আজ রবিবার | ২৪ আগস্ট ২০২৫ | ৯ ভাদ্র ১৪৩২ | ২৯ সফর ১৪৪৭ | বিকাল ৪:২৭

ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে বিএনপির বিরোধ

ডান্ডিবার্তা | ২৪ আগস্ট, ২০২৫ | ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় আওয়ামীলীগ ও এর সমমনা আইনজীবী সহ সাধারণ আইনজীবীদের সঙ্গে অশোভন বেপরোয়া আচরণ করেছিলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। প্রায় এক ডজন আওয়ামীলীগের শীর্ষ আইনজীবী নেতাদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ও আহতের ঘটনার মামলায় আসামী করা হয়েছে, যারা এক বছর ধরে আত্মগোপনে। আওয়ামীলীগের সমর্থক ও কর্মী পর্যায়ের আইনজীবীরা ধীরে ধীরে কোর্টে আসলেও একইভাবে আওয়ামীলীগের প্রায় শতাধিক আইনজীবী ১ বছর হয়ে গেলেও কোর্টে আইন পেশা পরিচালনা করতে আসতে পারছেনা, বিএনপি পন্থী আইনজীবীদের অব্যাহত হুমকি ধমকি ও লাঞ্ছিত হওয়ার ভয়ে। এদিকে আগামী ২৮ আগস্ট জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে সরকার হুমায়ুন কবিরকে সভাপতি ও আনোয়ার প্রধানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৭ জনের একটি পূর্ণ প্যানেল দিয়েছে বিএনপি। এবারই প্রথম জামায়াত ইসলামীর আইনজীবীরাও এখানে ১৭ জনের একটি পৃথক প্যানেল দিয়েছে ভোটের লড়াইয়ে। একই সঙ্গে বিএনপির আরেকটি অংশের আইনজীবীরা সভাপতি পদে রেজাউল করিম খান রেজা ও সাধারণ সম্পাদক পদে এসএম গালিবসহ ১৪ জনের একটি প্যানেল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। এই নির্বাচনে ভোটের মাঠে বিএনপির হুমায়ুন- আনোয়ার প্যানেলের বিরুদ্ধে ৫ আগস্ট পরবর্তী বিএনপির আইনজীবীদের বিতর্কিত আচরণগুলো ভোটের মাঠে প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করছেন আইনজীবীরা। আইনজীবীদের অব্যাহত হুমকি ধমকি ভয়ভীতি ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা, কোর্ট থেকে বের করে দেয়া সহ নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছেন হুমায়ুন-আনোয়ার প্যানেলের অনুগামী আইনজীবীরা। হুমকি ধমকিতে নির্বাচন থেকে সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী আনিসুর রহমান মোল্লা ২২ আগস্ট সরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আদালতপাড়ার সূত্রে জানাগেছে, গত ৬ এপ্রিলও আইনজীবী ফিরোজ মিয়াকে মারধর হুমকি ধমকি দিয়ে কোর্ট থেকে বের করে দেন বিএনপি নেতা আব্দুল বারী ভুঁইয়া ও তার পুত্র আশরাফ ভুঁইয়া। গত ৫ আগস্টের পর থেকে এই পিতা পুত্রের অত্যাচারে কোর্টছাড়া হয়েছেন প্রায় দেড় শতাধিক আইনজীবী। অনেক আইনজীবীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে, কাউকে হুমকি ধমকি ভয়ভীতি দেখিয়ে, কাউকে মামলা হামলার ভয় দেখিয়ে কোর্টছাড়া করেছেন বারী ভুঁইয়া ও তার পুত্র। আওয়ামীলীগ পন্থী আইনজীবী জসিম উদ্দীনকেও কোর্টের ভেতরেই একাধিকবার মারধর করার চেষ্টা করেছেন বারী ভুঁইয়া ও তার ছেলে। এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একটি মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারী নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করতে আসলে বেদম মারধরের শিকার হোন সাবেক পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন। শুনানি শেষে কাঠগড়া থেকে নামামাত্র এজলাসের ভেতরেই আব্দুল বারী ভুঁইয়া ও তার ছেলে আশরাফ ভুঁইয়া তখন ওয়াজেদ আলীকে কিল ঘুষি দিয়ে এলোপাতারি মারধর শুরু করেন। এ সময় খোকনকে রক্ষা করতে তার জুনিয়র আইনজীবী আব্দুর রউফ মোল্লা ও মনিরুজ্জামান কাজল এগিয়ে আসলে তাদেরকেও বেদম পিটুনি দেয়া শুরু করেন বারী ও তার ছেলে সহ বিএনপি পন্থী আইনজীবীরা। এক পর্যায়ে বিচারকের সামনেই এজলাসের ভেতরে টেবিলে উঠে রউফ মোল্লাকে লাথি দেয় আশরাফ ভুঁইয়া। রউফ মোল্লা লুটিয়ে পড়লে সেখানেও যে যেভাবে পেরেছে কিল ঘুষি লাথি মেরেছেন। তাদের মারধরের ঘটনায় বিচারক এজলাস থেকে নেমে যান। ঘটনাস্থল থেকে কোর্ট পুলিশ ওয়াজেদ আলীকে উদ্ধার করে কোর্টের বাহিরে ছেড়ে দেয় এবং ফতুল্লা থানা পুলিশ ওয়াজেদ আলীকে আটক করে পুলিশ সুপারের কাছে নিয়ে গেলে মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিনে থাকায় তাকে ছেড়ে দেয়। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কোর্ট ও এর আশপাশের ভবনগুলোতে আওয়ামীলীগের আইনজীবীদের চেম্বারে হানা দিয়েছেন বিএনপির আইনজীবীরা। সেখানে আইনজীবীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে, চেম্বার থেকে বের করে দেয়া হয়েছে, কোর্টে আসতে বাধা দিয়েছেন, নারী আইনজীবীদের অশ্রাভ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। এসব কাজে জড়িত ছিলেন পিপি আবুল কালাম আজাদ জাকির, ওমর ফারুক নয়ন, টুটুল চৌধুরী, সালাউদ্দীন সবুজ, সামসুল টুটুল, সিদ্দিকুর রহমান, রোকন উদ্দীন, নজরুল ইসলাম মাসুম, আব্দুর রহিম, মাসুদ রানা, রতন সরকার, রিফাত, ফাহিম, বিথি, সুইটি, আবু রায়হান, আনিসুর রহমান, রাজীব মন্ডল, শিপলু মল্লিক, হাবিবুর রহমান মাসুম, হাফিজুর রহমান মাসুদ সহ আরো বেশকজন আইনজীবী, যারা ৫ আগস্ট পরবর্তীতে আওয়ামীলীগের ও সাধারণ আইনজীবীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। বিথি ও সুইটি আনোয়ার প্রধানের দাপুটে যেনো আওয়ামীলীগের সুইটি ইয়াসমিন হওয়ার চেষ্টা করছেন। সাবেক জিপি মেরিনা বেগমকে অশ্রাভ্য ভাষায় আনোয়ার প্রধান ও আজাদ জাকির গালিগালাজ করে কোর্ট থেকে বের করে দেন। বিগত একটি বছর কোর্টপাড়ায় এসব আইনজীবীরা বিভিন্ন পর্যায়ের আইনজীবীদের অব্যাহত হুমকি ধমকি ভয়ভীতি হামলা মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। কিন্তু লাঞ্ছিত হওয়া আইনজীবীরা লোকলজ্জার ভয়ে মুখ খুলেননি। বিগত বছরে সরকার হুমায়ুন কবির ও আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে বিনা ভোটে ১৭ জন আইনজীবী নির্বাচিত হোন। কিন্তু ওই নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন ফরম কিনতে গেলে রেজাউল করিম খান রেজা ও এসএম গালিবকে ফরম দেয়া হয়নি। এমনকি নির্বাচন কমিশনের কাছে ফরম কিনতে গেলে তাদেরকে আইনজীবী সমিতির দ্বিতীয় তলায় জিম্মি করে সাখাওয়াত, আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে রিফাত, ফাহিম, আনিসুর, আবু রায়হান সহ বাহিনীর অন্যান্যরা রেজা খান ও গালিব সহ তাদের সহকর্মীদের বেদম মারধর করে কোর্ট থেকে বের করে দেন। এতে আইনজীবী আব্দুল মোমেনের নাক ফেটে গেলে রক্তাক্ত জখমী হোন। জোর করে হুমায়ুন ও আনোয়ার বিনা ভোটে ভোট গ্রহণের আগেই নির্বাচিত হয়ে যান। কয়েক মাস পূর্বে কোর্টপাড়ায় আনোয়ার প্রধানের দাপুটে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মাহামুদ হাসান কচি সহ কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবীর সঙ্গেও অশোভন আচরণ করেছিলেন আবু রায়হান। হটাত বিএনপির রাজনীতিতে গজিয়ে ওঠা আবু রায়হান আনোয়ার প্রধানের আস্কারায় কোর্টে বেপরোয়া হয়ে ওঠেছেন কোর্টপাড়ায়। তাদের এসব বিতর্কিত কর্মকা- বিএনপির হুমায়ুন আনোয়ার প্যানেলের উপর প্রভাব পড়তে বলে ধারণা করছেন আইনজীবীরা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা