আজ বৃহস্পতিবার | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৩ আশ্বিন ১৪৩২ | ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ | বিকাল ৫:১৩

ডিএনডি খালের ওপর জরাজীর্ণ কাঠের সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

ডান্ডিবার্তা | ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি মজিববাগ এলাকায় (সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সামনে) ডিএনডি খালের ওপর নির্মিত জরাজীর্ণ ও নড়বড়ে কাঠের সেতুটি গত দুবছর ধরে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। সেতুটির অধিকাংশ কাঠের পাটাতন পচে ও ভেঙে গেছে। ফলে সেতুটি এখন অনেক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ- বৃদ্ধা ও আদমজী ইপিজেডের শ্রমিকসহ শত শত লোকজন পারাপার হচ্ছেন। এক সপ্তাহ আগে মজিরবাগ এলাকার বাসিন্দা টুলু মিয়া বলেন, দুই বছর ধরে কাঠের এ সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ স্থানটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে সেতুটির খুবই গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশায় পড়ে থাকলেও সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ মেরামতের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছেন না। এ সেতুটি নিচে কমপক্ষে ১০-১৫ ফুট পানির গভীরতা রয়েছে। তাই সেতুটি ভেঙে পড়লে জীবনহানির আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে সাহায্য না পেয়ে মজিরবাগ এলাকার সেতুটির পূর্ব দিকের একটি অংশ ভেঙে গেছে। বাসিন্দারা স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা-পয়সা স্থানীয়দের দাবি এ সময় ৪-৫ জন পথচারী আহত তুলে মাঝে মধ্যেই এ কাঠের সেতুটি মেরামত হয়েছেন। আবারও যেকোনো সময় সেতুটি করা হয়। কিন্তু বেশিদিন সেতুটি ব্যবহারের পুরাপুরি ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা উপযোগী থাকে না। গত এক সপ্তাহে আগে এ করছেন স্থানীয়রা। জরুরি ভিত্তিতে এ জরাজীর্ণ। কাঠের সেতুটির শিমরাইল-আদমজী ইপিজেড-সেতুটি মেরামত করার জোর দাবি জানান স্থানীয়রা ও পথচারীরা। মঙ্গলবার দুপুরে সরেজিমন গিয়ে এ নড়বড়ে ও ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতুটি দিয়ে নারী- পুরুষ, বৃদ্ধ বৃদ্ধা ও শিক্ষার্থীদের পার হতে দেখা গেছে। জানা যায়, অধুনালুপ্ত সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভার আমল থেকেই ১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় ডিএনডি খালের ওপর মিজমিজি মজিবাগ এলাকায় একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়। এ কাঠের সেতুটি ব্যবহার করে মিজমিজি মজিববাগ, আল- আমিন নগর, মিজমিজি পূর্বপাড়াও কদমতলী উত্তরপাড়াসহ আশপাশের লোকজন ডিএনডি খাল পার হচ্ছেন। কিন্তু সেতুটি মেরামত কিংবা পুনর্র্নিমাণ না করায় দিন দিন কাঠের সেতুটির পাটাতন অনেক স্থানে ভেঙে গেছে। গত বছর ৬ মাস পুরো বর্ষার সময় এ কাঠের সেতুটির পাটাতন পানিতে ডুবন্ত ছিল। ফলে কাঠের অনেক পাটাতন পচে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক জায়গার কাঠের পাটাতন ভেঙে গেছে। দিন দিন আরও ভেঙে যাচ্ছে। কিন্তু সিটি করপোরেশন এ সেতুটির মেরামতকাজ করছে না। ফলে সেতুটি এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। খবর নিয়ে জানা গেছে, এ সেতুর পূর্বপাড়েই রয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে রয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। এ হাইস্কুলের অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাইরে বসবাস করেন। ফলে অনেক অভিভাবক তাদের কোমলমতি অধ্যয়রত শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ এ সেতুটি পার হয়ে স্কুলে নিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া কয়েকশ’ গজ দূরে রয়েছে আদমজী ইপিজেড। এ ইপিজেডে কাজ শুরু ও ছুটির সময় এক সঙ্গে অসংখ্য শ্রমিক কর্মচারী এ ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতুটি ব্যবহার করে ডিএনডি খাল পার হচ্ছেন। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় পথচারীরা সড়কের একটি অংশ ভেঙ্গে গেছে। এ ভাঙা অংশ দিয়ে লোকজন ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন। যেকোনো সময় কাঠের সেতুটি ভেঙে গভীর পানিতে পড়ে যেতে পারে। মিজমিজি মজিরবাগ মধ্যবর্তী সমাজ কল্যাণ সমিতির সভাপতি আমিরুল ইসলাম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা-পয়সা তুলে ৭-৮ বার মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু কয়েক দিন পরই সেতুটি আবারও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। সেতুটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেতুটি এত ঝুঁকিপূর্ণ থাকা সত্ত্বেও সিটি করপোরেশন মেরামত করতে এগিয়ে আসছে না। মিজমিজি মজিববাগ এলাকার আরেক বাসিন্দা মোবারক হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ কাঠের পুলের স্থানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করতে পারতেন। অথচ অন্য স্থান দিয়ে পাকা সেতু নির্মাণ করেছেন। কিন্তু লোকজন এ স্থান দিয়েই ডিএনডি খাল পার হতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এবং যাতায়াতের দূরত্ব কমে আসে। তিনি বলেন, আদমজী ইপিজেডের কাজ শুরুর সময় সকাল ৭টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত এবং বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এ সেতুটি ব্যবহার বেশি হয়। এছাড়াও স্কুলের ক্লাশ শুরু ও ছুটির সময় এ সেতুতে শিক্ষার্থীদের পারাপারের সংখ্যও বেড়ে যায়। স্থানীয় দোকানী নূর মোহাম্মদ বলেন, কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সুবিধার্থে এ স্থানে পাকা সেতু নির্মাণ করছেন না। তিনি আরও বলেন, সিটি করপোরেশন যদি সেতুটি মেরামত না করেন তবে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি ভেঙে ফেলতে পারেন। কিন্তু তারা তাও করছেন না। তবে কি কাঠের সেতুটি ভেঙে পানিতে পড়ে গিয়ে লোকজনের প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হলে তারা সজাগ হবেন? নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইসমাইল চৌধুরী বলেন, এ ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতুটি মেরামত করার কোন পরিকল্পনা নেই। আশপাশের পাকা সেতু দিয়ে লোকজন পারাপার হবেন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা