আজ শুক্রবার | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৪ আশ্বিন ১৪৩২ | ২৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ | দুপুর ১:৫৬

শহর অচলকারী দানবদের রুখবে কে?

ডান্ডিবার্তা | ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ

হাবিবুর রহমান বাদল
নারায়ণগঞ্জে আইনের শাসন কড়াকড়ি ভাবে প্রয়োগ না হওয়ার ফলে শহরে চলাচল সাধারণ নগরবাসীর জন্য এক বিড়ম্ভনা। শহরে ব্যটারি চালিত ইজিবাইক দিন দিন বাড়ছে। ফুটপাত হকারদের দখলে থাকায় পথচারিরা ফুটপাত ব্যবহার করতে পারছেন না। বন্ধন ও উৎসব বাসগুলি চেম্বার রোডের পুরোটাই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দখল করে রাখে। রাত ৮টার পর থেকে শহীদ সোহরাওয়ার্দ্দী রোড ও সিরাজদৌল্লাহ সড়ক এই দুই কোম্পানীর ডিপোতে পরিনত হয়। শাহসুজা রোড এখন হকারদের দখলে সেই সাথে শজরের বিভিন্ন এলাকায় ডিপ ড্রেন নির্মাণ চলছে মন্থরগতিতে নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রধান সড়ক ও শাখা সড়কগুলি কবে সংস্কার হয়েছে তা নির্ধিষ্ট করে বলতে পারছেনা নগরবাসী। অথচ নিয়মিত নাসিককে কর দিয়ে চললেও কোন প্রকার সেবা পাচ্ছে না নাসিক বাসিন্দরা। এ অবস্থা কতদিন চলবে? আর এ অবস্থা থেকে নগরবাসী পরিত্রান পাবে কি না তা নিয়েও চলছে আলোচনা সমালোচনা। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলি নারায়ণগঞ্জের এইসব সমস্যা নিয়ে বার বার প্রতিবেদন প্রকাশ করলেও প্রশাসন যেন নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে। যানজট হকার উচ্ছেদসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। সেখানে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা সমস্যা সমাধানের আশ^াস দিলেও বছর পেড়িয়ে যাওয়ার পরও সমাধানের উদ্যোগ নেই। লোক দেখানো কিছু তৎপরতা যে হয়না তা বলা যাবে না। তবে বিকেএমইএ ও চেম্বর অব কমার্স একাধিকবার যানজট নিরসনে আর্থিক সহায়তা করার পরও সমস্যার সমাধান হয়নি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, হকার উচ্ছেদ করতে গেলে এক হয়ে হকাররা তেড়ে আসে। ইজিবাইক ছাত্রদের মারধর করে উল্টো শহর অবরোধ করে রাখে। নারায়ণগঞ্জ শহর এইসব আবদারকারীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক দলগুলি কিংবা সামাজিক সংগঠনগুলি মাঝে মধ্যে মানববন্ধনের নামে ফটো শেসন করলেও কার্যকর কর্মসূচি গ্রহণ করছে না। ফলে পরিবহন শ্রমিক, ইজিবাইক চালক ও হকাররা দিন দিন দানব হয়ে উঠছে। প্রশ্ন উঠেছে, এই দানবদের রুখবে কে? এখনই এদের লাগাম টেনে না ধরলে খুব দ্রæত নারায়ণগঞ্জ শহর বসবাস ও চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়বে। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক শহরকে যানজট মুক্ত করতে একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে কোন একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের বিশেষ ব্যক্তিদের ইন্ধনে আইনের তোয়াক্কা না করেই নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিব্বি শহরে চলছে অটো রিকশা। দিন দিন অটো রিকশা শহরে প্রবেশের ফলে শহরে যানজট বাড়ছে। এমনকি অটো রিকশা চালকরা তাদের সাথে দেশীয় অস্ত্র রাখে এমন অভিযোগও রয়েছে। একদিকে নারায়ণগঞ্জ শহরে পর্যাপ্ত পরিমান ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় ছাত্রদের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাসেবীরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে নিরলসভাবে কাজ করে গেলেও কিছু চাঁদাবাজ স্বার্থান্বেষী মহলের কারনে অনেকটা সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিল্প নগরী নামে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ শহর। এই শহরের অন্যতম প্রধান সমস্যা যানজট। নিত্যদিনের এই জনভোগান্তির অন্যতম প্রধান কারন হচ্ছে অটো এবং ব্যাটারিচালিত রিকশা। অলিগলি ছেড়ে এখন শহরের প্রধান সড়কগুলো দখল করে অবৈধ স্ট্যান্ড করে রমরমা অটো ব্যবসা চলছে এই শহরের সড়কগুলো। এতেই যানজটে নাস্তানাবুদ হয়ে চরম ভোগান্তিতে যখন নগরবাসী তখন নারায়ণগঞ্জের মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা জেলার ব্যবসায়ী সংগঠন বিকেএমইএ, চেম্বার অব কমার্স এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় গ্রহন করেন অভাবনীয় এক সিদ্বান্ত। জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রদের সহযোগিতায় ট্রাফিক মনিটরিং সেল গঠন করা হয়। যেখানে ছাত্ররা ভূমিকা পালন করবে স্বেচ্ছাসেবকের। অথচ, যেসব এলাকায় ব্যটারী চালিত অটো রিকশা থাকে সেসব এলাকায় অভিযান চারিয়ে অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহার করে ব্যাটারী চার্জ করা বন্ধ করলেই শহরে ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা সহজেই কমে আসবে। নারায়ণগঞ্জে হকারদের একসময় নিয়ন্ত্রণ করত শামীম ওসমানের ক্যডাররা। এখন কারা নিয়ন্ত্রণ করছে তা প্রশাসন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও জানে। বন্ধন ও উৎসব পরিবহন টার্মিনাল থেকে সরাসরি চাষাড়া চলে যাবে এমন সিদ্ধান্ত হলেও এই দুইটি পরিবহন একটার পিছনে আরেকটি লেগে থেকে যাত্রী উঠানোর ফলে ১নং রেল গেইট থেকে উকিলপাড়া পর্যন্ত দিনভর যানজট থাকে। একসময় এ দু’টি পরিবহন সংস্থা শামীম ওসমানের ক্যাডারদের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও জুলাই বিপ্লবের পরে হাত বদল হয়েছে। শহরের ২নং রেল গেইট এলাকায় অবস্থিত মিনি পার্কটি মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপের আথড়ায় পরিনত হয়েছে। অথচ, এই কথিত পার্কটি ভেঙ্গে রাস্তা প্রসস্থ করা হলে যানজট অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসতো। এছাড়া চুনতা পাঠাগারের সামনে ইউর্টানটি খুলে দেয়াসহ ২নং রেল গেইটের রোড ডিভাইডারটি ১০/১২ ফুট ছেটে দিলে শহরের যানজট অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে। সেই সাথে ২নং রেল গেইট ও চাষাড়া এলাকায় ফুটওভার ব্রীজ নির্মাণ জরুরী হয়ে পড়েছে। এক কথায় নারায়ণগঞ্জের মানুষকে চলাচল উপযোগি একটি শহর উপহার দিতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশসন ও সিটি করপোরেশন একযোগে কাজ করলে এবং কঠোর ভাবে আইন প্রয়োগ করা হবে এমনটাই প্রত্যশা নারায়ণগঞ্জবাসীর।

 

 




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা