ার বিষয়টি ধারনা করা হচ্ছে দলের পক্ষ থেকে। বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানার নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি রাতে পুলিশ মহড়া দেওয়া শুরু করেছে। অনেক নেতাকর্মীর নামে গায়েবী মামলা ও হচ্ছে। অপর দিকে শান্তি সমাবেশের নামে আওয়ামী লীগ দেশে অশান্তির নৈরাজ্যে সৃষ্টি করতে চাচ্ছে এমনটাও বলছে কেউ, কেউ। বর্তমানে যেভাবে রাজপথে বিএনপি গর্জে উঠেছে টানা ১৪ বছরের ও এমনভাবে গর্জে উঠার কোন পরিস্থিতি দেখা যায়নি। বর্তমানে সরকার বিরোধী আন্দোলন সফল করতে বর্তমানে নানা কর্মসূচি রয়েছে বিনপির। তাই এবার দফায় দফায় ঢাকাকেন্দ্রিক কর্মসূচি সাজানো হচ্ছে। মহাসমাবেশের পরও ঢাকার বাইর থেকে নেতাকর্মীদের নিয়ে টানা কর্মসূচি পালনের আকাঙ্ক্ষা ও রয়েছে। যার কারণে বর্তমানে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিএনপির আন্দোলন নিয়ে আস্থা বাড়ছে। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমে আসছে। এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে তা সরকারের সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। ঢাকার মহাসমাবেশের মাধ্যমে বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনের শক্তি দেখাবে। এ জন্য পদযাত্রা কর্মসূচির পরেই মহাসমাবেশ ঘোষণা করা হয়েছে। অতীতে ঢাকায় যত মহাসমাবেশে হয়েছে, তার আগে ক্ষমতাসীনদের বাধার কারণে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে বিএনপির নেতাকর্মীরা সকল বাধা উপক্ষো করেই রাজপথে আসছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ইতি মধ্যে কয়েকবার শান্তি সমাবেশ পালন করেছে। দলীয় বিএনপির কর্মসূচি যেদিন সেদিনই তাদের দেখা গেছে রাজপথে। কিন্তু এবার বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশের মতো করেই আওয়ামী লীগের তিন সংগঠনের নেতাকর্মীরা তারুণ্যের জয়যাত্রা কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। একই দিনে সেদিন আওয়ামী লীগের মূলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকবে। আর বিশাল বিশাল শোডাউন দিবে ঢাকার রাজপথে এমনই শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই বলেন, আমরা বর্তমানে দফায় দফায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে শান্তি সমাবেশ পালন করে যাচ্ছি। আর সকল সমাবেশে দেশের সাধারণ জনগণ আমাদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে সফল করে যাচ্ছে। আর আমরা বিগত দিনে ও রাজপথে একটিভ ছিলাম বর্তমানে ব্যাপকভাবে সকল দলীয় ডাকে সারা দিয়ে রাজপথে থাকছি। আর ঢাকায় আমাদের তারুণ্যের জয়যাত্রা কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে। আর আমাদের কর্মসূচি কিন্তু শান্তিপূর্ণভাবেই পালন হয়। আমাদের নেতাকর্মীরা কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বে গিয়ে কিছু করে না। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা কিন্তু আইশৃঙ্খলা না মেনেই নানা নৈরাজ্যে সৃষ্টি করে থাকে। কিন্তু সেদিন কোন নৈরাজ্যে সৃষ্টি করতে চাইলে আমরা তাদের প্রতিহৃত করবো। আর আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে তারা ও তাদের সকল নৈরাজ্যে ভাঙ্গতে প্রস্তুত। মহানগর বিএনপির সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ তার সকল অঙ্গ সংগঠনসহ ৩৬টি দলের দাবি, শেখ হাসিনার পদত্যাগের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার দাবিতে আমরা ১ দফার আন্দোলনে আমরা রাজপথে আছি। এটা জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে, দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ দেশে একটি অরাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি কেেরত চায়। ৭১ সালে তারা যে শান্তি কমিটি তৈরি করেছিল এখান ২০২৩ সালে তারা শান্তি সমাবেশ পালন করছে। এটাতে আমাদের কোন কিছুই হবে না বিএনপির নেতাকর্মীদের স্লোগানে সেদিন ঢাকার শহর মুখরিত হয়ে উঠবে। আর বিএনপির নেতাকর্মী ও জনগণ সাধারণের শ্রোতে ভেসে যাবে এই শান্তি বাহিনীদের সমাবেশ।
হাবিবুর রহমান বাদল ষোল বছরের স্বৈরশাসনে দেশকে পঙ্গু করে শত দমন পীড়ন আর নির্বিচারে গুলি বর্ষন করে দেড় হাজারের বেশী ছাত্র-জনতাকে হত্যার পরও শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা তার গতি রক্ষা করতে পারেনি। গত বছরের ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার রোষানল থেকে বাঁচার জন্য ছোট বোন রেহানাসহ স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আত্মসমর্পণ এতটাই […]
হাবিবুর রহমান বাদল নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে। এনিয়ে সাধারণ নাগরিকরা সরব হয়ে উঠেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিভিন্ন মহল থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯