আজ শনিবার | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৫ আশ্বিন ১৪৩২ | ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ | রাত ৪:০৬

স্বৈরাচার মুক্ত দেশ গড়া প্রধান লক্ষ্য

ডান্ডিবার্তা | ২৯ জুলাই, ২০২৫ | ৯:০৮ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহŸায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব বলেছেন, স্বৈরাচার মুক্ত হওয়াটাই আমাদের প্রাধান্য ছিল। কে করেছে এটা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যাথা ছিল না। লিংক রোডে আমরা সর্বোচ্চ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলাম। সেখানে বিএনপি নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ ছিল। পাশাপাশি অন্যান্য রাজনৈতিক দল, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষেরও এই আন্দোলনে সম্পৃক্ততা ছিল।
নারায়ণগঞ্জের জুলাই আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে একথা বলেন তিনি। জুলাই আন্দোলনে নির্দেশনা ছিল পেছন থেকে তাদের সহযোগীতা করা। সম্মুখ সারিতে নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা ছিলেন। পেছন থেকে আমরা তাদের সর্বোচ্চ সাপোর্ট দিয়েছি। আমাদের শক্তভাবে বলা হয়েছিল ক্যামেরার সামনে না আসার জন্য। নারায়ণগঞ্জে আমাদের প্রায় ৫৭ জন শহীদ হয়েছে। এদের মধ্যে ২২ জন নারায়ণগঞ্জের বাকিরা অন্যান্য জেলার। বিএনপি এই আন্দোলনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আন্দোলনের মাঠে ছিল। তিনি বলেন, এ আন্দোলন যেন ব্যার্থ না হয় তা নিশ্চিত করতে তারেক রহমান আমাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমরা কারফিউ ভেঙে রাজপথে ছিলাম। সকল দলের মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের কবুল করেছেন। নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা আব্দুল জব্বার বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের কারাগারে সেসময় তিল ধারণের জায়গা ছিল না। তারা নির্বিচারে গ্রেপ্তার করেছে। ঢাকার আন্দোলনের সূতিকাগার ছিল নারায়ণগঞ্জ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা অনেক সমন্বয়ক নারায়ণগঞ্জে আমাদের আশ্রয়ে ছিল। আমরা তাদের সহযোগীতা করে তাদের সিকিউরিটির বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করেছি। নারায়ণগঞ্জের জুলাই আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে একথা বলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের সময় সিদ্ধিরগঞ্জ, কাঁচপুর, সাইনবোর্ড থেকে শুরু করে চাষাঢ়া পর্যন্ত এই আন্দোলন বিস্তৃত ছিল। শুরুতে আমরা অল্প লোক নিয়ে মাঠে থাকলেও আমরা মাঠে ছিলাম। অনেক জায়গায় আমরা বিএনপির সাথে আন্দোলন করি। আমাদের অনেক লোক গ্রেপ্তার হয়, বিএনপির লোকজনও গ্রেপ্তার হয়। তিনি বলেন, ১৯ জুলাইয়ের পর এটা জামায়াত বা বিএনপির আন্দোলন ছিল না। মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। সেই ক্ষোভে যে দলই আহŸান করেছে সেখানে অসংখ্য সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করে। জব্বার বলেন, আমরা ক্রেডিটের রাজনীতি করি না। বাংলাদেশের সকল শহীদই আমাদের শহীদ। আমাদের কত শহীদ কত আহত এটা না করে আমরা শহীদ পরিবারের পাশে আমাদের সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে আমরা ছিলাম এবং এখনও আছি। নারায়ণগঞ্জ জেলা গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন বলেছেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই এটি ৩৬ দিনের আন্দোলন নয়। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানুষের যে ক্ষোভ এটা তার বহিঃপ্রকাশ। এটা ২৪ এ না হলে ২৫ কিংবা ২৬ সালে হতে পারতো। গণ-অভ্যুত্থান অনিবার্য ছিল। যারা গণ-অভ্যুত্থানকে একক সম্পত্তি বানাতে চায় তাদের ধিক্কার জানাই। নারায়ণগঞ্জের জুলাই আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে একথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, আন্দোলনে যারা অংশ নিয়েছে তাদের আন্দোলনের সুবিধাভোগী করা হয়েছে এটার আমরা প্রতিবাদ জানাই। কেউ সুবিধার জন্য জীবন বাজী রেখে আন্দোলন করেনি। যারা আহত ও শহীদ তাদের আর্থিকসহ নানা সুবিধা দিয়ে তাদের খাটো করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই আমরা যে গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছি তার মর্যাদা। সরকারের উচিত এই আন্দোনকারীদের মর্যাদা নিশ্চি করা এবং আহতদের সুচিকিৎসার ব্যাবস্থা করা। তিনি বলেন, এটি অর্গানাইজড বা সরকার বিরোধী আন্দোলন ছিল না। ফ্যাসিস্টরা যখন পাখির মত গুলি করে মানুষ মারতে শুরু করে তখন এই আন্দোলন একদফায় রুপ নেয়। ২ তারিখের আগ পর্যন্ত এই আন্দোলনটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছিল। নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা বলেছেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জুলাই সনদ করার প্রস্তাব আমরা দিয়েছি। এটি কোন একক ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীর জন্য না। এটি সকলকে নিয়ে একসাথে জুলাই সনদ ঘোষণার জন্য আমরা আহবান জানিয়েছি। নারায়ণগঞ্জের জুলাই আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে একথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, পাঁচ আগষ্টের পর আমরা শহীদদের তালিকা করতে চেয়েছি। তবে সঠিক তালিকাটি এখনও আমরা করতে পারিনি। সেটা আমরা এখনও চেষ্টা করছি। শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসার ব্যাবস্থা করা ও তাদের মর্যাদা নিশ্চিতের কাজটি আমরা গুরুত্ব দিয়ে করছি। মুনা বলেন, আমরা শহীদদের স্মারকের জন্য জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি। শহীদদের মর্যাদা রক্ষার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। আমরা প্রাথমিকভাবে ৫৬ জন শহীদের তালিকা পেয়েছি। আমরা শহীদ ও আহতদের সাথে আলাপ আলোচনা করে যাচ্ছি। নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি বলেছেন, জুলাইয়ে শামীম ওসমান যেভাবে তার নিজ সন্তানের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর যেভাবে গুলি করেছে এটা নারায়ণগঞ্জের মানুষ কোনদিনও মেনে নেবে না। নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমানের ছায়া পড়লে সেই ছায়াকেও মানুষ ধ্বংস করে দেবে। নারায়ণগঞ্জে জুলাই আগষ্ট যাদের কারণে সৃষ্টি হয়েছে তাদের আর নারায়ণগঞ্জে পুনর্বাসিত হতে দেয়া যাবে না। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে একথা বলেন তিনি। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করার ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, সাইনবোর্ড, সানারপাড়, কাঁচপুরে আমি ছাত্রদল যুবদল নেতাকর্মীদের নিয়ে সক্রিয় ছিলাম। আমরা গাড়িগুলো রাতে পাংচার করে দিতাম। দিনের বেলা আমরা বালু, শুরকি, মার্বেল দিয়ে গাড়ির আয়না ঘোলা করে দিতাম। এর ফলে এটা সাদা হয়ে যেত এং ড্রাইভার দেখত না, ফলে গাড়ি বন্ধ থাকতো। যেন যাত্রী ও ড্রাইভারদের কোন ক্ষতি না হয় সেটা নিশ্চিত করতে আমরা এ কাজ করেছি। তিনি বলেন, দীর্ঘ সতেরো বছরের আন্দোলনের মাধ্যমে জুলাইয়ের সৃষ্টি। শামীম ওসমান ও অয়ন ওসমান কীভাবে নারায়ণগঞ্জকে জিম্মি করে রেখেছিল তা আপনারা দেখেছেন। ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরের পরে থেকেই আমরা রাজপথে ছিলাম, রাজপথ ছেড়ে যাইনি। তিনি আরও বলেন, জুলাই মাসে চূড়ান্ত আন্দোলন হয়েছিল। আমাদের বহু নেতাকর্মী জুলাইয়ে নিহত হয়েছে। আজ এই আন্দোলনকে এবং আমাদের এই অর্জনকে নষ্ট করার চেষ্টা অনেকে করছেন। তবে এটা সম্ভব নয়। সারা দেশের মানুষ দেখেছে, আমাদের আন্দোলনের ফসল জুলাই আগষ্ট। আজ যারা কথা বলে তারা শুধু জুলাই আগষ্টের ইতিহাসই জানে। এর বাইরে কিছু তারা জানে না। ১৯৭১ সালে যারা প্রকৃত যোদ্ধা ছিল তাদের বিতাড়িত করেছিল আওয়ামী লীগ। আমাদের যে ভাইয়েরা শহীদ হয়েছে তাদের পরিবারের সদস্যরা জানে কারা আন্দোলনের মাঠে ছিল। তিনি বলেন, সেসময় জীবনের মায়া তুচ্ছ করে আমরা মাঠে ছিলাম। প্রায়ই পুলিশ আসতো, আমাদের গ্রেপ্তার করতো। আমাদের অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। তাদের নির্যাতন করা হয়েছে। আমাকে শামীম ওসমান ও অয়ন ওসমান মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করেছে। আমার বাবাকে একদিন শামীম ওসমান ও শাহ নিজাম চাষাঢ়ায় প্রকাশ্যে অপমান করেছিল। তবুও আমরা দমে যাইনি।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা