নারায়ণগঞ্জে পিঁয়াজের দাম ঘন্টায় ঘন্টায় বৃদ্ধি রোধে অভিযান
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট ভারত রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পরই নারায়ণগঞ্জের বাজারে হু হু করে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। তিনদিনের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১শ থেকে ১৪০ টাকা। জেলার খুচরা বাজারে এখন এ পেঁয়াজের কেজি ২২০-২৪০ টাকা। আর কেজিতে ১২০ টাকা বেড়ে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা। কেউ কেউ ২২০ টাকাও দাম হাঁকছেন। গতকাল রবিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের দিগুবাবুর বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, গত শুক্রবার থেকে কিছুক্ষণ পর পর বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। গত শনিবার রাতে বাজারে যে দাম ছিল, বিকেলে তা কেজি প্রতি ৮০-১০০ টাকা বেড়ে গেছে। রাতারাতি পেঁয়াজের এমন দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। বাজারে এসে অনেকে পেঁয়াজ না কিনে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে বাধ্য হয়ে গলাকাটা দামে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন পিয়াজ। দিগুবাবুর বাজারে কথা হয় ক্রেতা সাইদুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, দুদিন আগেও দেশি পেঁয়াজ কিনলাম ১২০ টাকা করে। আজকে এসে দেখি সেটা ডাবল হয়ে গেছে। শুক্রবারও না কি ১২০ টাকা কেজি ছিল। রাতের মধ্যেই বেড়ে গেলো ১২০ টাকা। এটা কেমন কথা? ক্রেতা সাইদুলের বক্তব্য অনুযায়ী, তার কাছে দেশি পেঁয়াজের কেজি ২৪০ টাকা চাওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত। গত ৮ ডিসেম্বর এ আদেশ জারি করে দেশটির সরকার। এদিন বিকেলে নারায়ণগঞ্জের বাজারে এ খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপর রাতেই দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে ২২০-২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পিয়াজের দাম ঘন্টায় ঘন্টায় বৃদ্ধি রোধ কল্পে গতকাল রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি বিপনন অধিদফতর নগরীর দ্বিগু বাবুর বাজারে যৌখভাবে অভিযান পরিচালনা করে। নারায়ণগঞ্জে পিঁয়াজের বাজারে অভিযান চালিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা লাভের জন্য কারসাজি করায় এক অসৎ পিঁয়াজ ব্যবসায়িকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ফারশিদ ইবনে এনামের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে সহায়তা করে র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা। শুরুতেই সাদা পোশাকে বাজারের পিঁয়াজের দোকানে দোকানে গিয়ে মূল্য তালিকা ও ক্রয়-বিক্রয় মূল্য যাচাই বাছাই করেন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা ও সদস্যরা। পরে কয়েকটি দোকানে গরমিল পাওয়া গেলে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও জেলা কৃষি বিপনন অধিদফতরের কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে উপস্থিত হন। এসময় অধিকাংশ দোকানের মালিক ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে সটকে পড়েন। জেলা কৃষি বিপনন অধিদফতরের কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম জানান, অভিযান চলাকালে কয়েকটি দোকানে মূল্য তালিকা না থাকা ও ভুল তথ্য দিয়ে দোকানদাররা বিভ্রান্ত করাসহ চালানপত্র যাচাই বাছাই করে পিঁয়াজ ক্রয়-বিক্রয় মূল্যের কারসাজির প্রমান পাওয়া যায়। এছাড়া শ্যামবাজারের আমদানিকারকের কাছ থেকে ভারতীয় পিয়াজ ৯৩ টাকাং ক্রয় করে ও দেশীয় পিয়াজ ১৫৬ টাকায় ক্রয় করে এর চেয়েও অধিক মূল্যে বিক্রির অভিযোগে ইউনুস বেপারি নামে এক অসৎ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারকে বিব্রত করতে ও বেকায়দায় ফেলতে একটি কুচক্রি মহল পিঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে জানিয়ে জেলা কৃষি বিপনন অধিদফতরের কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রন করতে তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।