আজ শনিবার | ১৬ আগস্ট ২০২৫ | ১ ভাদ্র ১৪৩২ | ২১ সফর ১৪৪৭ | সকাল ৭:২৭

শহরের যানজট নিরসনে ব্যর্থ প্রশাসন

ডান্ডিবার্তা | ১৪ আগস্ট, ২০২৫ | ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
আইন শৃঙ্খলার সিদ্ধান্ত হলেও ৩দিনেও শহরের যানজট মুক্ত করতে পারেনি প্রশাসন। যানজট নিরসনের জন্য গত মঙ্গলবার চেম্বার অব কমার্স অর্থায়ন করলেও গতকাল বুধবারও শহর ছিন যানজটে জিম্মি। গত ১০ আগস্ট জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়, চাষাঢ়া মোড়ে যানবাহনের স্ট্যান্ড থাকবে না। কিন্তু সিদ্ধান্তটি তিন দিনও ধরে রাখা গেল না। গতকাল মঙ্গলবার চাষাঢ়া মোড়ের বিভিন্ন পয়েন্টে আগের মতোই যানবাহনের স্ট্যান্ড দেখা গেছে। এতে যানজট ছিল আগের মতোই। নারায়ণগঞ্জ নগরীর প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত চাষাঢ়া মোড়। নগরীর বিভিন্ন দিক থেকে ১০টি রাস্তা এসে মিলেছে এ মোড়ে। এ মোড়কে কেন্দ্র করে অন্তত ১১টি স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। এগুলো থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও লেগুনা মুন্সীগঞ্জ, সাইনবোর্ড, ফতুল্লা, চিটাগাং রোডসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করে। শুধু সাইনবোর্ডগামী যানবাহনের ছয়টি স্ট্যান্ড রয়েছে এখানে। এর মধ্যে সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিনটি, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দুটি ও লেগুনার একটি স্ট্যান্ড রয়েছে। ১০০ গজের কম দূরত্বে এতগুলো অবৈধ স্ট্যান্ডের কারণে ব্যস্ততম এ মোড়ে প্রতিদিন অসহনীয় যানজট লেগে থাকে। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত তিন দিনও না টেকার বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট জিয়াউল ইসলাম কাজল বলেন, চাষাঢ়া মোড়ে একটি রাজনৈতিক প্রভাবশালী দুর্বৃত্ত চক্র রয়েছে। এদের জোরেই এসব অবৈধ স্ট্যান্ড পুলিশ উচ্ছেদ করতে পারে না। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) নারায়ণগঞ্জ কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু বলেন, ১০ আগষ্ট জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে চাষাঢ়ায় কোনো স্ট্যান্ড না থাকার সিদ্ধান্তে আমরা আশাবাদী হয়েছিলাম। দুই দিন ভালোই ছিল। কিন্তু আজ (গতকাল) তৃতীয় দিনেই মনে হলো উদ্যোগটি মুখ থুবড়ে পড়েছে। গতকাল রেললাইন থেকে বেশ খানিকটা দূরে যানজটে আটকে রিকশায় বসেছিলেন ইকবাল রোড হাউজিং সোসাইটির সভাপতি শাহ্‌ জামান রানা। তিনি বললেন, আগে সাইনবোর্ডগামী সব সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছাড়ত শীতল বাস কাউন্টারের সামনে থেকে। এখন সেখানেও আছে, আবার চাষাঢ়া রেললাইনের সামনেও একটি স্ট্যান্ড হয়েছে। রেললাইনের সামনের স্ট্যান্ডটি পুরোই উচ্ছেদ করে দেওয়া প্রয়োজন। অবৈধ স্ট্যান্ডের ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ বাস মিনিবাস ও দূরপাল্লার পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রওশন আলী সরকার বলেন, লেগুনা স্ট্যান্ড আমরা চাষাঢ়া মোড় থেকে সরিয়ে বেশ দূরে নিয়ে গিয়েছি। কিন্তু ব্যাটারি রিকশা আর অটোরিকশা সুযোগ পেলেই এসে দাঁড়াচ্ছে। চাষাঢ়া মোড়ের দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর এম এ করিম বলেন, সকাল ৮টায় আমরা এসব স্ট্যান্ড উচ্ছেদ শুরু করি। দুপুরে আমাদের ডিউটি বদল হয়। এ সুযোগে যানবাহনগুলো এসে আবার স্ট্যান্ডে দাঁড়ানো শুরু করে। আর বিকেলে যানবাহনের চাপও বেড়ে যায়। তবে বিকেল ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত আমরা অত্যন্ত কঠোর থাকতে পারি। ডিউটি বদলের সময় ও যানবাহনের চাপ বেশি থাকার সময়টা কীভাবে সামলানো যায়, সেটি আমরা খুঁজে দেখব। তিনি বলেন, এভাবে আমরা এক মাস চালাতে পারলে চাষাঢ়া মোড়ে যে স্ট্যান্ড করা যায় না– এটি যানবাহন চালকরা বুঝে যাবেন। জেলা প্রশাসকের এক অনুষ্ঠানেও চাষাঢ়া মোড়ে ফের যানবাহন স্ট্যান্ড ফিরে আসার প্রসঙ্গ ওঠে। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, যানজট সমস্যা আমাদের সবার সমস্যা। স্ট্যান্ডগুলো সরানোর জন্য আমাদের উদ্যোগ চলমান। বিষয়টি আরও ভালোভাবে মনিটরিং করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। গত মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় নগরীর চাষাঢ়া রেললাইন মসজিদের সামনে গিয়ে দেখা যায়, এখান থেকে ছাড়া হচ্ছে সাইনবোর্ডগামী অটোরিকশা। ফলে এখানে সড়কের বাম দিকে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ। সিগন্যাল পড়লে এই থেমে থাকা অটোর লাইনের জন্য বাম দিকে বা লিংক রোডের দিকে যেতে পারছে না পঞ্চবটির দিক থেকে আসা যানবাহনগুলো। ট্রাফিক সিগন্যাল ছাড়লে সোজাপথে যাওয়া যানবাহনের সঙ্গে এগিয়েই তাদের বামে যেতে হচ্ছে। তবে সিএনজি স্ট্যান্ডটি আগের অবস্থান বাইতুল আমান ভবনের মোড় থেকে সামান্য পেছনে নিয়ে আসা হয়েছে। শহীদ মিনার থেকে শান্তনা মার্কেট হয়ে মহিলা কলেজ পর্যন্ত একইভাবে ছিল সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড। এগুলো সঙ্গে রাস্তা দখল করে ভ্যানগাড়িতে পসরা সাজিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন বেশ কয়েকজন হকার। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফুটপাত দখল করে রেখেছিলেন শান্তনা মার্কেটের বৈধ দোকানদাররা। ফলে যারা বাম দিয়ে সোজা যেতে চান, তাদের শান্তনা মার্কেটের সামনে সিগন্যালে আটকে থাকতে হচ্ছে। যখন ডানে যাওয়ার সিগন্যাল দেওয়া হচ্ছে, তখন একসঙ্গে তাদের যেতে হচ্ছে। সোজা রাস্তা খালি থাকলেও বাম দিয়ে তারা সোজা যেতে পারছেন না। আবার বৈধ দোকানের অবৈধ দখলের কারণে মানুষ ফুটপাত দিয়ে যেতে খুব কম জায়গা পাচ্ছেন। বাধ্য হয়ে তাদের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় নেমে হাঁটতে হচ্ছে। একই সময়ে চাষাঢ়ার সোনালী ব্যাংকের সামনে মুন্সীগঞ্জের মোক্তারপুরগামী অটোরিকশা স্ট্যান্ড, সুগন্ধা বেকারির সামনে চিটাগাং রোডগামী অটোরিকশা স্ট্যান্ড, শহীদ মিনারের সামনে সাইনবোর্ডগামী অটোরিকশা স্ট্যান্ড, রাইফেলস ক্লাবের সামনে সাইনবোর্ডগামী সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড আগের মতোই দেখা গেল।

 




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা