আজ সোমবার | ১৯ মে ২০২৫ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ২০ জিলকদ ১৪৪৬ | বিকাল ৫:৫০

জিসানের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন

ডান্ডিবার্তা | ১৯ মে, ২০২৫ | ৮:৪০ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে মামলায় গ্রেপ্তার জুলাই অভ্যুত্থানের সক্রিয় কর্মী ও তরুণ সাংবাদিক জান্নাতুল ফেরদৌস জিসানের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। গতকাল রোববার বেলা সোয়া এগারোটায় নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় কেন্দ্র্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। এ মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে রাজনৈতিক, সামাজিক ও বিভিন্ন পেশাজীবীরাও উপস্থিত ছিলেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তারে বাধা ও হামলার অভিযোগে পুলিশের এক মামলায় গত ১২ মে দিবাগত রাতে নগরীর শহীদনগর এলাকার বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন অনলাইন পোর্টাল ‘প্রেস নারায়ণগঞ্জ’র প্রতিবেদক জান্নাতুল ফেরদৌস জিসান। একই মামলায় গ্রেপ্তার জিসানের বাবা এবং চাচাও এখন কারাগারে। মানববন্ধন থেকে গণমাধ্যমকর্মীরা জিসান ও তার পরিবারের সদস্যদের নিঃশর্ত মুক্তি ও মামলা থেকে তাদের নাম প্রত্যাহারের দাবি জানান। বক্তারা বলেন, “সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তারের সময় বাধা দেওয়ার মামলায় জিসান, ফুডবøগার মিথুনসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অথচ ওইদিন সেখানে তারা ছিলই না। অথচ মামলা এন্ট্রি হবার সাথে সাথেই পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে। আমরা গণমাধ্যমকর্মীরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত শহীদনগর এলাকার শাকিল নামে এক ব্যক্তি মামলা বাণিজ্য করার জন্য তাদের নামগুলো মামলায় যুক্ত করেছে। এবং পুলিশও ওই মামলা বাণিজ্যের সাথে নিজেকে যুক্ত করেছে। ঠিক এমন বাণিজ্য এই শহরে আগে ওসমান পরিবার করেছে। তারা এখন বিতাড়িত কিন্তু তাদের অভাব পূরণে ব্যস্ত অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারা।” হুঁশিয়ার উচ্চারণ করে সাংবাদিকরা বলেন, “এইসব হয়রানিমূলক মামলা সাংবাদিকদের নামে আগেও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করা যায়নি। এখনও এইসব চাঁদাবাজি, মামলাবাজি, মানুষকে হয়রানি নিয়েও সাংবাদিকরা লিখে যাবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এইসব মামলাবাজদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে।” ঘটনার চারদিন পর পুলিশের করা একটি মামলায় ‘নিরপরাধ’ মানুষকে আসামি করার কারণ জানতে চেয়ে তারা বলেন, “ঘটনার দিন সকালে কারা পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়েছে, কারা ককটেল ফুটিয়েছে সবই শহরের মানুষ দেখেছে, গণমাধ্যমকর্মীরা সেসব ভিডিও প্রকাশও করেছে। এই মামলার পূর্বে তো পুলিশ তদন্ত করেছে, তাদের ইন্টেলিজেন্স উইং থাকে, তাহলে তারা কী জেনেশুনেই হয়রানি করার জন্য লোকজনকে আসামি করেছেন? এই প্রশ্ন এখন মানুষের মনে। গণঅভ্যুত্থানের পর যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলা হচ্ছে, তার অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে বাক-স্বাধীনতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা। এটা ছাড়া গণতন্ত্র কোনোভাবে পূর্ণতা পাবে না। কিন্তু আমরা দেখছি, ৫ আগস্টের পর যে চেতনা নিয়ে আমরা নতুন দেশ গড়ার, সংস্কারের কাজ হাতে নিয়েছিলাম তা প্রতি পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এইসব যারা করছেন তাদের পরিণতি হবে উৎখাত হওয়া ফ্যাসিস্টদের মতোই।” প্রশাসনের উদ্দেশে বক্তারা বলেন, “আপনাদের এইসব কর্মকান্ড- মামলা, গ্রেপ্তার, মানুষকে হয়রানি করা এগুলো ৫ আগস্টেও গণঅভ্যুত্থানের পরিপন্থী। আমরা যে সমাজ নির্মাণ করার জন্য জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিলাম, ছাত্ররা জীবন দিয়েছে, রক্ত ঝড়েছে। সে চেতনার পরিপন্থী কর্মকান্ড কোনোভাবেই প্রশাসন থেকে প্রত্যাশা করি না।” মানববন্ধনে উপস্থিত ছাত্রনেতারা জুলাই অভ্যুত্থানে সাংবাদিক জিসান ও ফুডবøগার শওকত মিথুনের সক্রিয় ভূমিকার কথা তুলে ধরে বলেন, “জুলাই আন্দোলনের মিছিলগুলোতে ছিলেন জিসান। জুলাই অভ্যুত্থানের অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর, বøগাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। সকলে আবার এই ভূমিকা রাখেননি। যারা রেখেছেন তারা বাংলাদেশ, ছাত্র জনতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। শওকত মিথুন, যিনি জিসানের চাচা তিনি আন্দোলনে সহযোগিতা করেছেন, ভিডিও বানিয়েছেন, খাবার-পানি বিতরণ করেছেন। ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে আমরা ছাত্র-জনতা যখন ট্রাফিকের কাজ করছিলাম, বন্যার্তদের জন্য ত্রাণসহ যতগুলো কাজ হয়েছে, প্রত্যেকটি কাজে জিসান তার বন্ধুমহলকে নিয়ে যুক্ত ছিলেন। সদ্য এইচএসসি পাস করা প্রতিভাবান ছেলেটি এখন জেলে। এরচেয়ে নির্মম আর কী হতে পারে!” অনলাইন পোর্টাল প্রেস নারায়ণগঞ্জ’র সম্পাদক ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্ব এবং আজকের পত্রিকা ও ডিবিসি টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি সাবিত আল হাসানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা প্রেস ক্লাবের সভাপতি হোসেন চিশতি সিপলু, ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আব্দুর রহিম, সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোহাম্মদ মাসুম, উজ্জীবিত বাংলাদেশের সম্পাদক কবিরুল ইসলাম, নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশন ও ডেইলি অবজারভারের জেলা প্রতিনিধি শরীফ সুমন, অনলাইন পোর্টাল নারায়ণগঞ্জ টুডে’র সম্পাদক সীমান্ত প্রধান, আমাদের সময় ও এখন টেলিভিশনের এমরান আলী সজীব, নারায়ণগঞ্জ সিটি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সিফাত লিংকন, দৈনিক বাংলার জেলা প্রতিনিধি সেলিম আহমেদ ডালিম, কালবেলা ও বাংলা ট্রিবিউনের জেলা প্রতিনিধি আরিফ হোসাইন কনক, বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি মোবাশ্বির শ্রাবণ, কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি রাশেদুল ইসলাম রাজু, দৈনিক সংবাদের জেলা প্রতিনিধি আফসানা আক্তার, দ্য ডেইলি স্টার ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জেলা প্রতিনিধি সৌরভ হোসেন সিয়াম, সংবাদ’র ফটো সাংবাদিক প্রণব কৃষ্ণ রায়, বাংলাদেশ বার্তা সংস্থা’র জেলা প্রতিনিধি নুসরাত জাহান সুপ্তি, প্রথম আলোর সাবেক ফটো সাংবাদিক ও আলোকচিত্রী দিনার মাহমুদ, নয়াদিগন্তের সাংবাদিক রিপন মাহমুদ আকাশ, সমকালের ফটো সাংবাদিক মেহেদী হাসান সজীব, ইত্তেফাক পত্রিকার ফটো সাংবাদিক তাপস সাহা, অগ্রবানী প্রতিদিনের সহসম্পাদক উত্তম সাহা, একুশে টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম, ঢাকা পোস্টের জেলা প্রতিনিধি মেহেদী হাসান সৈকত, নারায়ণগঞ্জ সিটি প্রেস ক্লাবের প্রচার সম্পাদক বদরুজ্জামান রতন, জনকণ্ঠের ফটো সাংবাদিক প্রিতম মাহমুদ, সাংবাদিক ফরিদ আহমেদ বাঁধন, শেখ আরিফ, রাশেদুল ইসলাম, মোখলেসুর রহমান, শেখ শরিফ, মোখলেছুর রহমান তোতা, ইয়াকুব কামাল, মামুনুর রশীদ মুন্না, মামুনুর রহমান, নিউজ নারায়ণগঞ্জ’র স্টাফ রিপোর্টার শাহজাহান কবির দোলন, হাফসা আক্তার, শাহরিয়ার দিপ্ত, দিপ্ত দেবনাথ, মো. আশিক, পিএম আব্দে রাব্বী আয়ান, সাব্বির হোসেন প্রমুখ। সংহতি জানিয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক শওকত আলী, প্রথম আলো বন্ধুসভার নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সহসভাপতি ও সংস্কৃতি কর্মী জহিরুল ইসলাম মিন্টু, গবেষক মাহবুব সুমন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের জেলা সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা, বাংলাদেশ ছাত্র ফ্রন্টের জেলা কমিটির আহŸায়ক সাইফুল ইসলাম, গিটারিস্ট সাইফুল ইসলাম রবিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির যুগ্ম আহŸায়ক মেহরাব হোসেন প্রভাত, সাংবাদিকতার ছাত্র শুভ মিয়া। রাতভর অপেক্ষার পর ৯ মে সকালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তারে করে পুলিশ। এ ঘটনার চারদিন পর ১২ মে রাতে সদর মডেল থানায় আইভীকে গ্রেপ্তারে বাধা ও পুলিশের গাড়িতে হামলার অভিযোগে ৫২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করে পুলিশ। ওই মামলায় নগরীর শহীদনগর এলাকা থেকে সাংবাদিক জান্নাতুল ফেরদৌস জিসান ও তার বাবা মো. হানিফ, চাচা শওকত মিথুন এবং মিথুনের অন্তঃসত্ত¡া স্ত্রী মাহমুদা আক্তারকেও আসামি করা হয়। রাতেই জিসান, হানিফ ও মিথুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই মামলায় সাংবাদিক জিসান ও তার পরিবারকে ‘ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে’ বলে দাবি তাদের পরিবারের সদস্যদের।
ই-




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা