বন্দরের মদনপুরে যুবলীগ নেতার বাড়িতে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের হচ্ছে মিলন মেলা

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের ঘুমে রেখে তাদেরই অজান্তে বন্দর থানা যুবলীগ নেতা অহিদের মালিকাধীন একটি হাসপাতালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের দাওয়াত করে রীতিমত মিলন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ‍যুবলীগ নেতা অহিদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনের ফতুল্লা থানা ও বন্দর থানায় একাধিক মামলার আসামী। সেই অহিদের বিলাশবহুল বাড়িতেই হচ্ছে হাসপাতাল এবং সেই হাসপাতালের উদ্বোধনে দাওয়াত করা হয়েছে জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের। এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বন্দরে সমাবেশে যোগদানকালে তার গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে সড়ক অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়েছিল যুবলীগের নেতারা। গত জুলাই আন্দোলনের সময় গত ২২ জুলাই স্থানীয় ৫জন বিএনপি নেতার বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর লুটপাট চালিয়েছিল যুবলীগের সন্ত্রাসীরা। জুলাই আগস্ট আন্দোলনেও শিক্ষার্থীদের উপর প্রকাশ্যে হামলা চালিয়েছিল আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীরা। যে কারনে অহিদের বিরুদ্ধে বন্দর থানা, ফতুল্লা থানা সহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রুজু করা হয়। ঘটনা সুত্রে জানাগেছে, আগামী ১৪ ফেব্রæয়ারী ও পহেলা বৈশাখের দিন বিকেল তিনটায় বন্দর থানাধীন মদনপুর ইউনিয়নের ফুলহর গ্রামের আবদুল মজিদ টাওয়ারে মদনপুর স্পেশালাইজড হসপিটাল লিঃ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদ। এই হাসপাতালের ৫০ভাগ মালিকানা রয়েছে অহিদের। কৌশলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কার্ড বিতরণ করা হয়েছে, যেখানে সভাপতিত্ব করবেন অহিদের ব্যবসায়িক পার্টনার ও প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজমল খাঁন। হাসপাতালের ভবনটির মালিকও অহিদুজ্জামান। উদ্বোধন শেষে অহিদের বাড়িতে জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতাদের আপ্যায়ণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু অহিদের বাড়ি ও তার মালিকানার বিষয়টি গোপন করে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি করা হয়েছে জেলা বিএনপির আহŸায়ক অধ্যাপক মামুন মাহামুদকে এবং উদ্বোধক করা হয়েছে মহানগর বিএনপির আহŸায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে। সেখানে বিশেষ অতিথি করা হয়েছে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিম হক রুমী, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু ও বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণকে। এসব জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নিমন্ত্রন করার পেছনে কাজ করেছেন যুবলীগ নেতা অহিদের উকিল বাবা বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ এবং সোনারগাঁয়ের শীর্ষ নেতাদের নিমন্ত্রণের পেছনে কাজ করেছেন যুবলীগ নেতা অহিদের মামা শ্বশুর সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপি নেতা আব্দুর রহিম। অহিদুজ্জামানের মালিকানাধীন হাসপাতাল অহিদের বাড়ির ৪র্থ তলায় উদ্বোধন করে যুবলীগ নেতা অহিদকে রক্ষা করার মিশনে নেমেছেন হিরণ ও আব্দুর রহিম। মুলত তারা দুজন অহিদের বিষয়টি গোপন করে জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের ঘুমের মধ্যে রেখে জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের দাওয়াত করা হয়েছে বলে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন।