আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | বিকাল ৫:৫০

আলু নিয়ে গোলক ধাঁধায় ভোক্তারা

ডান্ডিবার্তা | ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট ৫‘শ টাকা নিয়ে বাজারে আসছেন শিক্ষক নিখিল চন্দ্র রায়। ১৯০ টাকায় ৫ কেজি আলু কিনেছেন, ১০০ টাকায় কিনেছেন আধা কেজি কাচা মরিচ। ৫০ টাকায় মেরামত করেছেন হাতে থাকা ছাতা। আলুর দাম জিজ্ঞাসা করতেই চোখে মুখে ফুটে উঠে অসহায়ত্বের ছাপ। এই শিক্ষক লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, বেতন সিমিত আকাড়েই রয়েছে কিন্তু দ্রব্যমূলের দাম প্রতিদিন বাড়ছে। এতটাকা লাগবে প্রত্যাশা করে বাজারে আসিনি। চলা কষ্টকর হয়ে যায়, প্রতিটি পরিবার এখন আমার মতোই দিশেহারা হয়েগেছে। একই কথা বললেন বাজারে আলু কিনতে আসা শুভ। বাজারের পরিস্থিতি তুলে ধরে সরকারের কাছে মূল্যস্ফীতি কমানোর পাশাপাশি আয় বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন তিনি। নারায়ণগঞ্জের বাজার গুলোতে গিলেই দেখতে পাওয়া যায় নিখিল চন্দ্র রায় কিংবা শুভদের মতো এমন শত শত নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের অসহায়ত্বের চিত্র। গত এক মাসে বাজারের যে সকল নিত্যপণ্যের মূল্য বেড়েছে, তার মধ্যে অন্যতম আলু। খুচরা বাজারে আলুর দাম লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর হিমাগার পর্যায়ে ২৬ থেকে ২৭ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষের আলুর চাহিদা পুরণ হয় মুন্সিগঞ্জ থেকে। তবে সেখানকার ব্যবসায়ীরা এ দাম না মেনে হিমাগার পর্যায়ে ৩৯ থেকে ৪০ টাকা এবং খুচরা বাজারে ৪৫-৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে থাকেন। অথচ, খুচরা বাজারে আলুর মূল্য হওয়ার কথা ছিল ৩৫, থেকে ৩৬ টাকা। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর মুন্সিগঞ্জের হিমাগার গুলো পরিদর্শনে যায় জাতীয় ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। পাকা রসিদে বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত করতে মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন তিনি। কিন্তু ব্যপারীরা প্রায় ৫দিন আলু বিক্রি প্রায় বন্ধ রাখে। ১৯ সেপ্টেম্বর মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক হিমাগার মালিক ও আলুর ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা করলে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে পুনঃরায় হিমাগার পর্যায়ে ব্যাপারীরা আলু বিক্রি শুরু করে। মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুরে দেওয়ান আইস এন্ড কোল্ড স্টোরেজে গতকাল শুক্রবার বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলু বাছাইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে শ্রমিকরা। হিমাগারের প্রবেশ মুখেই লাগানো সরকার নির্ধারিত মূল্য তালিকা। রশিদেও দেখা গেছে সরকার নির্ধারিত মূল্য ২৭ টাকায় আলু বিক্রি হচ্ছে। হিমাগারটির আলুর ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন ব্যাপারী জানান, সরকারের নির্দেশ মানতে গিয়ে লস গুনেই আলু বিক্রি করছেন তারা। যদিও নারায়ণগঞ্জের দ্বিগুবাবার বাজারের আলু ব্যবসায়ী শাজাহান মিয়া বলছেন, হিমাগারের ব্যাপারীরা আলুর মূল্য তালিকা ও রশিদে সরকার নির্ধারিত দাম দেখালেও বিক্রি করছেন ৩৬-৩৭ টাকায়। ফলে ভোক্তার কাছে ৩৮ থেকে ৪২ টাকায় আলু বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। এদিকে মন্সিগঞ্জ জেলা আলুচাষি ও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির অর্থ সম্পাদক মজিবুর রহমান জানান, হিমাগারের ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রি করলেও খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি মূল্য নিয়ে আলু বিক্রি করছেন। আলুর দাম বৃদ্ধি নিয়ে একে অন্যের দিকে আঙ্গুল তুলছে খুচরা ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা। আর এই দ্বন্দ্বের বেড়াজালে আটকে পকেট ফাঁকা হচ্ছে শিক্ষক নিখিল চন্দ্র রায় কিংবা শুভদের পকেট।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা