
জাহেদ উর রহমান
বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান বলেছেন, আমি মনে করি, বয়কট করে জামায়াত হাসির পাত্র হয়েছে। কিন্তু তারা মনে করেছেন এই বয়কটের মাধ্যমে তারা সরকারকে বার্তা দিতে চান তারা এখন সেকেন্ড ফোর্স। গত বৃহস্পতিবার জামায়াতে ইসলামী-বিএনপি মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি ও রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনাকালে এসব কথা বলেন তিনি। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি দূরত্ব কি মূলত আদর্শিক নাকি ক্ষমতায় যাওয়ার একটা ব্যাপার? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় যাওয়ার এবং রাজনৈতিক। আদর্শিক একটা সমস্যা তো আছেই, আসলে আমি ব্যাখ্যা খুব সহজ ব্যাখ্যাটা কঠিন না মানে জামায়াতে ইসলামীর যে গুরুত্ব আমাদের রাজনীতিতে ছিল সেই গুরুত্ব একদিক দিয়ে খুব কমে গেছে আবার একদিক দিয়ে বেড়েছে। বাড়ার কারণ হচ্ছে- জামায়াতের সামনে মোটামুটি একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে কাগজে-কলমে বিরোধী দল হওয়ার। আওয়ামী লীগ পার্টিসিপেট করলে আমি ধারণা করি, জামায়াতের চাইতে বেশি সিট তারা পেত যদি তাদের ক্যান্ডিডেট থাকতে পারত, ক্যাম্পেইন করতে পারত। আমার বিবেচনা আওয়ামী লীগের এখনো ২০% পপুলার ভোট আছে। জামাতে যদি সাত-আট শতাংশও ধরেন, তিন ভাগের এক ভাগ ভোট তাদের। এখন তাদের সুযোগ হয়েছে। আওয়ামী লীগ না থাকায় তারা ১৫টা বা ২০টা সিটও যদি পায় আর কেউ এই পরিমাণ সিট পাবে না, তো তারা কাগজে কলমে সেকেন্ড।’ তিনি আরো বলেন, ‘জামায়াত এতদিন এত গুরুত্ব কেন পেয়েছে? বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের জোটের কারণ কি? ১৯৯৬ সালে নির্বাচনের একটা এনালিসিস করে দেখা গেছে- বিএনপি আর আওয়ামী লীগের মধ্যে ১০০টার মত সিটের সিদ্ধান্ত হয়েছে খুব অল্প ভোটের ব্যবধানে। ১০-১৫-২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে। জামায়াতে ইসলামীর সিটে জিতে যাওয়ার মতো সিট বেশি নাই। কারণ একটা সিটে জিততে হলে কিন্তু সাড়ে তিন থেকে ৪ লাখ হচ্ছে এভারেজ ভোটার। আপনাকে জিততে হলে ভালো ভোট পেতে হবে। কিন্তু তাদের অনেকগুলো সিটেই ১৫, ২০, ২৫, ৩০ হাজার ভোট আছে। এই ভোটটাকে যদি বাক্সে নেওয়া যায় তাহলে জিতে যাওয়া যেতে পারে। এইটাই জোটের কারণ। নাজিম কামরান চৌধুরী এই হিসাবটা দেখিয়েছিলেন এবং সেটার রেজাল্ট ২০০১ এ দেখবেন। পপুলার ভোট কিন্তু বিএনপি আর আওয়ামী লীগের একই রকম। কিন্তু মেজর ডিফারেন্স হয়ে গেল- আওয়ামী লীগ ৬২ সিট। আর বিএনপি টু থার্ড মেজরিটি পেয়ে গেছে জোট নিয়ে। আওয়ামী লীগের অবর্তমানে জামায়াতের এই গুরুত্ব নাই। তো বিএনপি এখন জামাতকে কেন তার সাথে রাখবে? কোনো প্রয়োজন নেই। বরং বিএনপি জামায়াতকে যদি বিরোধী দলে রাখতে পারে জামায়াতের যে ইসলামী রাজনীতি অন্তত নামে যে ইসলাম আছে এটার বিরুদ্ধে বিএনপি এখন নিজে একটা সেকুলার সেন্ট্রিস্ট। একদম সেন্ট্রিস্ট একটা মধ্যপন্থী দল হিসেবে ওই ফাইটটা জামায়াতের সাথে করতে পারে এবং জামাতকে তার কাছ থেকে দূরে সরানোই বেটার। জামায়াতকে রেখে পরবর্তীতে বিএনপি যা লাভ হয়েছে তারচেয়ে ক্ষতি হয়েছে অনেক বেশি। সো কল্ড ওয়ার অন টেরারের যে ন্যারেটিভ সেটা তৈরি হতে পেরেছে জামায়াতের কারণে এবং আমাদের তরুণ ভোটাররা মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের যে ন্যারেটিভ ছিল তাদের যে অবস্থান ছিল সেটাকে কোনভাবেই এনডোর্স করে না।’ সা¤প্রতিক সময়ে তারা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে মারাত্মক ব্যাকল্যাশের শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘তারা মনে করেছে এই তরুণরা এত কিছু জানে না, ওরা হাসিনাকে ফেলেছে। হাসিনাকে ফেলা মানে মুক্তিযুদ্ধকে ডিনাউন্স করা, এগুলো ওরা বলার চেষ্টা করেছে এবং দেখল যেগুলো রিয়াকশন হয়েছে। বিএনপির দিক থেকে অন্তত আগামী বেশ কিছু সময় জামায়াতের আসলে ইউটিলিটি নাই। কাগজে-কলমে বলছে কোনো একদিন যদি দেখা যায় আওয়ামী লীগ ফিরে আসে বা আরেকটা দলের সাথে তার সে পাইপ তৈরি হয়, আবার যদি ভোটের অংক হয় তখন সে ইম্পর্টেন্ট হতে পারে। ফলে এখন জামায়াত যেহেতু দেখছে- বিএনপির তাকে প্রয়োজন নেই, সে এখন তার মত করে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। খানিকটা কনফিডেন্সও তার শেষ হয়ে গেছে। সে এখন এই অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তাই সে এখন বিএনপির বিরুদ্ধে দাঁড়াবে এটি স্বাভাবিক।’ অ্যাক্টিং চেয়ারম্যানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক এখানে রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিনষ্ট হয়েছে, এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সংস্কৃতি না, জামায়াতের স্টেটমেন্টটা আমি পড়েছি। অফিশিয়াল স্টেটমেন্টে বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন, একটা দলের সাথে বৈঠক করে নির্বাচনের জন্য। গতকালকেও এটা বলেছে তাদের ডক্টর এসএম হামিদুর রহমান আজাদ, বলছেন যে—লন্ডনে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূতভাবে নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্র্বতী সরকারের যৌথ বিবৃতি ও ব্রিফিং এর প্রতিবাদে আমরা ঐক্যমত কমিশনের এই প্রথম দিনের সংলাপ বয়কট করেছি। তারা যেটা মনে করছে সেটা হলো নির্বাচনে তারই তো প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা করে দিয়েছেন। তাদের বক্তব্যে আমি যেটা বুঝি- সবার সাথে আলোচনা না করে এটা শিফট করার ব্যাপারে নীতিগত এক ধরনের সিদ্ধান্ত একটা দলের সাথে হয়েছে। এই হচ্ছে তাদের অভিযোগ বলে আমি ধারণা করি। জামায়াতের পক্ষ থেকে তো ওই দাবি ছিল যে মোটামুটি নির্বাচনটা হতে পারে রমজানের আগেই। দুটো আগে এবং এপ্রিল দুটোই কিন্তু জামায়াতেই প্রপোজাল ছিল। এটার মধ্যে পরে কিন্তু ওই যে বললাম আপনি তো রাজনীতি করবেন। এখন আপনাকে এখন রাজনীতি করতে হবে এবং আপনি সরকারকে আপনার গুরুত্ব দেখাবেন। এই যে বয়কট করে আমি মনে করি তারা হাসির পাত্র হয়েছেন। কিন্তু তারা মনে করেছেন এই বয়কটের মাধ্যমে তারা সরকারকে বার্তা দিতে চান। তারা এখন সেকেন্ড ফোর্স। গত কয়েক বছর ভোট টোট নাই আমরা জানি না।’ তিনি বলেন, ‘জামায়াতের শক্তি কতটা একবার পরীক্ষা হয়েছিল। আমি এই সিচুয়েশন পাল্টেই পাল্টে গেছে হয়তো। ৯৬ সালে সে এককভাবে নির্বাচন করেছে। আমরা ২০০১ এ তা সিট দিয়ে বুঝব না জামায়াতের শক্তি। কারণ ওর মধ্যে প্রচুর বিএনপির ভোট আছে। ৯৬ সালে তারা এককভাবে নির্বাচন করে দুটো সিট পেয়েছিল। এখন যে দলটা ওইরকম যার পপুলার ভোটের পারসেন্টেজ ছয়-সাত-আট পারসেন্ট তার সাথে আলোচনা না করে বিএনপির সাথে আলোচনা করা হতো এটা মেনে নেয়াই উচিত। আবার জামায়াত কিন্তু সরকারের কাছে আলাদা ট্রিটমেন্ট পাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা কি নাগরিকত্বের সাথে গণসংহতির সাথে আলাদা বসেছেন? তো উনারা কি বলবেন- জামায়াতের সাথে এক আলাদা বসে তিনি নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন? না, রাজনীতি এরকমই জামায়াতের ওজন আছে সেই ওজনটাকে সরকারও রেকগনাইজ করছে কিন্তু তার সাথে আলাদাভাবে বসছে একইভাবে বিএনপির সাথে আসলে আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়ে নির্বাচনের ডেট ঠিক হতে হবে। ইটস আ রিয়ালিটি।’
ই
হাবিবুর রহমান বাদল ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের সাথে সাথে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তার দোসররা কেউবা পালিয়েছে আবার কেউ আত্মগোপনে রয়েছে। বিগত পতিত সরকারের আমলে পেশাদার সাংবাদিকরা সব কিছু দেখলেও কোন কিছুই লিখতে পারতনা। আকাঁরে ইঙ্গিতে কোন কিছু লিখলেই সেইসব সাংবাদিকের উপর খর্গ নেমে […]
হাবিবুর রহমান বাদল নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে। এনিয়ে সাধারণ নাগরিকরা সরব হয়ে উঠেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিভিন্ন মহল থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯