আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | রাত ১০:১২

১৬নং ওয়ার্ডের দেওভোগবাসী বঞ্চিত

ডান্ডিবার্তা | ২১ আগস্ট, ২০২৩ | ১১:৩২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নগরীর দেওভোগ পাক্কা রোড, এল এন এ রোড, ১নং বাবুরাইল, ২নং বাবুরাইল, শের এ বাংলা রোড, পুরাতন জিমখানা এলাকা নিয়ে গঠিত ১৬ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের মধ্যে রয়েছে, শেখ রাসেল পার্ক, আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তন, মর্গ্যান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, বাবুরাইল খাল, নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র-৩। সর্বশেষ আদমশুমারী অনুযায়ী, ওয়ার্ডটিতে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের বসবাস। ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলর ২নং বাবুরাইলের বাসিন্দা রিয়াদ হাসান। ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, আলী আহাম্মদ চুনকা সড়কটিতে দীর্ঘদিন যাবৎ বিশাল বিশাল গর্ত ও খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে আছে। ফলে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সড়কটিতে চলাচলকারী জনসাধারণের, প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন তারা। ওয়ার্ডের শুক্কুর কারী মসজিদ গলিতে ২/৩টি ড্রেনের স্লাব ভেঙ্গে পড়ে আছে দীর্ঘদিন, এখানেও প্রায়ই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। বেপারী পাড়া এলাকার একমাত্র সড়কটিও দীর্ঘদিন যাবৎ ভাঙ্গাচোরা অবস্থায় পতিত রয়েছে। পাক্কারোড এলাকায় প্রধান সড়কের মাঝ দিয়ে ড্রেন নির্মাণের কারণে ড্রেনের স্লাবগুলো উচু-নীচু হয়ে থাকে, ফলে পায়ে হাটা ছাড়া যানবাহনে চলাচল মুশকিল। যানবাহনে চড়লেও কোমড় ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয় সকলের। প্রতিটি পাড়া-মহল্লার ভিতরের রাস্তাগুলোই ভাঙ্গাচোরা। মেরামত হয়নি দীর্ঘদিন। সৌন্দর্য্যবর্ধনের লক্ষ্যে নির্মিত শেখ রাসেল পার্কের বিভিন্ন স্থানে দেখা যায় ময়লার স্তুপ। দৃষ্টিনন্দন রাসেল পার্কের পাশেই হকারদের আধিপত্য। রয়েছে অটো ও ইজিবাইকের স্ট্যান্ড। চুনকা সড়কটির ২নং রেলে গেইট অংশে রহমতউল্লাহ ইনিষ্টিটিউটের পুরাতন ভবন ভেঙ্গে ফেলার পর দেওভোগবাসী ভেবেছিল সড়ক প্রসস্ত হবে। কিন্তু সেখানে এখন ইজিবাইকের অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। অথচ নাসিকের এই ১৬নং ওয়ার্ডে খোদ মেয়র, কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলর বসবাস করলেও দেওভোগবাসীর কোন পরিবর্তন হয়নি। যানজট ময়লা আবর্জনা আর ভাঙ্গাচুড়া রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে দেওভোগবাসীকে। এতো এতো সমস্যায় জর্জরিত ওয়ার্ডবাসী, তবে খোঁজ নেয়ার সময় নেই নির্বাচনের আগে নানা প্রতিশ্রুতি দেয়া এই কাউন্সিলের। ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকায় নেই ময়লা আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা। এলাকার লোকজন যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলে। নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগনের ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেও ওয়ার্ডবাসীর সেবা করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনসহ পুরো দেশেই বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ, তবে ডেঙ্গু সচেতনতায়ও কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি রিয়াদ হাসানকে। ওয়ার্ডবাসী বলছে, নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও নাগরিক সেবা দিতে অনেকটাই ব্যর্থ রিয়াদ হাসান। জনসেবা করার চেয়ে, নিজ ব্যবসা ও নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে আড্ডা দিতেই বেশী ব্যস্ত থাকেন এই কাউন্সিলর, জানান স্থানীয়রা। যেখানে নির্বাচনের আগে চষে বেড়িয়েছেন ওয়ার্ডের প্রতিটি পাড়া-মহল্লা, অলি-গলি ও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি, সেখানে বর্তমানে গাড়ির গ্লাস খুলে এলাকাবাসীর দিকে তাকানোরও যেন সময় নেই তার। তার নিজ¦ এলাকা ২নং বাবুরাইলের বাসিন্দাদের অনেকে জানান, সবাই পায় জনসেবক কাউন্সিলর, আর আমরা পেয়েছি জমিদার কাউন্সিলর। বাড়ির নীচে গ্যারেজে রাখা গাড়িতে উঠে গ্লাস আটকিয়ে এলাকার বাইরে যান, আবার গ্লাস লাগিয়ে বাড়িতে ঢোকেন। তাই এলাকাবাসীর খোঁজ নেয়ার সময় কই তার। রাসেল পার্ক সংলগ্ন এক বাড়িওয়ালা বলেন, ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় পার্কের ওয়াকওয়ের সামনে মেইন সড়কে ময়লা রেখে আসি। সিটি কর্পোরেশন থেকে এসে প্রতিদিনের ময়লা প্রতিদিন নিয়ে যায়। তবে এলাকার অলি-গলির ভিতরে ময়লা আবর্জনা ফেলার কোন জায়গা নেই। যেখানে একটু খালি জায়গা পায়, সেখানেই লোকজন আবর্জনা ফেলে। ১৬নং ওয়ার্ডের শেষ সীমানা ঘেষা নাগবাড়ি এলাকার বাসিন্দা পারভেজ বলেন, চেয়ারম্যান বাড়ির মোড় থেকে নাগবাড়ী পর্যন্ত আসা আলী আহাম্মদ চুনকা সড়কটি একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাটিতে থাকা খানা-খন্দে পানি জমে চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায়। এখানে রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে মেরামত করা হয়নি যার কারণে চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়। নারায়ণগঞ্জ সিটি এলাকার মধ্য ওয়ার্ড ১৬নং ওয়ার্ড। গুরুত্বপূর্ণ এ ওয়ার্ডের এতো সব সমস্যা থাকলেও এর কোনো প্রতিকার পাননি ওয়ার্ডবাসী। সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসছেন না কাউন্সিলর দাবি ওয়ার্ডবাসীর। তাই এসব দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। অবিলম্বে সকল সমস্যা দূরীকরণে স্থায়ী সমাধান চান এলাকাবাসী। স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতা জানান, ওয়ার্ডে অনেক সমস্যা রয়েছে। দিন দিন সেইসব সমস্যা বড় আকার ধারণ করছে। মানুষ এখন সচেতন। ভালমন্দ বোঝে। ফলে এলাকায় কি কাজ হচ্ছে তার মান কেমন, তা মানুষ দেখছে। এলাকার কোনো উন্নয়ন কাজই করছেন না কাউন্সিলর। শুধুমাত্র টিসিবর পণ্যগুলো তুলে দিচ্ছেন মানুষের হাতে। সেখানেও অনিয়ম-দুর্ণীতির অভিযোগ পাওয়া যায় হর-হামেশাই। জনগণ কাউন্সিলরের কাছে আসবে না। কাউন্সিলরকে জনগনের পাশে যেতে হবে। আমাদের কাউন্সিলর অনেকটাই জনবিছিন্ন। তাকে মানুষ প্রয়োজনে পাশে পায় না। ওয়ার্ডবাসীর সাথে কাউন্সিলরের দুরত্ব অনেক বেশি। এ ওয়ার্ডের মানুষ অনেকটা অসহায়। ভাঙ্গাচোরা রাস্তা-ঘাট, মাদকের আধিপত্ব, ময়লা আবর্জনায় ভরে রয়েছে এ ওয়ার্ড। জনগনের সাথে কাউন্সিলরের কোন সম্পৃক্ততা নেই। মানুষের সমস্যায় তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। সে নিজে কোন দিন কোন বিচার-আচারও করতে পারে না। আত্মকেন্দ্রিক একজন মানুষ কাউন্সিলর। এছাড়াও, কাউন্সিলের লোকজনের বিরুদ্ধে মাঝে মাঝেই বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ উঠে। সম্প্রতি স্থানীয় এক ব্যবসায়ীকে মারধর করে এলাকা ছাড়া করার অভিযোগ উঠে তার বাহিনীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্থানীয় পত্রিকাগুলোতে সংবাদও প্রকাশিত হয়। তার লোকজন চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ নানা অপরাধ করে বেড়াচ্ছে বলে জানায় সাধারণ মানুষ। এলাকার মানুষ কোনো সেবা পাচ্ছে না বলেও অভিযোগ তাদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কাউন্সিলর হাসান তার কার্যালয়ে নিয়মিত না থাকায় অনেকেই সেবা নিতে গিয়ে সেবা পায় না। রাস্তাঘাটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত হলেও এলাকার এসব সমস্যা সমাধানের বিষয়ে তিনি এগিয়ে আসছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা বলেন, গত দেড় বছরে ওয়ার্ডে কোন উন্নয়ন মূলক কাজ হয়নি। এসব বিষয়ে জানতে কাউন্সিলর রিয়াদ হাসানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা