দেউলিয়া হওয়ার পথে রেজাউল পরিবার
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
বিএনপি শাসনামলে এমপি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম মান্নানের পরিবার আজ দেউলিয়া হওয়ার পথে। তিনি নিজে দল থেকে নানা সময়ে নানা সুবিধা নিলেও দলের দু:সময়ে কখনো দলের পাশে দাড়াননি। ফলশ্রæতিতে আজ নিজ দল বিএনপিতেও তার কোনো অস্তিত্ব নেই, নিজ নির্বাচনী এলাকা সোনারগায়েও তার অবস্থান আজ শুন্য। একইসাথে তার ছোট ভাই বজলুর রহমান দেশের শীর্ষ ঋণ খেলাপি হিসেবে পরিচিত। তার মালিকানাধীন এমআর গ্রæপের তিন কোম্পানিই এখন ঋণখেলাপি। তিনটি কোম্পানিই এখন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের বড় ঋণখেলাপি। এমনকি ওই ঋণ আদায়ে মামলা ও সম্পত্তি নিলামের ঘটনাও ঘটেছে। আরেক ভাই প্রয়াত ফজলুর রহমানের মালিকানাধীন মেসার্স রহমান স্পিনিং মিলস লিমিটেডের কাছে প্রায় হাজার কোটি টাকা পায় সোনালী ব্যাংক লিমিটেড। এই টাকা পরিশোধের লক্ষ্যে ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ কর্পোরেট শাখা ফজলুর রহমানের মালিকানাধীণ ৪১৮ শতাংশ জমি নিলামের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সম্প্রতি। জানা গেছে, সোনালী ব্যাংক লিমিডেট নারায়ণগঞ্জ কর্পোরেট শাখা থেকে ব্যবসার জন্য মেসার্স রহমান স্পিনিং মিলস লিমিটেডের নেওয়া ঋনের কিস্তি নিয়মিত পরিশোধ না করায় এক পর্যায়ে তা খেলাপিতে পরিণত হয়। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এ ঋণের পরিমাণ দাড়ায় ৭৭২ কোটি ৪৯ লক্ষ ৪৭ হাজার ৮৩৫ টাকা। যা চলতি বছরের ৩১ মার্চে সুদসহ প্রায় হাজার কোটি টাকার রূপ নেয়। বিপুল পরিমাণ এ অর্থ আদায়ের লক্ষ্যে সোনালী ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ কর্পোরেট শাখা সম্প্রতি ফজলুর রহমানের মালিকানাধীন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানার মৈযটেক মৌজাস্থ ৪১৮ শতাংশ জমি, তদস্থিত দালান কোঠা ও মেশিনারীজ নিলামের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আগামী ২৯ জুলাই এই নিলাম বিক্রয়ে নিমিত্তে সীল মোহরকৃত টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। নিলাম বিজ্ঞপ্তিতে সোনালী ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ কর্পোরেট শাখার পক্ষে ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজারকে ডিক্রীদার উল্লেখ করা হয়। একইসাথে ফজলুর রহমানের ছেলে আতাউর রহমান, হাবিবুর রহমান, মাসুদুর রহমান ও মেয়ে ফারহানা রহমানকে দায়িকগণ উল্লেখ করা হয়। অপরদিকে, ফজলুর রহমানের ভাই বজলুর রহমানও দেশের শীর্ষ ঋণ খেলাপি হিসেবে পরিচিত। তার মালিকানাধীন এমআর গ্রæপের তিন কোম্পানিই এখন ঋণখেলাপি। তিনটি কোম্পানির নামে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ঋণ রয়েছে। এই ঋণ আদায়ে মামলা ও সম্পত্তি নিলামের ঘটনাও ঘটেছে। বজলুর রহমানকে সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ী বলে মনে করছেন ঋণ প্রদানকারী ব্যাংকগুলোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, এমআর গ্রæপের ঋণ বিতরণ ও পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে অডিট আপত্তিও উঠেছে। তারপরও বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে গ্রæপটি ঋণ পরিশোধ করছে না। দেশের শীর্ষ এই ঋণ খেলাপি বজলুর রহমানের বিরুদ্ধে নিজ গ্রাম সোনারগাঁয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করতে নানা কুটকৌশলের অভিযোগও রয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, তিনি দেশের একজন শীর্ষ ঋণ খেলাপি হওয়া সত্তে¡ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে চান। তার মতো ঋণ খেলাপির কাছ থেকে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তথা শিশুরা কি শিখবে? কিভাবে দেশের ও ব্যাংকের টাকা মেরে খেতে হয় তা শিখবে? এছাড়া, রেজাউল করিম বিএনপি আমলে এমপি এমনকি প্রতিমন্ত্রী হয়ে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিলেও দলের দু:সময়ে তাকে পাশে পায় নি বিএনপি। তিনি সর্বদা সুযোগ সন্ধানী রাজনীতি করেছেন বলে দাবি তৃণমুল নেতাকর্মীদের। আর তাই তো, দীর্ঘ সময় ধরে বিএনপিতে তার কোনো অবস্থান নেই, রাজণৈতিকভাবে তিনি দেউলিয়া প্রায়। কেননা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দেশের মধ্যেই তিনিই একজন নেতা যার নিজ জেলায় তেমন কোনো রাজনৈতিক অবস্থান নেই।