আজ বৃহস্পতিবার | ১৪ আগস্ট ২০২৫ | ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৯ সফর ১৪৪৭ | রাত ৮:১৫

ঘর গুছাচ্ছেন বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা

ডান্ডিবার্তা | ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী আগামী জানুয়ারির প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সংসদ নির্বাচন। এরই মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে সরকার ও সরকার বিরোধী দলগুলোর মধ্যকার মতপার্থক্য নিয়ে চলছে দ্বন্দ্ব। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর সকল কর্মকা-ই যে এখন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এর মধ্যে সবচেয়ে জটিল হিসেবের মধ্যে রয়েছে সদর-বন্দর ও সোনারগাঁ আসন। তবে এবার যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন তাহলে এই ২ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী কে হতে পারেন তা নিয়ে চলছে বিচার বিশ্লেষণ। বিশেষ করে সদর-বন্দর আসন থেকে পরপর চারবার নির্বাচিত সাংসদ অ্যাডভোকেট আবুল কালামের বার্ধক্যজনিত কারণ ছাড়াও রাজনীতি থেকে নিজেকে অনেকটা দূরে সরিয়ে রাখা এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের গত নির্বাচনে অংশগ্রহণের কারণে দল থেকে বহিষ্কারের পর সম্প্রতি তৃণমূল বিএনপি নামক দলে যোগদানের পর এই আসন থেকে বিএনপির নির্বাচনী সমীকরণ অনেকটাই পাল্টে গেছে বলে মনে করেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতা, কর্মী ও সমর্থকসহ নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক বোদ্ধামহল। দলীয় সূত্র মতে, সাবেক সাংসদ এডভোকেট আবুল কালামের এখনও ক্ষীণ সম্ভাবনা আছে। তার সাথে এই আসন থেকে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাব্য তালিকায় ছিলেন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, আতাউর রহমান মুকুলের নাম। এর সাথে তালিকায় বেশ কিছু ব্যবসায়ীর নামের সম্ভাবনার কথাও এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে। অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের তৃণমূলে যোগদানের কারণে অনেকটাই বেকায়দায় পড়েছেন তার সহোদর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। অন্যদিকে আতাউর রহমান মুকুলও প্রার্থী হতে পারেন। সবকিছু মিলিয়ে বর্তমানে সম্ভাব্য তালিকায় সবচেয়ে এগিয়ে আছেন বর্তমান মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। একই সাথে ২০১৮ অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক মামলায় কারা বরণ করতে হয় সাখাওয়াত হোসেন খানকে। রাজনৈতিক বোদ্ধাদের মতে এবারের তালিকায় যাদের নাম ছিল তাদের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও নির্বাচিত হওয়ার অভিজ্ঞতা আছে একমাত্র অ্যাডভোকেট আবুল কালাম। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী এবং সফল নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। আবুল কালাম ১৯৯১, ১৯৯৬ (১৫ ফেব্রুয়ারি) ও ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপির সমর্থন নিয়ে নির্বাচিত হন। তাই বিএনপির অনেকেই ধারণা পোষণ করেছিলেন হয়তো শেষ মুহুর্তে এসে দলের হাল ধরবেন আবুল কালাম। কিন্তু একদিকে বয়স ও শারীরিক অসুস্থতা তার উপর দলীয় সকল কর্মকা- থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখার কারণে সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না বলে অনেকটাই হতাশা প্রকাশ করছেন তার ভক্তরা। এর বাইরে এই তালিকার কারও জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অভিজ্ঞতা নাই। তবে নাসিক নির্বাচনের মতো বৃহত্তর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অভিজ্ঞতা আছে এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার এবং অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের। মাকসুদুল আলম খোরশেদের আছে কাউন্সিলর নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও নির্বাচিত হওয়ার অভিজ্ঞতা এবং আতাউর রহমান মুকুলের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের অংশগ্রহণ ও নির্বাচিত হওয়ার অভিজ্ঞতা। এর মধ্যে তৈমূর আলম খন্দকার দলে নাই এবং তার কারণে কিছুটা বিপাকে খোরশেদ। অন্যদিকে আতাউর রহমান মুকুলের বিরুদ্ধে সরকার দলীয় নেতাদের সাথে আতাত করা, মহানগর কমিটি থেকে পদত্যাগসহ বিদ্রোহ করা ও বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। জাতীয় নির্বাচনে শহর ও বন্দরের ভোটারের সংখ্যা প্রায় সমান সমান হলেও বন্দরের ভোটার তুলনামূলক বেশি। একই সাথে এই নির্বাচনে বন্দরবাসীর ভূমিকার উপর অনেক কিছুই নির্ভর করে। তাই জাতীয় নির্বাচনে শহর এবং বন্দরে পরিচিতি এবং জনপ্রিয়তা আছে এমন কাউকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচনের ফলাফল অনেকটাই নিজেদের পক্ষে আনতে সহজ হবে বলে মনে করেন তারা। দলীয় সূত্র থেকে জানা যায়, দলীয়ভাবে এই আসন থেকে আবুল কালামের পর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মনে করা হতো অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে গত ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হন তৈমূর। এরপর দীর্ঘ দিন (প্রায় দেড় বছর) যাবৎ দলে ভিড়তে চেষ্টা করার পরও সেই সুযোগ না পেয়ে অনেকটা হতাশা নিয়েই বিএনপির সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নাজমুল হুদার (প্রয়াত) হাতে গড়া তৃণমূল বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলে যোগদান করেন। এতে অনকেটাই হতাশ হয়ে পড়েন বিএনপিতে থাকা তার ভক্তরা। তৈমূর ভক্তদের মতে তৈমূর আলম খন্দকার দলে থাকলে এবার সদর-বন্দর কিংবা রূপগঞ্জ আসন থেকে জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। সেই হিসেবে হয়তো সদর-বন্দর আসন থেকে তাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হতো। এর আগে ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তে প্রার্থী হওয়ার পরও নির্বাচনের মাত্র ৭ ঘন্টা আগে দলের চেয়ারপার্সনের নির্দেশে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। এরপর ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত নাসিক নির্বাচনে দলকে এড়িয়ে অংশগ্রহণ করে অনেকটাই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলেন তৈমূর আলম খন্দকার। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৭ ভোটের বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার পেয়েছিলেন ৯২ হাজার ১৬৬ ভোট। এমনকি সেই নির্বাচনে নিজ দলীয় সমর্থন ছাড়া এবং দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বিদের বিরুদ্ধে গিয়ে। একই সাথে গত ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে বিএনপির সমর্থন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। সে সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আইভীর কাছে ৭৯ হাজার ৫৬৭ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান। অপরদিকে সোনারগাঁয়ে এগিয়ে আছে মান্নান। কিন্তু বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিমও প্রার্থী হচ্ছেন এমন গুঞ্জন রয়েছে সোনারগাঁয়ে। আর নির্বাচনকে সামনে রেখে ঘর গুছাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীরা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা