আজ মঙ্গলবার | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১ আশ্বিন ১৪৩২ | ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ | দুপুর ১২:১২
শিরোনাম:
ঋণের চাপে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যা    ♦     না’গঞ্জ চারুকলায় মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালুর দাবি    ♦     প্রতারক চক্রের ৩জন গ্রেপ্তার    ♦     বন্দর প্রেসক্লাবের অভিষেক অনুষ্ঠানে বক্তারা হলুদ সাংবাদিকতা এখন ডেঙ্গুর মত ভয়াবহ    ♦     ফতুল্লায় ওসমান দোসররা বিএনপির ছায়াতলে    ♦     ধরা ছোঁয়ার বাইরে মতির সহযোগী জাহাঙ্গীর    ♦     না’গঞ্জে কোনো ফ্যাসিবাদী শাসন চলতে দেব না    ♦     ফতুল্লার ৫ ইউনিয়নে স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটি গঠনে তৎপরতা    ♦     গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে    ♦     সদরে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পইন উপলক্ষে ওরিয়েন্টেশন সভা    ♦    

অতিরিক্ত দামে ঔষধ কিনে বিপর্যস্ত রোগীরা

ডান্ডিবার্তা | ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ৯:১৩ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
বর্তমানে ঔষধ যেন সাধারণ মানুষের কাছে বিলাসী পণ্য। ওষুধের লাগামহীন দামবৃদ্ধিতে হিমশিম খাচ্ছেন দীর্ঘমেয়াদি রোগীরা। কিডনি ও ক্যানসারের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন। সেইসঙ্গে গত এক বছরে গ্যাস্ট্রিক, অ্যান্টিবায়োটিক, ডায়াবেটিসসহ বেশ কিছু রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত দুই ডজনের বেশি ওষুধের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। সরকারি হাসপাতালে সামান্য কিছু ওষুধ মিললেও বেশিরভাগ রোগীকে নির্ভর করতে হচ্ছে ফার্মেসির উচ্চমূল্যের বাজারের ওপর। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন ফার্মেসিতে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক মাসের ব্যবধানে কিছু সংখ্যক ওষুধের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ললিক্স প্লাস ১১০ টাকার পরিবর্তে ২০০ টাকা, বিলাস্টিন ১৪০ টাকার পরিবর্তে ১৬০ টাকা, মিনিকন ৩০ টাকার পরিবর্তে ৫৫ টাকা, নভোমিক্স ৭১৫ টাকার পরিবর্তে ৮১৫ টাকা, গ্যাভিফ্লা ২৫০ টাকার পরিবর্তে ৩০০ টাকা, লিনাটেড ১৫৬ টাকার ১৮০ টাকা ও সিটাজার ২৫০ টাকার পরিবর্তে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ‘বর্তমানে ওষুধ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মতোই এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। পরিবারে খরচের বড় একটি অংশ বর্তমানে চিকিৎসা খাতেই চলে যায়।’ সেইসঙ্গে প্যারাসিটামল ৫০০ মিলিগ্রামের ১০ পিসের দাম ৮ টাকা থেকে ১২ টাকা, প্যারাসিটামল ৬৬৫ মিলিগ্রাম ১০ পিসের দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা, প্যারাসিটামল সিরাপের দাম হয়েছে ২০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা, ব্রোমাজিপাম ৩ মিলিগ্রামের প্রতিটির দাম ৫ টাকা থেকে ৭ টাকা, অ্যাসপিরিন ৭৫ মিলিগ্রামের ১০ পিসের দাম ৫ টাকা থেকে বেড়ে এখন ৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আব্দুল জব্বার নামে এক ক্রেতা বলেন, আমার একারই প্রতি মাসে প্রায় ৯-১০ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও সব মিলিয়ে ৭-৮ হাজার টাকার ওষুধ কিনতে হয়। দাম বাড়লেও ওষুধ কেনা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আব্দুল জব্বারের মতো ফার্মেসিতে ওষুধ কিনতে আসা অন্তত আরও পাঁচ ব্যক্তির সঙ্গে কথা হয়। তাদের প্রত্যেকেরই ভাষ্য, বর্তমানে ওষুধ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মতোই এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। পরিবারে খরচের বড় একটি অংশ বর্তমানে চিকিৎসা খাতেই চলে যায়। এর ফলে মধ্যবিত্ত ও নি¤œ মধ্যবিত্তদের অনেক সময় চিকিৎসা বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। ‘সরকার থেকে যে বাজেট দেওয়া হয় তা থেকে গুরুত্ব বিবেচনা করে কমন কিছু ওষুধ বেশি কেনা হয়। হাসপাতালটিতে জ্বর, সর্দি-কাশি, সার্জারি সংক্রান্ত রোগী বেশি এসে থাকে। তাই এ সংক্রান্ত ওষুধই হাসপাতালে বেশি পাওয়া যায়।’ রিয়াজ নামে থাইরয়েড ক্যানসার আক্রান্ত এক রোগী বলেন, তিন বছর ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে তার এ পর্যন্ত কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। ক্যানসারের ওষুধগুলোর দাম বেশি হওয়ায় অনেক সময় ওষুধ কিনতে টাকা ধার করতে হয় তার। মো. রাসেল হোসেন নামে এক ফার্মেসি মালিক বলেন, কিছু সংখ্যক ওষুধের দাম বাড়লেও সাধারণত যেসব ওষুধের চাহিদা বেশি সেসব ওষুধের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। রোগীরা সাধারণত ডায়াবেটিস, প্রেসার, গ্যাস্ট্রিক, জ্বর, ব্যথানাশক ওষুধই বেশি কিনে থাকেন। আর মানুষ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই দাম বাড়লেও ওষুধের চাহিদা কমেনি। ‘কাঁচামালের দাম, পরিবহন খরচ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণেই ওষুধের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে তাদের বেচা-বিক্রিতে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।’ ওষুধ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন মনা বলেন, কাঁচামালের দাম, পরিবহন খরচ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণেই ওষুধের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে তাদের বেচা-বিক্রিতে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। আর তারা সরকারের নির্ধারিত দামেই সব ওষুধ বিক্রি করে থাকেন। নারায়ণগঞ্জ সরকারি ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালটিতে মাত্র ৩০-৩৫ পদের ওষুধ পাওয়া যায়। তবে ২৫০-৩০০ পদের ওষুধ পাওয়া গেলে রোগীরা উপকৃত হতো। সরকার থেকে যে বাজেট দেওয়া হয় তা থেকে গুরুত্ব বিবেচনা করে কমন কিছু ওষুধ বেশি কেনা হয়। হাসপাতালটিতে জ্বর, সর্দি-কাশি, সার্জারি সংক্রান্ত রোগী বেশি এসে থাকে। তাই এ সংক্রান্ত ওষুধই হাসপাতালে বেশি পাওয়া যায়। একই অবস্থা শহরের আরেকটি সরকারি হাসপাতালেরও। নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যাবিশিষ্ট (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের হাসপাতালে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি রোগী সেবা নিয়ে থাকেন। তাদের প্রত্যেকটি ওষুধ সরবরাহ করা খুবই কঠিন বিষয়। ওষুধের জন্য যে বাজেট থাকে তা রোগীর তুলনায় খুবই কম। আমরা রোগীদের ওষুধ দেওয়ার ক্ষেত্রে ৪টি ভাগে দিয়ে থাকি। এক্ষেত্রে অতি দরিদ্রদের বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে। বাধ্য হয়েই কিছু ওষুধ আমাদের দেওয়া সম্ভব হয় না। এর ফলে কিছু সংখ্যক রোগীর বাড়তি ওষুধ বাহিরে থেকে কিনতে হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলা ওষুধ প্রশাসন কার্যালয়ের মো. সাইফুল্লাহ মাহমুদ বলেন, ওষুধের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি আমরা দেখি না। এ বিষয়টি কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। তবে কেউ যদি এমআরপি থেকে বেশি মূল্যে ওষুধ বিক্রি করে থাকেন সে বিষয়ে আমরা অভিযান পরিচালনা করে থাকি। সেইসঙ্গে কেউ অভিযোগ করলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা