আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | বিকাল ৫:৪২

তিন দফা দাবিতে না’গঞ্জে তেল উত্তোলন ও পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত

ডান্ডিবার্তা | ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ

জ্বালানি তেল বিক্রির ওপর কমিশন বাড়ানোসহ ৩ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য জ্বালানি ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ ট্যাংক লরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিস্ট্রিবিউশনস এজেন্ট অ্যান্ড পেট্রোলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনগুলোর কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির কারণে সারা বাংলাদেশেই এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তিনটি কোম্পানির জ্বালানি তেলের ডিপো রয়েছে। এই ডিপোগুলো থেকেই রাজধানী ঢাকা ও আশেপাশের জেলাগুলোতে সিংহভাগ জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয়। সিদ্ধিরগঞ্জের পদ্মা ডিপো থেকে সরবরাহ করা বিমানে ব্যবহৃত জেট ফুয়েল। এ কর্মসূচির জন্য বন্ধ রয়েছে বিমানের তেল সরবরাহও। এছাড়া বন্ধ রয়েছে শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ পরিবহন খাতেরও জ্বালানি সরবরাহ। বাংলাদেশ ট্যাংক লরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিস্ট্রিবিউশনস এজেন্ট অ্যান্ড পেট্রোলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তিন দফা দাবিগুলো হলো- জ্বালানি তেলের কমিশন ২.৭৩ থেকে বাড়িয়ে কমপক্ষে শতকরা সাড়ে ৭ করতে হবে। জ্বালানি তেল ব্যাবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট বিধায় প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সুস্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করতে হবে। ট্যাংক লরি ভাড়ার ওপর ভ্যাট সংযুক্ত নাই ও ট্যাংক লরির ইকোনমি লাইফ ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে নির্ধারণ পূর্বক পৃথকভাবে সুস্পস্ট গেজেট প্রকাশ করতে হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ট্যাংকলরী শ্রমিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী জাহিদ হোসেন বলেন, তিন দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সারা বাংলাদেশে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। আজকের দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিছু বিষয়ে আমাদের সাথে সমঝোতার আভাস পাওয়া গেছে। আশা করি তারা আমাদের সকল দাবি মেনে নিবে। গোদনাইল মেঘনা ডিপোর ইনচার্জ লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণ তেল রিজার্ভ রয়েছে। আমরা বিকল্প পথে তেল সরবরাহ চালু রাখার চেষ্টা করছি।’ এদিকে পদ্মা ডিপোর জৈষ্ঠ্য কর্মকর্তা ফজলে এলাহী চৌধুরী বলেন, ‘বিমানের জ্বালানি তেল আগামী ১০ দিনের জন্য বিমানবন্দরে মজুদ আছে। এই কর্মসূচির জন্য যাতে কোনো সমস্যা না হয়।’ এদিকে আজ সোমবার সকালের আগে নারায়ণগঞ্জ ডিপো থেকে তেল পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পরিচালক (বিপণন) অনুপম বড়ুয়া। তিনি বলেন, হয়তো সোমবার সকালের আগে নারায়ণগঞ্জ ডিপোতে তেল উত্তোলন সম্ভব হবে না। গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন শেষে এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, সারাদেশে পেট্রোল পাম্পগুলো খোলা আছে। পেট্রোল পাম্পগুলোতে তেলও রয়েছে। কোনো কোনো ডিপোতে সাপ্লাই লাইনের তেল উত্তোলন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে করে একটু তেল সংকট হতে পারে। আমরা একটু আগে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি। যারা তেল উত্তোলনের সিরিয়ালে আছেন, তারা যেন উত্তোলন করতে পারেন, সে বিষয়ে যেন তারা পদক্ষেপ নেন, তা বলা হয়েছে। অনুপম বলেন, আপনারা দেখেছেন, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে কোন ধর্মঘট নেই। সেখানে সবকিছু স্বাভাবিক চলছে। আমরা আশা করছি, যারা ধর্মঘট ডেকেছেন, আজকের মধ্যে তারা একটি সিদ্ধান্ত নেবেন। না হলে আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। বিপিসির এই পরিচালক বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রথমে জেট ফুয়েলের যে গাড়িগুলো অপেক্ষায় আছে, সেই গাড়িগুলোর জন্য তেল উত্তোলন করা হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ে বিমানবন্দরে পৌঁছে যাবে। এরপরে অন্য গাড়িগুলোর তেল উত্তোলনের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে জেলা প্রশাসককে। বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে বলে জেট ফুয়েল ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু একটু পরে ঢাকা শহরের গাড়িগুলোর চলাচল যে বন্ধ হয়ে যাবে, সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না কেন? ঢাকা শহরের পেট্রোল পাম্পগুলোতে তেল না থাকায় সংকট তৈরি হয়েছে। এই সংকটের দায় বিপিসি কীভাবে এড়ায়, জানতে চাইলে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে অনুপম বড়ুয়া বলেন, প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের অফিস থেকে তারা যে ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছিলেন, তাতে আমরা ধারণা করিনি তারা এই ধরনের স্ট্রাইকে যাবে। তাদের স্ট্রাইকে আমরা বিস্মিত হয়েছি। তেল সরবরাহ ঠিক রাখার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। অপরদিকে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ নাজমুল হক দাবি করেন, বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে বহিষ্কৃতরা ধর্মঘট ডেকেছে। তাদের এ কর্মসূচি অবৈধ। নাজমুল হক বলেন, ঢাকার পেট্রোল পাম্পগুলোর ডিপো নারায়ণগঞ্জে। সেখানে প্রায় চারশোর বেশি তেলের গাড়ি পে-অর্ডার নিয়ে অপেক্ষায় আছে। কিন্তু তাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে ঢাকার পাম্পগুলোয় তেলের সংকট হয়েছে। যে দাবিতে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে সেই দাবি ঠিক আছে কিন্তু ধর্মঘট অবৈধ। বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, আমরা সর্বপ্রথম ১২ দফা দাবি জানাই ২০১৬ সালে। আমাদের তিনটি দাবি তাৎক্ষণিক মেনে নেওয়া হয়। বাকি দাবিগুলো ধীরে-ধীরে মেনে নেওয়া হয়। অবশেষে পাঁচটি দাবি রয়ে যায়। ওই দাবিগুলো এখনো মেনে নেওয়া হয়নি। দাবিগুলোর বিষয়ে মতামত দিতে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় নিয়েছেন। সুতরাং এই বিষয়ে যদি আমাদের কোনো ধর্মঘট থাকতো তাহলে সেটা আমরা ৩০ সেপ্টেম্বরের পরে করব। এর আগে তো ধর্মঘট করার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, এখন যারা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে তারা সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত। যারা ধর্মঘট ডেকেছে তারা আমাদের সংগঠনের কেউ না। দেশের আর কোথাও ধর্মঘট চলছে না। নারায়ণগঞ্জে বহিষ্কৃত সংগঠনের নেতারা আশপাশের লোকজনকে টাকা দিয়ে তেল দেওয়া বন্ধ করে রেখেছে। ঢাকার পাম্পগুলোয় ইতোমধ্যে তেল শেষ। কারণ, শুক্র ও শনিবার ডিপো বন্ধ থাকে। আজও বন্ধ রয়েছে। ধর্মঘট ডাকা সংগঠনের সদস্যদের অনুরোধ করে তিনি বলেন, আপনাদের দাবিগুলো যুক্তি। তবে ধর্মঘট অযৌক্তিক। আপনারা দ্রুত সেখান থেকে সরে আসবেন। এদিকে গত রবিবার রাতে ধর্মঘট স্থগিত করার সংবাদ পাওয়া গেছে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা